পাঞ্জাব থেকে ঝাঁসি, স্যুটকেসের ওপর ঘুমন্ত ছেলেকে নিয়ে হাঁটছেন পরিযায়ী মা
পাঞ্জাব থেকে ঝাঁসি, স্যুটকেসের ওপর ঘুমন্ত ছেলেকে নিয়ে হাঁটছেন পরিযায়ী মা
কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানোর জন্য বিশেষ ট্রেন–বাসের ব্যবস্থা করা হলেও এখনও দেশের বিভিন্ন রাজ্যের রাস্তায় দেখা মিলছে পায়ে হেঁটে বাড়ির দিকে চলা পরিযায়ী শ্রমিকদের। তেমনই এক মহিলা শ্রমিককে দেখা গেল উত্তরপ্রদেশে আগ্রার জাতীয় সড়কে। যিনি নিজের ঘুমন্ত ছেলেকে স্যুটকেসের ওপর রেখে তা টানতে টানতে হাঁটছেন, গন্তব্য ঝাঁসি।
|
ঘুমন্ত ছেলে ও স্যুটকেসের ভার নিয়েই চলছে মহিলা
ছোট্ট ছেলেটি হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্তই হয়ে পড়েছিল বোধহয়। নিজের শরীরটাকে ফেলে দিয়েছিল স্যুটকেসের ওপর এবং ঘুমিয়ে পড়েছিল। সেটিকে টেনে নিয়ে চলেছিলেন তাঁর মা। স্যুটকেস ও ঘুমন্ত শিশু উভয়ের ভারই বহন করতে হচ্ছিল ওই মহিলাকে। কিন্তু তিনি তাঁর গতি থামাননি কারণ তিনি একটি দলের সঙ্গে ঝাঁসির দিকে যাচ্ছিলেন। এক সাংবাদিক ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসা করেন লকডাউনের সময় অনেক রাজ্য সরকারই পরিযায়ীদের জন্য বিশেষ বাস-ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে, সেগুলিতে করে কেন বাড়ি ফিরছেন না? কোনও জবাব মেলেনি মহিলার থেকে। মহিলাটি কথা বলার জন্য খুব ক্লান্ত বোধ করছিলেন। ওই দলটি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনও কথা না বলেই সামনের দিকে এগিয়ে যান।
পাঞ্জাব থেকে ঝাঁসির পর্যন্ত হেঁটে ফিরবেন শ্রমিকরা
জানা গিয়েছে, ওই দলটি পাঞ্জাব থেকে তাঁদের দীর্ঘ হাঁটাপথ শুরু করেন এবং ৮০০ কিমি পেরিয়ে তাঁরা ঝাঁসিতে যাবেন। এই ভিডিওটি টুইটারে পোস্ট হওয়ার পর তা ভাইরাল হয়। পরিযায়ী পরিবারদের জোর করে বাড়ি পাঠানো, চাকরি, বাড়ি ছাড়া বা অন্য কোনও আর্থিক সহায়তা ছাড়াই এই লকডাউনের সময় তাঁদের বিপদে ফেলার সাম্প্রতিকতম দৃশ্য হয়ত এটি। লকডাউন ঘোষণার পর পরই পরিযায়ী শ্রমিকরা তাঁদের কাজের জায়গা ছেড়ে নিজ নিজ গ্রামে ফিরছেন পায়ে হেঁটে, সাইকেলে বা ট্রাকের পেছনে বসে।
পথেই মৃত্যু বহু পরিযায়ীর
বাড়ি পৌঁছানোর আগেই অনেক পরিযায়ী শ্রমিকের পথ দুর্ঘটনা বা ক্ষিদের জ্বালায় অথবা ক্লান্ত বা অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। যাঁরা ইতিমধ্যেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে চলতে শুরু করে দিয়েছেন বিশেষ ট্রেন বা বাস তাঁদের জন্য কোনও সহায়তা করতে পারছে না। অনেকেই ট্রেনের টিকিট খুব ব্যয়বহুল বা কাগজপত্রের কাজ খুব পরিশ্রমের বলে ট্রেনে-বাসে উঠছেন না।
ইন্দোর থেকে ৫০০ কিমি সাইকেল চালিয়ে বাড়ির পথে শ্রমিক
মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর থেকে একদল শ্রমিক ইট কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য পরিবারকে নিয়ে সাইকেলে করেই রওনা দেন বাড়ির উদ্দেশ্যে। একজন তাঁর দুই সন্তানকে সাইকেলে বসিয়ে নেয়, কম্বল দিয়ে কোনওভাবে বিছানা মতো তৈরি করে সেখানেই সন্তানরা ঘুমিয়ে পড়ে। এভাবেই চলে ৫০০ কিমির সফর।
ছবি সৌজন্যে অলোক পাণ্ডে