উন্নাও কাণ্ডের অভিযুক্তদের পলিগ্রাফ টেস্ট ও লাই–ডিটেক্টর করাবে সিট
একদিকে যখন এক ধর্ষিতা তরুণী বিচার পেলেন বলে অনেকে মনে করছেন, অন্যদিকে আর এক ধর্ষিতা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন। শুক্রবার রাতেই মৃত্যু হয়েছে উন্নাওয়ের তরুণীর। এই ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে শুক্রবারই আদালতে পেশ করার পর জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। ফরেন্সিক টিম নিশ্চিত করে জানিয়েছে যে ঘটনাস্থল থেকে যে পেট্রোলের নমুনা তারা নিয়ে গিয়েছিল, সেই পেট্রোল দিয়েই আক্রান্তের শরীরে আগুন ধরানো হয়।
শুক্রবার রাত পর্যন্ত আক্রান্ত তরুণী দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। উন্নাও পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে অভিযুক্তদের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময় পুলিশ এক বোতল পেট্রোল বাজেয়াপ্ত করে। উন্নাওয়ের এসপি বিক্রান্ত সিং জানিয়েছেন, পাঁচ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে এবং বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁরা ঘটনার তদন্ত করে দেখছে।
অন্যদিকে সিট পলিগ্রাফ টেস্ট ও লাই–ডিটেক্টর করাতে পারে অভিযুক্তদের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোবাইল লোকেশন এবং অন্যান্য প্রমাণ সিট ঘটনাস্থল থেকে পেয়েছে। যেটা প্রমাণ করছে যে ওই সময় অভিযুক্তরা ওখানেই ছিল। তবে তা পুরোটাই নিশ্চিত করতে সিট প্রমাণগুলি খতিয়ে দেখছে। জানা গিয়েছে, আক্রান্তের পরিবারকে ক্রমাগত হুমকি ফোন করে চলেছে মূল অভিযুক্তের পরিবার। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে পোস্টও করা হয়েছে। উন্নাওয়ের এসপি জানিয়েছেন, এই অভিযোগের প্রমাণ পেলেই আক্রান্তের পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
এসপি বিক্রান্ত সিং বলেন, 'আমরা চেষ্টা করছি এ ধরনের অভিযোগ খতিয়ে দেখার যদিও আক্রান্তের পরিবাররে পক্ষ থেকে এ বিষয়ে পুলিশকে কিছু জানানো হয়নি এবং আমরা কোনও অভিযোগও পাইনি।’ ধর্ষিতার গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে অভিযুক্ত শিভম ত্রিবেদী ও ধর্ষিতা ছোটবেলার বন্ধু। হিন্দু খেরা গ্রামের বাসিন্দা রাম প্রকাশ সিং বলেন, 'আক্রান্ত ও অভিযুক্তের মধ্যে প্রচুর বয়সের পার্থক্য রয়েছে। ওই তরুণী স্নাতক এবং নিজের ধর্ষণ কাণ্ডের লড়াই তিনি নিজেই লড়ছিলেন, অন্যদিকে অভিযুক্ত কলেজ পড়ুয়া। পাঁচজনের মধ্যে এক অভিযুক্ত উমেশ বাজপেয়ি পঞ্চায়েতের বন্ধু।’ অভিযুক্ত শুভমের মা সাবিত্রী দেবী, যিনি তিনবারের গ্রাম প্রধান, অভিযোগ করেন, ওই তরুণী শুভমকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। কারণ তাদের পরিবার ধনী। তিনি বলেন, 'ওই তরুণী আমার ছেলেকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়েছে। সে নির্দোষ এবং যখন আমার ছেলে ঘরে ঘুমোচ্ছিল তখন পুলিশ এসে তাকে তুলে নিয়ে যায়।’
পাঁচ অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যরা উন্নাও পুলিশ হেড কোয়ার্টারের সামনে বিক্ষোভ দেখান এবং দাবি করেন যে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়া হোক। কারণ তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। অন্যদিকে আক্রান্ত তরুণীর বাবা দাবি করেন যে তেলঙ্গানা পুলিশের মতোই উত্তরপ্রদেশ পুলিশেরও উচিত অভিযুক্তদের এনকাউন্টার করা। কারণ তারা জামিন পাওয়ার পর ফের একই ধরনের অপরাধ করবে।