নোটের আকাল, বিল মেটাতে হাসপাতালে ৪০ হাজার টাকার খুচরো দান রোগীর আত্মীয়র
কলকাতার এক পরিবার নিজের রোগীর লোককে হাসপাতাল থেকে ছাড়াতে ৪০ হাজার টাকার খুচরো দিয়ে বিল মেটালেন।
কলকাতা, ১১ নভেম্বর : চারিদিকে নোটেক আকাল। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ৫০০ ও হাজারের নোট বাতিলের পরে সারা দেশে হইহই পড়ে গিয়েছে। তবে বাকী যত ধরনের নোট অথবা মুদ্রা রয়েছে তা সবকটিই সচল। তা কাউকে দিলে আইনত নিতে বাধ্য প্রত্যেকে। [৫০০ ও ১ হাজারের নোট বাতিল! এই সংক্রান্ত আপনার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পান এই প্রতিবেদনে]
আর এই আইনেরই সদ্ব্যবহার করলেন কলকাতার এক রোগীর বাড়ির আত্মীয়। নিজের বাড়ির রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়াতে তাঁরা ৪০ হাজার টাকার খুচরো দিয়ে বিল মেটালেন। [এর আগে ১৯৪৬ ও ১৯৭৮ সালেও নোট বাতিল হয়েছিল, জেনে নিন ইতিহাস]
কলকাতার বিপি পোদ্দার হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগ নিয়ে ভর্তি ছিলেন ৩৫ বছরের সুকান্ত ছৌলে। তাঁকে ছাড়ানোর জন্য প্রয়োজন ছিল ৪০ হাজার টাকা। তবে বড় নোট একলপ্তে বাতিল হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন সুকান্তের বাড়ির লোক। কারণ তাদের কাছে না ছিল ডেবিট কার্ড না ছিল ৫০০ ও ১ হাজার বাদে অন্য নোট। [নোট বাতিল : প্রধানমন্ত্রীকে মাত্র ৯ মিনিটে রাজি করান এই অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ]
হাসপাতালে বারবার পুরনো নোট নিতে আবেদন জানানো হলেও সরাসরি না বলে দেয় কর্তৃপক্ষ। এমনকী অভিযোগ, চেক নিতেও অস্বীকার করে বিপি পোদ্দার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। [#Note Ban সমর্থন করেন দেশের ৮২ শতাংশ মানুষ, বলছে সমীক্ষা]
এরপরই স্যোশাল মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আত্মীয়-বন্ধুদের খুচরো দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায় ছৌলে পরিবার। আর তাতে সাড়াও দেন প্রত্যেকে। সকলে নিজেদের সাধ্যমতো মুদ্রা তুলে দেন ছৌলে পরিবারের হাতে।
সবমিলিয়ে ৪০ হাজার টাকার খুচরো তারপরে বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে জমা করে সুকান্তর পরিবার। একসঙ্গে এত কয়েন দেখে প্রায় তাজ্জব অবস্থা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
প্রথমে এত কয়েন নিতে অস্বীকার করে বদলে ডিম্যান্ড ড্রাফ্টের কথা বলে হাসপাতাল। তবে যেই পুলিশে অভিযোগ করবে বলে হুমকি দেয় ছৌলে পরিবার ও তাঁর আত্মীয়রা, সঙ্গে সঙ্গে খুচরোই নিয়ে নেয় হাসপাতাল।
জানা গিয়েছে, সবমিলিয়ে মোট তিন ঘণ্টা সময় নিয়ে মোট ৬ জন হাসপাতাল কর্মী ৪০ হাজার টাকা মূল্যের কয়েন গুনে শেষ করে। এরপরে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টে নাগাদ ছাড়া পান সুকান্ত ছৌলে।
তাঁর ভাই স্নেহাশিস জানিয়েছেন, আমরা বারবার পুরনো নোট অথবা চেক নিতে অনুরোধ করেছিলাম। তবে হাসপাতাল রাজি হয়নি। সেজন্যই কয়েন জোগাড় করে বিল মিটিয়েছি। কারণ আমরা জানতাম, টাকার চেয়ে কয়েন জোগাড় করা সহজ হবে। এবং এটি নিতে আইনত তারা বাধ্য থাকবেন।