হিংসা থামলেও ক্ষত শুকোয়নি দিল্লির শরীর থেকে, মর্গের সামনে লম্বা লাইন স্বজনহারাদের
টানা চারদিন হিংসার আগুনে ছাড়খার হওয়ার পর বর্তমানে কিছুটা শান্ত দিল্লি। তবে দিল্লি পুলিশের কাছে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জই হল এই বিষয়ে যে কোনও ধরণের গুজব ঠেকানো। গত ৭২ ঘন্টায় সিএএ পন্থী ও সিএএ বিরোধীদের সংঘর্ষে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজধানীর বিস্তীর্ণ এলাকা।
মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২
ইতিমধ্যেই গত চারদিন ব্যাপী হিংসার ঘটনায় দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২। আহত সাড়ে তিনশোরও বেশি। উত্তর-পূর্ব দিল্লির অনেক বাসিন্দাই এখন ভিটে মাটি হারিয়ে রাস্তায় বসেছেন। এদিকে হিংসা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় সমাজের বিভিন্ন মহল থেকেই দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
৩৮ জন মারা গেছেন জিটিবি হাসপাতালে
সূত্রের খবর, নিহত ৪২ জনের মধ্যে ৩৮ জনই জিটিবি হাসপাতালে মারা গেছেন। এছাড়া তিন জন লোক নায়ক হাসপাতাল এবং এক জন প্রবেশ চন্দ্র হাসপাতালে মারা গেছেন। এদিকে একাধিক হাপাতালে ভীড় করছেন মৃতের পরিবারের লোকজন ও নিকটাত্মীয়েরা।
স্বজনহারাদের ভীড় বাড়ছে মর্গ গুলিতে
হিংসার সময় প্রায় দু-তিন দিন আগে নিঁখোঁজ হওয়া ব্যক্তির খোঁজে অনেকেই ভীড় জমাচ্ছেন হাসপাতল গুলিতে। সূত্রের খবর, জিটিবি হাসপাতালে থাকা ১৫টি শবদেহের মধ্যে ৯টিকে এখনও অবদি শনাক্ত করা গেছে বলে জানা যাচ্ছে।
স্বজনহারার কান্নার বেদনার সুর উত্তর-পূর্ব দিল্লির অলিতে গলিতে
দিল্লির এই ভয়াবহ হিংসায় স্বজনহারাদের মধ্যে অন্যতম হলেন বছর ৩৫শের ফিরোজ আহমেদের স্ত্রী সাহানা। গত সোমবার রাত ১১টা নাগাদ একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে তার কাছে। ওই ফোনেই শেষবার ফিরোজের সঙ্গে কথা হয় তার স্ত্রীর। এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে সাহানা জানান, " ওই ফোন কলেই তিনি আমাকে বলেন তাকে অত্যন্ত খারাপভাবে মারধর করা হয়। ওখান থেকে তাকে উদ্ধার করে একজন অপরিচিত ব্যক্তি তাকে করওয়াল নগরে আশ্রয় দেন।
খাবার দেওয়ার পাশাপাশি সেখানে তার প্রাথমিক চিকিত্সাও করা হয়। যদিও পরের দিন থেকে সেই নম্বরটিতে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।" উত্তর-পূর্ব দিল্লির অতিলে গলিতে কান পাতলে এরকমই কত ফিরোজের পরিবারে স্বজনহারানোর কান্নার বেদনার্ত সুরু ভেসে আসবে। কত ফিরোজের ঘরে ফেরার আশায় দিন গুনছেন সাহানারা, বা একবার শেষ দেখার ইচ্ছায় বুকে পাথর চাপিয়ে ছুটে যাচ্ছেন বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গ গুলিতে।