৬০ বছর বয়সে পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন মুম্বইয়ের 'বৃদ্ধা'!
মুম্বই, ৮ জুন : বিদেশে এমন ঘটনা আখছাড় শোনা যায়। তবে এদেশে পঞ্চাশোর্ধ মহিলাদের ক্ষেত্রেই মা হওয়ার খবর খুবই কম শোনা যায়। কিন্তু মুম্বইয়ের পুঞ্জি পটেল ষাট বছর বয়সে সন্তান জন্ম দিয়ে খবরের শিরোনামে চলে এলেন।
ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ)পদ্ধতির মাধ্যমে সম্প্রতি ৩.৯ কেজি ওজনের সুস্থ সবল শিশুপুত্রকে জন্ম দিয়েছেন পুঞ্জি। আনন্দে চোখের জল আর বাধ মানছে না। মুখে হাসি, চোখে জল নিয়ে বললেন, এই বয়সে সন্তানের মা হওয়ার জন্য ভগবানের আশীর্বাদ থাকতে হয়। ঈশ্বর আমার উপর সদয়।
পুঞ্জি আসলে কচ্ছ প্রদেশের বাসিন্দা। ৩৫ বছর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ১৫ বছর আগেই তাঁর ঋতুজরা হয়। তাঁর জরায়ুতেও সমস্যা ছিল। ১০ বছর হল পটেল দম্পতি মুম্বইয়ে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করেন।
পুঞ্জির ঋতুজরা শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত এই দম্পতি সন্তানের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু লাভ হচ্ছিল না। হাসপাতাল থেকে মন্দির, চিকিৎসক থেকে তান্ত্রিক, সাধুসন্ত কিছুই বাদ রাখেননি তাঁরা। কিন্তু সব জায়গায় থেকে সবার কাছ থেকেই শুধু মিলেছে হতাশা।
বয়সও এদিকে ক্রমশ বাড়তে থাকে পুঞ্জির। বয়স বাড়লেও নিজের সন্তানকে জন্ম দেওয়ার স্বপ্ন কিছুতেই মাথা থেকে বের করতে পারছিলেন না পুঞ্জি। তাই নিজের সন্তানের জন্য ঝুঁকি নিতেও পিছপা হননি ওই দম্পতি। তাই চিকিৎসকের পরামর্শে আধুনিক আইভিএফ পদ্ধতি অবলম্বন করেন পুঞ্জি।
আইভিএফ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মেহুল দামানির চিকিৎসাপদ্ধতিতে চিকিৎসার প্রথম ধাপেই সাফল্য আসে। ডাঃ দামানির কথায়, হরমোনের খামতির জন্য পুঞ্জির জরায়ু সঙ্কুচিত হয়ে গিয়েছিল। তাঁর ক্ষেত্রে গর্ভধারণ করাটা অসম্ভবই মনে হচ্ছিল একটা সময়। কিন্তু প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও দম্পতি সন্তানের আর্জি জানাচ্ছিলেন বারবার।
পটেল দম্পতিকে শেষমেষ ফেরাতে পারেননি ডাঃ দামানি। তিনি বলেন, প্রথমে হরমোনের ওষুধ দিয়ে পুঞ্জির ঋতুচক্র শুরু করা হয়। এরপর আইভিএফ ট্রায়ালের মাধ্যমে তাঁর স্বামীর শুক্রাণুর সাহায্যে একটি ভ্রূণ তৈরি করা হয়।
ডাঃ দামানির কথায়, এতবয়সে সন্তান জন্ম দেওয়ার পক্ষে নন অনেকেই। পরিবারের ক্ষেত্রেও চাপ থাকে। কারণ স্বাভাবিক ভাবে ঋতুচক্র বন্ধ হওয়ার পরে সন্তানের জন্ম দিলে সেই বৃদ্ধ মা-বাবার সন্তানের লালন পালন নিয়ে একটা চিন্তা থেকেই যায়। কিন্তু পুঞ্জি সেই সাহসটা দেখিয়েছেন। পুঞ্জির ক্ষেত্রে এই সন্তান অলৌকিক ঘটনা ছাড়া আর কিছুই না।