বাজেটে গুরুত্ব বাংলাকে, রইল একগুচ্ছ প্রস্তাব
আরও পড়ুন: আয়করে ছাড় সামান্যই, ঊর্ধ্বসীমা বেড়ে দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বাজেটের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করলেও বাজেটের কপি ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রথমত, এ দিন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি চারটি রাজ্যে এইমস (অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট মেডিক্যাল সায়েন্সেস) ধাঁচের হাসপাতাল তৈরি করার কথা ঘোষণা করেছেন। সেই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নাম। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি যখন প্রথম ইউপিএ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন, সেই সময় থেকে বাংলায় এইমস ধাঁচের হাসপাতাল তৈরির কথা ভাবা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছিল, উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে তা তৈরি হবে। এক দশক গড়িয়ে যাওয়ার পর এখন ঠিক হয়েছে কল্যাণীতে তৈরি হবে এই অত্যাধুনিক হাসপাতাল। যদিও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছিল, যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপি-র ঘোর সংঘাত চলছে, তখন হয়তো রাজ্যে এইমস গড়ার ব্যাপারে মত দেবে না কেন্দ্র। কিন্তু সেই আশঙ্কা ভুল প্রমাণিত হল। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এনডিএ সরকার স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিল বাংলাকে।
দ্বিতীয়ত, কলকাতায় ইএম বাইপাসের ধারে অবস্থিত সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউটকে 'ইন্সটিটিউট অফ ন্যাশনাল ইম্পর্টেন্স' বা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাজেটে। এর ফলে এই প্রতিষ্ঠানটি কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে মোটা টাকা অনুদান পাবে। আসবে বিদেশি সহায়তাও। এটা বাংলার কলাকুশলীদের কাছে নিঃসন্দেহে আনন্দের ব্যাপার।
তৃতীয়ত, কলকাতা থেকে অমৃতসর পর্যন্ত শিল্প করিডর গড়ার কাজ ত্বরান্বিত করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন অরুণ জেটলি। এর ফলে কলকাতার পরিকাঠামো উন্নয়নে অতিরিক্ত টাকা পাওয়া যাবে। তাতে আখেরে রাজ্যের লাভ হবে।
চতুর্থত, ভারতে সড়ক, রেল এবং বিমানের পাশাপাশি জলপথ পরিবহণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। নদীপথে যোগাযোগ বাড়াতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই 'জলমার্গ বিকাশ প্রকল্প'-এর আওতায় উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ থেকে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া পর্যন্ত জলযান চালানো হবে। এই ১৬২০ কিলোমিটার জলপথ বিকাশের লক্ষ্যে ৪২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এলাহাবাদ-হলদিয়া জলপথে যুক্ত হবে কলকাতাও।
পঞ্চমত, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদ (নন-পারফর্মিং অ্যাসেটস) ক্রমশ বাড়তে থাকায় দেশের কয়েকটি জায়গায় ট্রাইবুনাল তৈরি করছে কেন্দ্রীয় সরকার। পশ্চিমবঙ্গ থেকে শিলিগুড়িকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের ট্রাইবুনালের কাজ হবে অনুৎপাদক সম্পদ চিহ্নিত করে তা বাজেয়াপ্ত করে বা বেচে রোজগারের ব্যবস্থা করা।
বাজেটে বাংলাকে গুরুত্ব দেওয়ায় এটা পরিষ্কার, বিজেপি এখন এই রাজ্যকে পাখির চোখ করেছে।