সিএএ–এর ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে রাজ্য সফরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কমিশন
সিএএ–এর ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে দেশ সফরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কমিশন
কেন্দ্র সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে তৈরি ভুল ধারণা মানুষের মন থেকে দূর করতে অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। তাঁদের জন্য তৈরি সংখ্যালঘু জাতীয় কমিশন (এনসিএম) দেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে নাগরিকত্ব আইন যে সরকারের ভালো পদক্ষেপ এবং তা তাদের প্রশংসা করা উচিত, তা বোঝাতে এক বিশাল প্রচার কার্যক্রম শুরু করেছে।
সাতটি রাজ্যের ১০০টি ধর্মযাজকদের সঙ্গে আলোচনা
একদিকে যখন এই নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, অন্যদিকে এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্যানেল দেশের সাতটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে সফর করে প্রায় ১০০টি চার্চের পরিচালকদের সঙ্গে দেখা করেছেন। গত দু'মাস ধরে এই প্রচার কার্যক্রম চলছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, চার্চের যাজক ও পরিচলকদের কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল এই প্যানেলকে। ইতিমধ্যেই এই যাজক ও পরিচালকদের মধ্যে অনেকেই সিএএ-এর বিরুদ্ধে তাঁদের বিবৃতি দিয়েছেন। এনসিএম প্রতিনিধিরা যাজকদের সঙ্গে বহু কথোপকথন করেন এবং উদাহরণ স্বরূপ জানান যে সিএএ-এর সমতুল্য আইন এনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও আমেরিকায় বেশ কিছু দেশের (বেশিরভাগই মুসলিম) প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তাই খ্রিস্টানদের মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে ভারত এখনও ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনকে অনুমোদন দেয়নি।
এনসিএমের প্রয়াস
এনসিএমের সহ-সভাপতি ও খ্রিস্টান সদস্য আইনজীবী জর্জ কুরিয়ান মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, কেরল, কর্নাটক, ঝাড়খণ্ড, তামিল নাড়ু, এবং দিল্লির চার্চের পরিচালকদের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁরাও যাতে অন্য রাজ্যে গিয়ে সিএএ নিয়ে ভুল-বিভ্রান্তি দূর করতে সরকারকে সহায়তা করেন সে বিষয়েও তাঁদের বোঝানো হয়। কুরিয়ান নিশ্চিত করেন যে তিনি বিভিন্ন গোষ্ঠীর খ্রিস্টানদের সঙ্গে দেখা করে সিএএ নিয়ে কথা বলেছেন কিন্তু সেই তথ্য প্রকাশ করেননি তিনি। আইনজীবী বলেন, ‘সিএএতে খ্রিস্টানদের অন্তর্ভুক্তি করানো একটি ভাল পদক্ষেপ। সিএএর প্রশংসা করা দরকার। সিএএ নিয়ে প্রচুর ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়েছে, যা দূর করা দরকার। সিএএ কোনও ভারতীয়র নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়নি।'
সিএএ সংবিধান বিরোধী বলে জানান খ্রিষ্টান যাজকরা
কুরিয়ানের সঙ্গে দেখা করছেন এমন বেশ কিছু খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর চার্চ পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে যে তাঁরা কুরিয়ানকে সিএএ-এনআরসি যোগ নিয়ে প্রশ্ন করেছেন, যা সমালোচকদের কাছে মুসলিমদের জন্য ‘প্রাণঘাতী' হিসাবে অভিহিত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরল রাজ্যের, যা কুরিয়ানেরও রাজ্য, সেখানকার এক চার্চ যাজক জানিয়েছেন, সিএএ সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ নীতি বিরোধী এবং তারা অর্থহীন সংলাপের দ্বারা কোনওভাবেই প্রভাবিত হবেন না।