মায়ানমারে তথ্য প্রযুক্তি কর্মীদের বন্দি করে কাজ করানো হচ্ছে, ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান বিদেশ মন্ত্রকের
বিদেশ মন্ত্রক সতর্ক করে জানিয়েছে, মায়ানমার ও থাইল্যান্ডে ভুয়ো তথ্য প্রযু্ক্তির চাকরির টোপ দেওয়া হচ্ছে
কিছুদিন আগেই মায়ানমারে আটকে পড়া ভারতীয় যুবকদের ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। এরপরেই শনিবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। ভারতীয় দক্ষ আইটি যুবকদের প্রতারিত করলে বেশ কয়েকটি ব়্যাকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ভারত সরকার ইতিমধ্যে এই ব়্যাকেট চক্রগুলো পর্দা ফাঁস করতে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেছে বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, কল-সেন্টার কেলেঙ্কারি এবং ক্রিপ্টো-কারেন্সি জালিয়াতির সঙ্গে বেশ কয়েকটি ভুয়ো তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা যুক্ত। এই তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলো থাইল্যান্ডে 'ডিজিট্যাল সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং এক্সিকিউটিভস' পদে যোগ দেওয়ার জন্য প্রথমে ভারতীয়দের উৎসাহিত করা হয়। লোভনীয় চাকরির টোপে অনেক ভারতীয় পা দেয় বলেই বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে।
ভুয়ো সংস্থাগুলো মূলত ভুয়ো তথ্য প্রযুক্তি জানা দক্ষ যুবকদের নিশানা করে। থাইল্যান্ডে লাভজনক ডেটা ইন্ট্রির নামে কাজের বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া হয়। থাইল্যান্ড, দুবাই ও ভারত ভিত্তিক অনেক এজেন্স এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।
বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সতর্ক করে জানানো হয়েছে, মূলত নিশানা করে দক্ষক যুবকদের অবৈধ উপায়ে মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যুবকদের বন্দি রেখে কাজ করানো হয়। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া বা এই ধরনের কোথাও থেকে চাকরির আমন্ত্রণ পেলে ভালো করে দেখে নেওয়া প্রয়োজন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুয়ো চাকরি হয়। ভুয়ো চাকরির টোপে না পড়ার জন্য ভারতীয় যুবকদের বিদেশ মন্ত্রক সতর্ক করেছে।
বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে ট্যুরিস্ট বা ভিজিট ভিসায় ভ্রমণ করার আগে, ভারতীয় নাগরিকদের বিদেশে সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তাদের প্রমাণপত্র যাচাই করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ভারতীয় যুবকদের নিয়োগকারী এজেন্টের পূর্ববর্তী তথ্য যাচাইয়ের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যে কোনো সংস্থার চাকরির প্রস্তাব নেওয়ার আগে সবকিছুটি খুঁটিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। সেখানে ভারতী তথ্য প্রযুক্তি কর্মীদের বন্দি করে রাখা হয়েছে এবং অবৈধভাবে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। মায়ানমার থেকে মূলত তামিল নাড়ুর তথ্য প্রযুক্তি কর্মীরা পাঠিয়েছিল এই ভিডিও। ভিডিওতে তাঁদের বলতে দেখা যায়, আমদের থাইল্যান্ডে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে আমাদের মায়ানমারে নিয়ে আসা হয়। আমাদের অবৈধভাবে সীমান্ত পার করার মতো অপরাধ করতে বাধ্য করা হয়। এই কেলেঙ্কারিতে ভারত সব বেশ কিছু দেশ জড়িত রয়েছে। ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরেই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন বিদেশ মন্ত্রকের হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছেন। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০ জন ভারতীয় কর্মীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।