গর্ভবতী মায়ের থেকে সদ্যোজাতের শরীরে বাসা বাঁধল করোনা, সংক্রমণের নয়া ধারায় স্তম্ভিত চিকিৎসকেরা
গর্ভবতী মায়ের থেকে সদ্যোজাতের শরীরে বাসা বাঁধল করোনা, সংক্রমণের নয়া ধারায় স্তম্ভিত চিকিৎসকেরা
করোনা আতঙ্কে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। ভারতেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এরই মধ্যে গর্ভবতী মায়ের শরীর থেকে গর্ভজাত সন্তানের শরীরে করোনা ছড়ানোর ঘটনায় স্তম্ভিত চিকিৎসকরা। পুনের বি জে মেডিক্যাল কলেজ(বিজেএমসি) এবং সাসুন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতে, ভারতে এমন ঘটনা এই প্রথম। সন্তানের শরীরে করোনা ছড়ানোয় তার সঙ্গে বাসা বাঁধে আরও অন্যান্য অসুখ, ফলে প্রাণসঙ্কটে পড়ে ওই শিশু।
আইসিএমআরের রিপোর্টে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে
বিশ্বে এখনও পর্যন্ত গর্ভবতী মায়ের শরীর থেকে গর্ভজাত সন্তানের শরীরে এসএআরএস-সিওভি-২ ছড়ানোর ঘটনা হাতেগোনা। ফলত বিষয়টি এখনও গবেষণাধীন। অন্যদিকে এপ্রিলেই আইসিএমআরের একটি রিপোর্টে মায়ের শরীর থেকে গর্ভজাত সন্তানের শরীরে কোভিড সংক্রমণের সম্ভাবনা উল্লেখিত হলেও সঠিকভাবে কারণ দর্শানো হয়নি বলেই জানা যাচ্ছে। আইসিএমআরের জারি করা বিধি অনুযায়ী, মায়ের শরীর থেকে গর্ভে থাকা সন্তানের শরীরে কোভিড সংক্রমণের অধিক প্রমাণ না থাকলেও আগে থেকে সাবধান হওয়াটা দরকারি, কারণ এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই আর যাই হোক, মায়ের থেকে গর্ভজাত সন্তানের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়।
পথ দেখাতে পারে এইচআইভি ও জিকা ভাইরাস সম্বন্ধিত গবেষণা
ভার্টিকাল ইনফেকশন বা উলম্ব সংক্রমণের ক্ষেত্রে এইচআইভি ও জিকা ভাইরাস, কোভিডের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। বি জে মেডিক্যাল কলেজ ও সাসুন হাসপাতালের প্রধান ডঃ মুরলীধর তাম্বে জানিয়েছেন যে, ভারতে এমন ঘটনা প্রথম জানা যায় বিজেএমসিতেই। যদিও ভেন্টিলেশনে দেওয়ার ৩ সপ্তাহের মধ্যেই ওই কন্যাসন্তান সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে। বিজেএমসি ও সাসুন হাসপাতালের পুষ্টি বিভাগের প্রধান ডঃ আরতি কিনিকার জানিয়েছেন, "এ বিষয়ে গবেষণাজনিত সমস্ত রিপোর্ট আমরা আমেরিকার একটি জার্নালে পাঠিয়েছিলাম এবং গতকাল রাতেই তা প্রকাশের জন্য সিলমোহর পেয়েছে।"
তিন বিভাগের একযোগে রিপোর্ট গঠন
সূত্রের খবর অনুযায়ী, জন্মানোর পূর্বেই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার দরুণ কন্যাসন্তানটির মধ্যে কোভিডের চরম রূপ পরিলক্ষিত হয়। এরপরেই করোনা ঠেকাতে পুষ্টি, প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের গবেষকরা একযোগে মেডিক্যাল দল গঠন করেন। তাঁদের মিলিত প্রয়াসেই তৈরি হয়েছে রিপোর্ট। ডঃ কিনিকার জানান, "মে মাসের শেষ সপ্তাহে হদপসারের ২২ বছরের এক গর্ভবতী মহিলা সাসুন হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রসবের একদিন আগে তাঁর জ্বর থাকায় আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করানো হয়, সেখানে ফলাফল নেগেটিভ এলেও অ্যান্টিবডি টেস্টে ফল পজিটিভ আসে।"
জন্মানোর একদিনের মধ্যেই জ্বর আসে কন্যাসন্তানের
ডঃ কিনিকার জানিয়েছেন, "জন্মানোর ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই কন্যাসন্তানটির জ্বর আসে, সঙ্গে দেখা দেয় অলসতা এবং কোভিডের উপসর্গ। রক্ত পরীক্ষায় শিশুটির করোনা ধরা পড়লে আমরা শিশুর নাড়ি ও নাভিতে করোনার চিহ্ন পাই। ফলে আমরা নিশ্চিত হই শিশুর মা উপসর্গহীন করোনায় আক্রান্ত ছিল।" সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ সরকারি হাসপাতালে ১৪ই জুলাই থেকে ২৩শে জুলাইয়ের মধ্যে ৪২ জন গর্ভবতী মহিলা সন্তান প্রসব করেন। যাদের মধ্যে ৬ সন্তান করোনা পজিটিভ বলে ধরা পড়ে। ফলত গর্ভবতী মহিলাদের নিয়ে ক্রমশ কপালে চিন্তার ভাঁজ চওড়া হচ্ছে চিকিৎসকদের।
দু’মাস পর ফের কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে সুইগি, কাজ খোয়ালেন ৩৫০ জন এক্সিকিউটিভ