একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে বড়সড় উদ্যোগ, ২০২২-এর মধ্যে নয়া নীতি কেন্দ্রের
একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে বড়সড় উদ্যোগ, ২০২২-এর মধ্যে নয়া নীতি কেন্দ্রের
বাইডেন ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পরেই বিশ্ববাসীর স্বার্থে 'প্যারিস জলবায়ু চুক্তি'-তে ফিরেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পরিবেশ দূষণ রোধ করার লক্ষ্যে একইভাবে এগোচ্ছে ভারত। ২০২২-এর মধ্যে দেশে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের উৎপাদন, ব্যবহার, বিক্রি ও আমদানি সংক্রান্ত বিষয়ে সম্পূৰ্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানাল কেন্দ্রীয় পরিবেশ কল্যাণ দফতর। ১১ই মার্চ এই প্রসঙ্গে একটি প্রাথমিক বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে মন্ত্রকের তরফে। এদিকে এ খবরে স্বাভাবিকভাবেই উছ্বসিত সমাজকর্মী ও পরিবেশবিদরা।
২০২২-এর শুরু থেকেই জারি নিষেধাজ্ঞা
পরিবেশ মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ২০২২-এর ১লা জানুয়ারি থেকেই দেশে নিষেধ হতে চলেছে পলিস্টাইরিন দ্বারা প্ৰস্তুত সামগ্রী এবং থার্মোকলের মত একবার ব্যবহারযোগ্য পণ্য। পাশাপাশি ২০২২-এর পয়লা জুলাই থেকে চিরতরে বন্ধ হবে ১০০ মাইক্রনের কম পাতলা পিভিসি ব্যানার ও হরেক প্লাস্টিক সামগ্রী। পাশাপাশি মন্ত্রকের নিয়মানুসারে, এ বছরের ৯ই সেপ্টেম্বর থেকে প্লাস্টিক ব্যাগের বেধ হতে হবে ৫০-১২০ মাইক্রনের মধ্যে।
পাকাপোক্তভাবে প্লাস্টিক নিষেধের পথে ভারত
ইতিপূর্বে বেশ কয়েকটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত সরকার প্লাস্টিকের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে গেলেও সঠিক বিকল্পের অভাবে ব্যর্থ হয় প্রচেষ্টা, মত গবেষকদের। সামুদ্রিক হোক বা স্থলভাগ, প্লাস্টিকের কারণে যেভাবে বাড়ছে দূষণ, তাতে ক্রমশ বিপন্ন হচ্ছে নানা প্রজাতির জীব ও উদ্ভিদ জীবন। সূত্রের খবর, ২০১৯ সালের স্বাধীনতা দিবসে নিজের ভাষণের মাধ্যমে দেশকে প্লাস্টিকমুক্ত করার বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি প্লাস্টিক দূর করার আহ্বান দেওয়ার কারণে ২০১৮ সালে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের বিশেষ পুরস্কারের সম্মানিতও হন তিনি।
অধিকাংশ প্লাস্টিকই পুনর্নবীকরণযোগ্য নয়
ভারতে উৎপাদিত মোট প্লাস্টিকের ৪৩%-ই প্যাকেজিংয়ের কাজে লাগে এবং তার অধিকাংশই পুনর্নবীকরণযোগ্য নয়, এমনই তথ্য মিলেছে ভারতের শক্তি - উৎস পর্ষদ এবং পরিবেশ বিভাগের ২০১৮ সালের যৌথ রিপোর্টে। জাতিপুঞ্জের হিসাবে, প্রতিবছর ভারতে ৯৪.৬ লক্ষটন প্লাস্টিক উৎপন্ন হলেও তার ৪০%-ই অসংগৃহীত থাকে। পাশাপাশি পরিবেশ মন্ত্রকের হিসাব অনুসারে, ভারতের বড় শহরগুলি প্রত্যহ গড়ে ৪,০০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন করে থাকে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক পর্ষদের (সিপিসিবি) মতে, স্থল সহ ভূগর্ভস্থ জলেও প্লাস্টিক দূষণ ছড়ায়, গবাদি পশুর ক্ষতি ছাড়াও ডাইক্সিনের ন্যায় রাসায়নিক নির্গমন করে মানুষের হরমোনে গলদ সৃষ্টি করে প্লাস্টিক।
প্লাস্টিক বন্ধের জেরে চাকরি যেতে পারে ১০ লক্ষ মানুষের
সর্বভারতীয় প্লাস্টিক উৎপাদক সমিতির (এআইপিএমএ) পরিচালন অধিকর্তা দীপক বল্লানির মতে, "যেভাবে প্লাস্টিকের কারণে দূষণ বাড়ছে, তাতে প্লাস্টিক বন্ধ করা উচিত। কিন্তু এহেন হঠাৎ ঘোষণায় এমএসএমই ক্ষেত্রে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ চাকরি খোয়াতে পারে। তাই এইসব কারখানার সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন হবে।" যদিও সঠিক কৌশল না করেই হঠাৎ বিজ্ঞপ্তিতে যে ভেঙে পড়তে পারে অর্থনৈতিক কাঠামো, তা স্পষ্ট করেছেন দূষণ বিশেষজ্ঞ স্বাতী সিং সম্ব্যাল। স্বাতীর মতে, "প্লাস্টিক বন্ধ করার আগে সঠিক বিকল্পের বন্দোবস্ত না করলে আগেরবারের মতো এবারেও ব্যর্থ হতে পারে কেন্দ্র।"
সভায় দেরির জন্য দুঃখপ্রকাশ অমিত শাহের, মমতার সঙ্গে তাঁর পার্থক্য কোথায় তুলে ধরলেন