কেরলে এই দম্পতির বিয়েতে জয় সারা ভারতের রুপান্তরকামীদের
বন্ধু বান্ধব, পরিবার পরিজন ও বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির উপস্থিতিতে আজ (১০ মে) বিয়ে করলেন কেরালার প্রথম আইনি ট্রান্স-দম্পতি।
ধূমধাম করে বিয়ে হল ইশান ও সুরিয়ার। দুজনের মুখে হাসি আর বাধ মানছিল না। বিয়ের সুদৃশ্য প্যান্ডেল, চোখ ঝলসানো আলো, জিভে জল আনা খাবার দাবার, সবচেয়ে বড় কথা ছিলেন সমাজের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি সহ ছিলেন দুজনের পরিবার পরিজন বন্ধু-বান্ধবরাও। যে কোনও বিয়েতে এগুলো স্বাভাবিক হলেও এই বিয়েটাতো আর পাঁচটা বিয়ের মতো নয়। পাত্র-পাত্রী দুজনেই যে রূপান্তরকামী। ইশান-সুরিয়ার বিয়েতেই কেরালার প্রথম আইনি বৈধতা পেল কোনও রূপান্তরকামী-দম্পতি। কাজেই এই বিয়ে ভারতে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের জন্য এক বড় জয়।
ইশানের শরীরটা ছিল মহিলার। কিন্তু ভেতর থেকে এক পুরুষ বাইরে বেরোবার জন্য ছটফট করতো। অপরদিকে সুরিয়ার ব্যাপারটা পুরো উল্টো। তার ক্ষেত্রে এক নারী আটকা পড়েছিল পুরুষের দেহে। দুজনেই সাফল্যের সঙ্গে নিজেদের সেক্স চেঞ্জ বা যৌন-রুপান্তর ঘটিয়েছেন। দুজনেই ট্রান্সজেন্ডার জাস্টিস বোর্ডের সদস্য। সেখানেই বহু বছর আগে তাদের বন্ধুত্ব হয়। সেই বন্ধুত্ব থেকে ক্রমে প্রেম, এবং আজ তা উন্নীত হল বিবাহে। সূরিয়া কেরালার স্টেট লিটারেসি মিশনের পাঠক্রমে দশম শ্রেণীতে পড়ে, আর ইশানের পড়ে ক্লাস টুয়েলভে।
এতদিন রুপান্তরকামীদের বিয়ে মানেই ছিল একটা গোপনীয়তা। সমাজের দিক থেকে ধেয়ে আসত অপমান। সেই অপমানের আতঙ্কের মুখে তাদের এই বিয়ে ভারতের রুপান্তরকামীদের আশা দেখাচ্ছে। বিশেষ বিবাহ আইন অনুযায়ী তিরুবনন্তপুরমের ম্যানাম মেমোরিয়াল হাউসে দুজনের বিয়ে হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এলজিবিটি অধিকার কর্মী এবং অভিনেতা শীতল শ্যাম, টিএন সীমা, ডাবিং শিল্পী ভাগ্যলক্ষ্মী, কেরালার পর্যটনমন্ত্রী কাদকম্পলি সুরেন্দ্রন, মেয়র ভি কে প্রশান্ত সহ সমাজের অনেক কেউকেটা।
এর আগে ২০১৭ সালে, কেরালায় আরেক রূপান্তরকামী দম্পতির বিবাহ হয়েছিল। সুকনিয়া কৃষ্ণ এবং আরভ আপুকুত্তন-এর একে অপরের সঙ্গে দেখা হয়েছিল হাসপাতালে। তারা যৌন-পরিবর্তন অপারেশন করাতে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতালেই তাদের প্রেম হয়েছিল। কিন্তু সেই বিয়ের আইনি বৈধতা ছিল না বলে জানা গিয়েছিল।