কেরলের হাত ধরেই সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয় হয়ে উঠছে দক্ষিণ ভারত! নেপথ্যে কী কারণ
ইতিমধ্যেই দেশে বড়সড় জঙ্গি নাশকতার ছক বানচাল করেছে এনআইএ। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত বংলার মুর্শিদাবাদ ও কেরালার এর্নাকুলামের একাধিক জায়গায় হানা দেয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ-র গোয়েন্দারা। সেখান থেকেই নয় আল কায়দা জঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে সাম্প্রতিককালে আইসিসি সহ একাধিক আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনকে ঘাঁটি গাড়তে দেখা যায় কেরলে। এটাই বর্তমানে সবথেকে বেশি মাথা ব্যাথার কারণ হয়েছে গোয়েন্দাদের।
অর্থের যোগানও সেই কেরল থেকেই
এদিকে একসাথে এত জন সন্দেহভাজন জঙ্গির গ্রেফতারির ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে নেই বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এনআই-র দাবি পশ্চিমবঙ্গে আল কায়দার এই মডিউলের সদস্যরা কিছুদিনের মধ্যেই দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হত। সেখানেও তাদের গাঁটি রয়েছে বলেই প্রাথমিক তদন্তে অনুমান গোয়েন্দাদের। সেখানে বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্রও কেনার কথা ছিল তাদের। যার পুরো টাকটাই আসতো কেরল থেকে।
আল কায়দার পাশাপাশি শক্তি বৃদ্ধি আইসিসেরও
ওয়াকিমহলের ধারণা সাম্প্রতিক অতীতে সৌদি থেকে একটা বড় অংশের ওহাবী প্রচারকের দল কেরলে অনুপ্রবেশ করে। এই অঞ্চলে শিয়া মুসলিমদের বাড়াবাড়ন্ত ঠেকানোই যাদের মূল উদ্দশ্য। তারপর থেকেই কেরলে ‘জিহাদি' কর্মকাণ্ড অনেকটাই বেড়ে যায় বলে জানা যাচ্ছে। এই ক্ষেত্রে অনেকটাই হাত রয়েছে ইসলামিক স্টেট ও পাকিস্তান মদতপুষ্ট আল কায়দার মতো জঙ্গি সংগঠন গুলির।
কেরলের হাত ধরেই দক্ষিণ ভারতে শক্তি বাড়াচ্ছে জঙ্গি সংগঠনগুলি
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পাকিস্তানের পেশোয়ারে বসে আল কায়দার জঙ্গি নেতারা দিয়েই ভারতে হামলার ছক কষা হচ্ছিল। এই কাজের দ্বারা ক্রমেই শক্তি বৃদ্ধি করছিল ভারত ও বাংলাদেশের ‘আল কায়েদা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাব কন্টিনেন্ট' বা ‘আকিস' নামের নব নির্মিত জঙ্গি সংগঠনটিও। দক্ষিণ ভারত ও বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই শক্তি ঘাঁটিও গড়েছে তারা। কেরলের এর্নাকুলাম ও বেঙ্গালুরুতেও রয়েছে ঘাঁটি।
‘সন্ত্রাসবাদী ও দেশদ্রোহীদের নিরাপদ আশ্রয়’ কেরল?
এদিকে বাম-শাসিত কেরলকে ‘সন্ত্রাসবাদী ও দেশদ্রোহীদের নিরাপদ আশ্রয়' তকমা দিয়ে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। কেন বারবার এই রাজ্য থেকেই আইসিস সহ একাধিক কুখ্যাত জঙ্গি দলের যোগসূত্র পাওয়া যাচ্ছে তা নিয়েও সরব হয়েছেন অনেকে। এদিকে সাম্প্রতিককালে দক্ষিণভারত জুড়ে একাধিক জঙ্গি নাশকতার ঘটনাতে নাম জড়াতে দেখা গেছে কেরলের।
সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে মগজ ধোলাই
উল্টোদিকে ভারতে একাধিক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার মূল কাণ্ডারী ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের জন্মও এই কেরলে। এদিকে সাম্প্রতিককালে আফগানিস্তানে আইসিস ঘাঁটিতে যোগদানকারী ২০ জনেরও বেশি ভারতীয় কেরলের বাসিন্দা বলেই জানা যায়। এদিকে বছর তিনেক আগেও একটা তদন্তের সূত্র ধরে কেরলার একটা বড় অংশের যুবকের খোঁজ খবর নেয় এনআইএ। সেখানে দেখা যায় ওই যুবকদের বেশিরভাগই আল-কায়দার উগ্রপন্থী প্রচারক আনোয়ার-আল-আওলাকির বক্তৃতার নিয়মিত শ্রোতা। আর এই মগজধোলাইয়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াকে।