ভারত - বাংলাদেশের সুসম্পর্কের দিন কি শেষ? CAB আর NRC ঘিরে উঠছে প্রশ্ন
একদিকে বাংলাদেশি হঠাও অন্যদিকে বাংলাদেশি শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদান। দুই স্ববিরোধী বিলের জটে জড়িয়ে গিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক।
একদিকে বাংলাদেশি হঠাও অন্যদিকে বাংলাদেশি শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদান। দুই স্ববিরোধী বিলের জটে জড়িয়ে গিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক। বরাবরই প্রতিবেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে ভারতের। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও রয়েছে। একই সঙ্গে ভাষাগত দিক থেকেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক একটু বেশিই ভাল। কিন্তু এবার সেই সম্পর্কে চিড় ধরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ বন্ধে জারি এনআরসি
বাংলাদেশ থেকে বেআইনি অনুপ্রবেশ বন্ধ করতেই অসমে এনআরসি চালু করে মোদী সরকার। তাতে ১৯৭২ সালের পরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাঁরা এসেছেন বা আসছেন তাঁদের চিহ্নিত করতেই এই তালিকা তৈরি করা হয়। চূড়ান্ত তালিকা থেকে অসমে বসবাসকারী একাধিক বাংলাদেশির নাম বাদ পড়েছে। তাঁদের আলাদা করে শরণার্থী শিবিরে রাখার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। অসমে সেই শরণার্থী শিবির তৈরিও হয়েছে। ইতিমধ্যেই আবার অসমের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা হুমকি দিয়ে বসেছেন বাংলাদেশ থেকে বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশকারীদের ভারত থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। কয়েক দিন আগে পর্যন্ত এই নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল গোটা দেশে।
বাংলাদেশি শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদান
এনআরসি রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি বিল পাস করাল মোদী সরকার। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। তাতে বলা হয়েছে পাকিস্তান, আফগানিস্তা এবং বাংলাদেশের হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁরা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁদের নাগরিকত্ব দেবে সরকার। অর্থাৎ আগে যেখানে এই তিন দেশের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পেতে ১২ বছর অপেক্ষা করতে হত এখন মাত্র ৬ বছরেই সেই নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন তাঁরা।
এনআরসি নিয়ে হাসিনাকে আশ্বাস মোদীর
এনআরসি চালু হওয়ার পর যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আস্বস্ত করেছিলেন যে এই নিয়ে বাংলাদেশের কোনও সমস্যা হবে না। বাংলাদেশি খেদাও অভিযান হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। যদিও কলকাতায় ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এনআরসি নিয়ে কথা বলেছেন শেখ হাসিনা।
অমিত শাহের সমালোচনা বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর
এদিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল রাজ্যসভায় পাসের আগেই এই বিল নিয়ে অমিত শাহের মনোভাবের সমালোচনা করেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী একে আবদুল মেমন। তিনি অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের ষে ইঙ্গিত তিনি দিয়েছেন সেটা ঠিক নয়। অমিত শাহ সিএবি-র সমর্থনে বলেছিলেন, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের উপর অনৈতিক আচরণ করা হয়ে থাকে। তার প্রেক্ষিতেই মেমন বলেছেন অমিত শাহ যে দাবি করেছেন তার কোনও প্রমাণ তিনি দেননি। অকারণেই দোষারোপ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতা নজির তৈরি করেছে গোটা বিশ্বে। তাই তিনি আশা প্রকাশ করেছেন ভারত এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না যাতে দুই দেশের বন্ধুত্বে আঘাত হানে।
বিশ্বের খুব কম দেশেই বাংলাদেশের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে, দাবি সেদেশের বিদেশমন্ত্রীর