কারাকোরামে ভীষ্ম ট্যাঙ্ক মোতায়েন ভারতের! ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় চিনের চোখে চোখ রেখে বার্তা
উত্তর লাদাখে ভারতের অন্তিম পোস্ট দৌলত বেগ ওল্ডি। সেই ডিবিওর অবস্থান সুমুদ্ধপিষ্ঠ থেকে ১৬০০ ফিট উঁচুতে। এহেন দৌলত বেগ ওল্ডির উপর নজর দিচ্ছে চিনা সোনা। দেশের উচ্চতম এয়ারবেসকে শত্রুর নজর থেকে বাঁচাতে তাই কারাকোরাম পাসের কাছেই ভীষ্ম টি৯০ ট্যাঙ্করের স্কোয়াড্রন মোতায়েন করল ভারতীয় সেনা।
আকসাই চিনে ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন বেজিংয়ের
জানা গিয়েছে আকসাই চিন এলাকায় পিএলএ-র তরফে ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। আর সেই হুমকি রুখতেই ভীষ্ম টি৯০ ট্যাঙ্কের এর একটি স্কোড্রন, অর্থাৎ ১২টি ট্যাঙ্ক সেখানকার সীমান্ত রক্ষার লক্ষ্যে মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয় সেনা। এছাড়া ৪০০০ জন সৈনিকের একটি আস্ত ব্রিগেডও সেখানে ডিবিওতে মোতায়েন করেছে ভারত।
লাদাখের ফরোয়ার্ড বেসে তৈরি ভারত
দারবুক-শায়ক-ডিবিও রোডের মাঝে থাকা অনেক ব্রিজই ৪৬ টন ওজনের ভীষ্ম ট্যাঙ্কের ভআর সহ্য করতে পারবে না, তাই ১৫ জুনের সংঘর্ষের পর গালওয়ানে ট্যাঙ্ক পাঠাতে সেনা বিশেষ সরঞ্জামের ব্যবস্থা করে নদী পথে সেগুলিকে ফরোয়ার্ড বেসে পাঠিয়েছিল। এর আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং লাদাখে সেনার ফরোয়ার্ড বেসে গেলে তাঁর সামনে এই ভীষ্ম ট্যাঙ্কের স্কোয়াড্রন যুদ্ধ মহড়া দেখিয়েছিল।
প্যাংগংয়ে অনড় অবস্থানে চিন
হটস্প্রিং থেকে সরে গেলেও নাছোড়বান্দা চিন এখনও অবস্থান করছে প্যাংগংয়ে। লাদাখে ভারত-চিন উত্তেজনা কমার কোনও নাম নেই। যেই প্যাংগং সো নিয়ে এত বিতর্ক, সেখানে চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৫ এ ফিরে এসেছিল, তবে তারা এখনও ফিঙ্গার ৪-এর রিজলাইন দখল করে রয়েছে। চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৪ থেকে আঙুলের ৮-এর মধ্যে ৮-কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে তাদের তৈরি কাঠামোগুলিকেই এলএসি বলে দাবি করে যাচ্ছে এখনও।
চিনা সেনার আস্ফালান
এরই মধ্যে জানা গিয়েছে যে লাদাখের খুব কাছেই চিন আরও ৫০০০০ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। এই আবহেই এবার ভারতীয় নৌসেনা উত্তেরের বেসগুলিতে মিগ ২৯ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করল। এছাড়া উত্তর লাদাখে ভারত পি৮আই এয়ারক্রাফ্ট মোতায়েন করেছে। এই যুদ্ধবিমানগুলি সাবমেরিন প্রতিহত করতে সমর্থ।
তিন ডিভিশন সেনা মোতায়েন ভারতের
জানা গিয়েছে লাদাখে আরও অতিরিক্ত তিন ডিভিশন সেনা মোতায়েন করবে ভারত। যেখানে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া চলছিল, ঠিক তখনই সেনার এই সিদ্ধান্ত খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। চিনের তিন দফায় সেনা সরানোর প্রক্রিয়ার উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ভারত। কোনও ভাবে যদি চিন সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে তাহলে ভারতও থমকে যাবে। সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি যাতে কোনও ভাবে লঙ্ঘন না করা হয় সেদিকে নজর রাখছে ভারতীয় সেনা। এর জন্য দিনের পাশাপাশি রাতেও বায়ুসেনার বিমান এবং চিনুক ও অ্যাপাচে হেলিকপ্টর টহল দিচ্ছে লাদাখের সীমান্ত জুড়ে।
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে প্যাংগং
যেই প্যাংগং সো নিয়ে এত বিতর্ক, সেখানে চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৫ এ ফিরে এসেছিল, তবে তারা এখনও ফিঙ্গার ৪-এর রিজলাইন দখল করে রয়েছে। চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৪ থেকে আঙুলের ৮-এর মধ্যে ৮-কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে তাদের তৈরি কাঠামোগুলিকেই এলএসি বলে দাবি করে যাচ্ছে এখনও।
লাদাখ সীমান্তে টহলদারী নিয়ে বিবাদ
টহলদারী সীমান্ত নিয়ে বরাবরই ভারত ও চিনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ছিল। ভারত বিশ্বাস করে 'ফিঙ্গার ১' থেকে 'ফিঙ্গার ৮' পর্যন্ত টহল দেওয়ার অধিকার রয়েছে তাদের এবং চিন মনে করে যে 'ফিঙ্গার ৮' থেকে 'ফিঙ্গার ৪' পর্যন্ত টহল দেওয়ার অধিকার রয়েছে তাদেরই। ১৫ জুন, এই 'ফিঙ্গার ৪' এলাকাতেই উভয় পক্ষের সেনার মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ বাঁধে। পরে উভয় পক্ষের সীমানা যেখানে কয়েক হাজার ভারতীয় সৈন্যকে কাঁটাতারের সাথে জড়িত লাঠির মতো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছিল। 'ফিঙ্গার ৪'-এ এই জন্যেই উল্লেখযোগ্য হারে সেনার সংখ্যা বাড়িয়েছিল চিন যাতে ভারতীয় সেনারা আর 'ফিঙ্গার ৮' এর দিক দিয়ে টহল দেওয়ার সুযোগ না পায়।
সীমান্ত বিবাদ মেটাতে ফের বৈঠক
এদিকে জানা গিয়েছে গত সপ্তাহের শুক্রবার দুই পক্ষের কূটনৈতিকরা এই বিষয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। জানা গিয়েছে সেই বৈঠকে ভারত-চিন সীমান্ত বরাবর, লাদাখ সেক্টরে যে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা প্রশমিত করতে দু'পক্ষের মধ্যে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়। যত দ্রুত সম্ভব সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া দরকার বলে উভয় দেশই মত প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি উভয়পক্ষই সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বাড়তি সেনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়েও সহমত পোষণ করে। তবে চিনের তরফে এই প্রতিশ্রুতি এর আগেও দেওয়া হয়েছিল। তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি।
'ভূমি পূজোয় রঞ্জন গগৈ আমন্ত্রণ না পেলে বড় অবিচার হবে’, রাম মন্দির ইস্যুতে খোঁচা অধীরের