পলাতক অবস্থায় অবসর বিচারপতি! কলকাতা হাইকোর্টের ইতিহাসে কস্মিনকালেও এমন ঘটনা ঘটেনি
সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশের পর থেকেই ফেরার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সিএস কারনান। সোমবারই অবসর নিলেন তিনি। কিন্তু সশরীরে উপস্থিত না থেকেও কীভাবে অবসর নিলেন তিনি।
ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে প্রথমবার। গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে ফেরার অবস্থাতেই অবসর নিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সি এস কারনান। গত ৯ই মে আদালত অবমাননার দায়ে তাঁকে ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় সুপ্রিমকোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের পর থেকেই বেপাত্তা কারনান।
তিনি চেন্নাইয়ের বাড়িতে রয়েছেন খবর পেয়ে সেখান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করতে যায় কলকাতা পুলিশের একটি দল। কিন্তু, চেন্নাইয়েও কারনানের কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। এরপর থেকে কলকাতা পুলিশের একটি দল অবশ্য সেখানেই মোতায়েন রয়েছে। এই অবস্থায় সোমবারই তাঁর অবসরগ্রহণ। কিন্তু তিনি উপস্থিত না থাকায় ফেরার অবস্থাতেই তাঁর কার্যকাল শেষ হল। ফলে তাঁকে ফেয়ারওয়েল যেমন দেওয়া হল না, তেমনই কারনানও বিদায়ী ভাষণ দেওয়ার কোনও সুযোগ পেলেন না।
গত বছরই মাদ্রাজ হাইকোর্ট থেকে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন সিএস কারনান। কিন্তু নভেম্বর মাসে সহ বিচারপতিদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তোলেন তিনি। এরপর চলতি বছর জানুয়ারি মাসে সুপ্রিমকোর্টের কুড়িজন বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন কারনান।
এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়। কিন্তু সুপ্রিমকোর্টে হাজিরা দেওয়া দুরের কথা, গত মে মাসে তিনি সুপ্রিমকোর্টেরই সাতজন বিচারপতিকে কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। এরপরই তাঁর মানসিক সুস্থতা পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু সেখানেও বাধ সাধেন তিনি। এরপরই বিচারপতি কারনানকে ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় সুপ্রিমকোর্ট। এমনকি কারনানের কোনও বক্তব্য সম্প্রচার বা প্রকাশ করার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করে সর্বোচ্চ আদালত।
ফলে সিএস কারনানই দেশের প্রথম বিচারপতি যাঁকে পদে থাকা অবস্থাতেই কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং ফেরার থাকায় ও সুপ্রিমকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কোনও বিদায়ী ভাষণও দিতে পারছেন না।