বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে আদালতও দ্বিধাবিভক্ত, রায়ে কী জানাল দিল্লি হাইকোর্ট
বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে আদালতও দ্বিধাবিভক্ত, রায়ে কী জানাল দিল্লি হাইকোর্ট
দিল্লি হাইকোর্ট বুধবার ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারার ব্যতিক্রম ২-এর বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে দ্বিধাবিভক্ত রায় দিয়েছে। যে রায়ে বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে। স্ত্রীর সঙ্গে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্কের জন্য ধর্ষণের অপরাধ থেকে স্বামীকে অব্যাহতি দেওয়ার বিধানকে অসাংবিধানিক বলে বাতিল করে দেন বিচারপতি রাজীব শাকধের।
বিচারপতি সি হরি শঙ্কর অবশ্য তাঁর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই বিষয়টি ব্যতিক্রমী, বিচারের উপর ভিত্তি করে বলা যায় এটা অসাংবিধানিক নয়। তাঁদের নিজ নিজ রায় ঘোষণার পর উভয় বিচারকই আইনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সম্পর্কিত বিষয় হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার অনুমতি দেন।
উল্লেখ্য, মাত্র একদিন আগে সুপ্রিম কোর্ট কর্ণাটক হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে একটি আবেদন পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যাতে বলা হয়েছিল যে একজন মহিলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন একটি নৃশংস কাজ। যদি তা স্বামীর দ্বারা হয়, তাকে ধর্ষণ হিসাবে অভিহিত করা যায় না।
২০২২-এর ২৩ মার্চের রায়ে কর্ণাটক হাইকোর্টের বিচারকের সিঙ্গল বেঞ্চ বলেছিল, আইপিসির ৩৭৫ ধারার অধীনে স্বামীকে অব্যাহতি দেওয়া ব্যতিক্রমী হতে পারে না। রিট পিটিশনের উপর দিল্লি হাইকোর্ট ২০ দিনের ম্যারাথন শুনানির পরে ফেব্রুয়ারিতে রায় সংরক্ষিত রেখেছিল। যদিও কেন্দ্র, রাজ্য এবং জাতীয় কমিশনের পরামর্শ না করা পর্যন্ত একটি স্পষ্ট অবস্থান নিতে অস্বীকার করেছিল।
'দলিত দেখলেই ৫০ ঘা জুতো, ৫০০০ টাকা জরিমানা, ঘোষণায় উত্তেজনা উত্তরপ্রদেশের গ্রামে
এখানে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ বলে গণ্য করার জন্য আইনজীবী, কর্মী, রাজনীতিবিদ এবং নাগরিকদের দাবি বিচার করে দেখা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার মনে করে, এটি ঘনিষ্ঠ পারিবারিক সম্পর্ক-সহ সামাজিক-আইনকে যেন প্রভাবিত না করে। এবং কঠোরভাবে আইনি দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়ক হয়। কেন্দ্রীয় সরকার আরও বলেছে, বিষয়টি মূলত একটি আইনি কাজ। এই বিষয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির প্রতিক্রিয়াও জরুরি।
এনজিও রিট ফাউন্ডেশন এবং অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক উইমেনস অ্যাসোসিয়েশন এবং খুসবু সাইফি এবং ফারহান তাদের আবেদনে দাবি করেছে, বৈবাহিক অবস্থা নির্বিশেষে, প্রতিটি মহিলার অ-সম্মতিমূলক যৌন ক্রিয়ায় 'না' বলার অধিকার রয়েছে। মেনস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এবং এনজিও 'হৃদয়' এই আবেদনের বিরোধিতা করে বলেছে, সংসদের এই বিষয়ে আলোচনা করা উচিত।
২০১৭ সালে এক নাবালিকা স্ত্রীকে যৌন নিপীড়নকে ধর্ষণ বলে গণ্য করা হয়নিয ৩৭৫ ধারা প্রয়োগ করা হয়নি ব্যতিক্রমী হিসেবে। তখন বৈবাহিক ধর্ষণের বিষয়ে কোনও মতামত প্রকাশ করা হয়নি। যাইহোক ২০১২ সালে দিল্লি গণধর্ষণ মামলার পরে গঠিত বিচারপতি জে এস ভার্মা কমিটি বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধীকরণের সুপারিশ করেছিল। তারা এই সুপারিশ করেছিল যেহেতু বিবাহিত অবস্থা যৌন ক্রিয়াকলাপে স্বয়ংক্রিয় সম্মতি দেয় না।