For Quick Alerts
For Daily Alerts
'আইএসআইয়ের টাকায় ভারতে আসি', সাক্ষ্যের শুরুতেই উল্লেখ হেডলির
মুম্বই, ১১ ফেব্রুয়ারি : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও এক অজ্ঞাত জেল থেকে ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার বিষয়ে রাজসাক্ষ্য দিচ্ছে পাক বংশোদ্ভূত মার্কিন সন্ত্রাসবাদী ডেভিড হেডলি। প্রথম দুই দিনের সাক্ষ্যে পাক সরকারের সরাসরি সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া সহ নানা বিস্ফোরক তথ্য মুম্বই আদালতকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জানিয়েছে হেডলি। [মুম্বই হামলা : ভিডিও কনফারেন্সে ডেভিড হেডলির প্রথম দিনের বয়ান]
কীভাবে লস্কর-ই-তৈবা, জঈশ-ই-মহম্মদরে মতো জঙ্গি সংগঠনগুলি পাক সেনা ও আইএসআই-এর সরকারি মদতে ভারত বিরোধী জঙ্গি কার্যকলাপ চালাচ্ছে তা তুলে ধরেছে হেডলি। এদিন সাক্ষ্যের চতুর্থ দিনে আর কী বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনে হেডলি তা জেনে নেওয়া যাক একনজরে। [মুম্বই হামলা : দ্বিতীয় দিনে যে বিস্ফোরক সাক্ষ্য দিল হেডলি]
- তৃতীয় দিনে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে বন্ধ থাকার পরে চতুর্থদিন ফের একবার শুরু হল ডেভিড হেডলির সাক্ষ্যগ্রহণ।
- মুম্বই আসার আগে আইএসআইয়ের মেজর ইকবাল আমায় ২৫ হাজার মার্কিন ডলার দিয়েছিল। মুম্বই ঘুরে পুরো বিষয়টি নখদর্পনে করার জন্যই আমায় এই টাকা দেওয়া হয়েছিল।
- মুম্বইয়ের তারদেও এসি মার্কেট এলাকায় ২০০৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আমি অ্যাকাউন্ট খুলি। ২০০৬ সালের ১১ অক্টোবর সেই অ্যাকাউন্টে ৬৬, ৫০৫ টাকা তাওয়াহুর রানা আমায় ঢুকিয়ে দেয়।
- ৭ নভেম্বর রানা আমায় ফের ৫০০ ডলার দেয়। ৪ ডিসেম্বর আমায় এক হাজার ডলার দেওয়া হয়। এর মাঝে ৩০ নভেম্বর আমায় ১৭ হাজার ৬৩৬ টাকা দেওয়া হয়।হামলার আগেই একবার মুম্বই ঘুরে যায় রানা। বিপদ হতে পারে বলে আমিই রানাকে ফিরে যেতে বলি। ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্কের নরিম্যান শাখা থেকে রানার কাছ থেকে টাকা নিই আমি।
- আমার পাকিস্তানি হ্যান্ডলার সাজিদ মীর আমায় ৪০ হাজার পাকিস্তানি টাকা দেয়।
- মুম্বইয়ের তারদেও এসি মার্কেট এলাকায় আমার অফিস ছিল। আমায় মেজর ইকবাল জাল ভারতীয় টাকা সরবরাহ করত। আমায় মেজর আবদুল রহমান পাশা ১৮ হাজার টাকা দিয়েছিল।
- ১ নভেম্বর ২০০৬ সালে আমার অফিসের রেজিস্ট্রেশন হয়। ১৬ জুলাই ২০০৮ অর্থাৎ হামলার মাত্র চারমাস আগে তা পুনর্নবীকরণ করা হয়।তারদেও-এর অফিস অভিবাসন সংক্রান্ত কাজকর্ম করার অজুহাতে খোলা হয়েছিল। যদিও এটা পুরোটাই 'আইওয়াশ' ছিল।
- হামলার ২ মাস পরে অর্থাৎ ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে আমি অফিসটি বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলাম। মেজর ইকবালও আমায় সঙ্গে দেয়। তবে রানা এর বিরোধিতা করেছিল।
- মুম্বইয়ে আমার সবরকম ব্যবস্থা রানাই করে দিয়েছিল। রানা পাকিস্তানি সেনায় চিকিৎসকের কাজ করত। পরে তা ছেড়ে বেরিয়ে আসে। আমি মুম্বইয়ে ব্যবসা করার জন্য একটি বিজনেস অ্যাকাউন্ট খোলার আবেদন জানাই। যদিও আরবিআই তা নাকচ করে দেয়।
- ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য আমি ২০০৭ সালের ১২ ও ১৮ সেপ্টেম্বর এবং ৩০ অক্টোবর রিলায়েন্স ওয়েব ওয়ার্ল্ডে যাই। সেখানে আমাকে এক জায়গায় সই-ও করতে হয়েছিল।
- সেখান থেকে আমি তাওয়াহুর রানা, সাজিদ মীর ও মেজর ইকবালকে পাকিস্তানে মেল পাঠিয়েছি। সেখান থেকে আমি আমার মেল চেক-ও করেছি।
- সেই সময়ে মুম্বইয়ে আমি পাসপোর্ট দিয়ে তিনটি মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করি।
- গুজরাতে ভুয়ো সংঘর্ষে মৃত ইশরত জাহান লস্কর-ই-তৈবার আত্মঘাতী জঙ্গি ছিল বলে বিস্ফোরক দাবি করেছে ডেভিড হেডলি।
- পুলিশ চেকপোস্টে হামলার ঘটনায় দায়ী ছিল লস্করের মহিলা শাখার জঙ্গি ইশরত জাহান।
- সাজিদ মীর দায়িত্ব নেওয়ার আগে আমাদের দলের দায়িত্ব ছিল মুজাম্মিল ভাটের কাঁধে। আবু দুজাতা আমায় মুজাম্মিলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল।
- লস্কর-ই-তৈবার মহিলা শাখার দায়িত্ব ছিল আবু মাজহারের কাঁধে।
- বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বদলা নিতে মুজাম্মিল ভাট গুজরাতের অক্ষরধাম মন্দিরে হামলার ছক কষে। মহারাষ্ট্র ও গুজরাতের অন্যান্য জায়গাতেও হামলার ছক ছিল।
- জাকিউর রহমান লখভির পরে লস্করের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড ছিল আবু খাফা। লাহোরে আমার সঙ্গে আবু খাফার দেখা হয়েছিল। সেখানে লখভি ও হাফিজ সঈদও হাজির ছিল।
- মুম্বই হামলার সময়ে করাচির কন্ট্রোল রুমে সাজিদ মীর ও আবু খাফা জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। এই দুজনই জঙ্গিদের গাইড করার পিছনে মূল ছিল। সেজন্য কন্ট্রোল রুম তৈরি হয়েছিল।
- ২৬/১১-র হামলার পরে আমি ভীষণ খুশি হয়েছিলাম।
- লস্কর-ই-তৈবার নৌ জঙ্গি বাহিনী রয়েছে। তার প্রধান মহম্মদ ইয়াকুব। ২০০৩ সালে আমার ইয়াকুবের সঙ্গে দেখা হয়। মুম্বই হামলার আগে জলপথে কোন জায়গা দিয়ে হামলা চালানো হবে সেব্যাপারে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হয়।
- লস্করকে আর্থিক সাহায্য করে লাহোরের এক ব্যবসায়ী, যার নাম আশরফ।
- সাক্ষ্যের মাঝে ছবি দেখানো হলে ইলিয়াস কাশ্মীরিকে চিহ্নিত করে ডেভিড হেডলি। আল কায়েদার লোক বলে কাশ্মীরিকে উল্লেখ করে সে। আবদুল আজিজকেও মুম্বই হামলার অন্যতম বলে চিহ্নিত করে সে। এরপরে ফের বলতে শুরু করে ডেভিড হেডলি।
- মোট চারবার বোটে চেপে জলপথে সমুদ্র ঘুরে দেখি আমি। কোন পথে ঢুকলে সবচেয়ে সুবিধা হবে সেটা দেখাই ছিল আমার লক্ষ্য।
- এদিন এই পর্যন্তই সাক্ষ্য দেয় ডেভিড হেডলি। পরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে সরকারি কৌঁসুলি উজ্জ্বল নিকম জানান, ইশরত জাহানের বিষয়টি নিয়ে হেডলি নিজে থেকেই জানিয়েছে।
- জঙ্গি হামলা সংক্রান্ত প্রশ্ন করতে গিয়ে মহিলা জঙ্গির প্রসঙ্গ ওঠে। সেসময়ে হেডলি জানায় সে নামটি ভুলে গিয়েছে। তখন উজ্জ্বল নিকম তিনটি নাম তার সামনে রাখেন- নুরজাহান বেগম, মুমতাজ বেগম ও ইশরত জাহান। তখনই হেডলি জানায় লস্করের সদস্য মহিলা জঙ্গির নাম ছিল ইশরত জাহান।
Comments
david headley mumbai attack terror attack pakistan mumbai united states of america ডেভিড হেডলি মুম্বই হামলা জঙ্গি হামলা পাকিস্তান মুম্বই ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
English summary
David Headley deposition (Day 4)