স্বপ্ন জয়ের কারিগর, কেরলের নাম না জানা কুলির ছেলেই এখন ৩৪০ কোটির কোম্পানির মালিক
স্বপ্ন জয়ের কারিগর, কেরলের নাম না জানা কুলির ছেলেই এখন ৩৪০ কোটির কোম্পানির মালিক
জীবনে যুদ্ধে স্বীকৃতি হোক বা অর্থ, লড়াই আর অধ্যাবসায় যে শেষ কথা বলে তার প্রমাণ আমরা রোজই পাই। আর এই লড়াইয়ের ময়াদানেই কিছু কিছু যুদ্ধের গল্প নজর কাড়ে সকলের। কেরলের মোস্তফা পিসি সেরকণ এক মানুষ। ছোটবেলায় স্কুল থেকে ফেরার পর এই মুস্তাফাই একসময় কুলির কাজ করতেন। স্কুল ব্যাগ খুলে পিঠে তুলে নিতেন ভারী কাঠের বাক্স। সেই তরুণ তুর্কিই এখন ৩৪০ কোটি টাকার প্রতিষ্ঠানের মালিক।
স্বপ্ন জয়ের কারিগর
শুনতে খানিক অবাক লাগলেও এই স্বপ্নই সত্যি করে দেখিয়েছেন মুস্তাফা। এদিকে বাবা যা বেতন পেতেন তাতে সংসার চলত না। অনেক সময়ই রাতে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তে হত গোটা পরিবারকে। আর সেই কারণেই স্কুল থেকে ফেরার পথে বাবার সঙ্গে কুলির কাজ করতে বাধ্য হয়েছিলেন মুস্তাফা। বাড়তি উপার্জনের আশায় বাবার কাজে হাত লাগাতো বাড়ির অন্যরাও। কাজ করেছেন কফির বাগানেও। এদিকে আর্থিক অনটনকে সঙ্গী করে চলার জেরে ছোটবেলায় পড়াশোনাতেও বিশেষ সাফল্য পাননি মুস্তাফা। ফেলও করেন ক্লাস সিক্সে।
শুরু হয় হার না মান লড়াইয়ের গল্প
যদিও সেই ব্যর্থতা থেকেই শুরু হার না মানা লড়াইয়ের গল্প। এমনকী পড়াশোনায় এতটাই মনোনিবেশ করেন যে মাধ্যমিক পরীক্ষায় স্কুলে প্রথম স্থানও অধিকার করেন তিনি।আর ওই সাফল্যই পরবর্তীতে জীবনে চলার পথে ব্যাপক অনুপ্রেরণা জোগায় তাকে। পরবর্তীতে দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করার পর এনআইটিতে পড়ার সুযোগও পান তিনি।চাকরি পান একটি বহু জাতিক সংস্থা।
এসেছে বিদেশযাত্রার সুযোগ
এমনকী মুস্তাফার জীবনে এসেছিল বিদেশ যাত্রার সুযোগও। কাজ করেন ইউরোপ ও মধ্য প্রাচ্যের একাধিক বহুজাতিক সংস্থাতেও। কিন্তু তারপরেও তার মন পড়েছিল বাড়িতেই। তারপরই মাথায় আসে ব্যবসার কথা। এমনকী ব্যবসার পাশাপাশি নিজ দেশবাসীর জন্যও কিছু একটা করতে চাইছিলেন তিনি। ২০০৫ সালে পাঁচশো বর্গফুট একটি ঘর ভাড়া নিয়ে শুরু প্রথম পথ চলা।
১০ বছরেই ১০০ কোটির আয়
বর্তমানে এই মোস্তফাই আইডি ফ্রেশ ফুড নামে একটি খাবার কোম্পানির মালিক। যারা মূলত ইডলি, দোসা বানায়। এদিকে শুরু সময় শহরের মানুষের মধ্যে শুধুমাত্র ব্রেকফাস্টেই ইডলি-ধোসা বিক্রি করত মুস্তাফার ছোট্ট দোকান।শুরুর দিকে এলাকায় দিনে ৫০ প্যাকেট মতো খাবার বিক্র হত। বর্তমানে গোটা ভারতে কয়েক হাজার প্যাকেট ইডলি-ধোসা বিক্রি করে। ১০ বছরের মধ্যে ১০০ কোটির আয় করে এই সংস্থা। শেষ অর্থ বছরে আইডি ফ্রেশ ফুডের হাত ধরে আয় হয়েছে ২৯৪ কোটি টাকা। যা বর্তমান অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ৩৪০ কোটি।