
বেঙ্গালুরুতে কুখ্যাত অপরাধীর রক্তদান শিবিরে বিজেপির সাংসদ, বিধায়করা! অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির
বেঙ্গালুরুর কুখ্যাত অপরাধী রক্তদান শিবিরে শহরের বিজেপি নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। একসময় বেঙ্গালুরুতে সব থেকে ভয়ঙ্কর খুনি ছিলেন সুনীল। মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে খুন করতেন। তাঁর করা রক্তদান শিবিরে একাধিক বিজেপি বিধায়কদের উপস্থিতি গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়েছে।

রবিবার চামরাজপেটের বিএস ভেঙ্কটারাম কলা ভবনে আয়োজিত রক্তদান শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সাংসদ পিসি মোহন, এলএস তেজস্বী সূর্য, চিকপেটের বিধায়ক উদয় গরুড়চার এবং বেঙ্গালুরু দক্ষিণ বিজেপির সভাপতি এনআর রমেশ। বিতর্ক শুরু হতেই সুনীল জানিয়েছেন, তিনি আর অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকেন না। তিনি বর্তমানে সমাজসেবায় মননিবেশ করেছেন। পাশাপাশি সুনীল জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনি রাজনীতিতে আসার কথা ভাবছেন। রক্তদান শিবিরে সুনীলকে গেরুয়া রঙের একটি উত্তরীয় পরতে দেখা গিয়েছে। এই ঘটনার পরেই বিতর্ক আরও চরম আকার ধারণ করেছে।
এই ঘটনায় কর্ণাটকের কংগ্রেস ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন। ঘটনায় কংগ্রেস কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগা জ্ঞানেন্দ্রকে নিন্দা করেছে। কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়েছ, বিজেপির সঙ্গে অপরাধীদের সরাসরি যোগ রয়েছে। তাহলে কী করে অপরাধ কমবে রাজ্যে। আপনারা এরকম একজন কুখ্যাত গুণ্ডাকে ধরতে পারছেন না বরং তাঁর সঙ্গে রক্তদান শিবিরে যাচ্ছেন। কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, যে অপরাধীকে ক্রাইম ব্রাঞ্চ ধরতে পারছে না, বিজেপি নেতারা কীভাবে তার সঙ্গে অনুষ্ঠান করলেন। নাকি বিজেপি ক্রাইম ব্রাঞ্চের ক্ষমতা সীমিত করে রেখেছে।
বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার সিএইচ প্রতাপ রেড্ডি বলেছেন যে তিনি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) এসডি শরনাপ্পার কাছে এই বিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। শরনাপ্পা জানিয়েছে, ক্রাইম ব্রাঞ্চ সুনীলের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না। কারণ সুনীলের বিরুদ্ধে নতুন কোনও অভিযোগ নেই। শরনাপ্পা জানিয়েছেন, সুনীলের বিরুদ্ধে শেষ মামলাটি ২০১৭ সালে নথিভুক্ত হয়েছিল। একবছর পর সুনীল জামিন পেয়ে যান। সুনীলের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ ছিল, তাতে হয় তিনি সাজা ভোগ করেছেন, না হলে বেকসুর খালাস পেয়ে গিয়েছেন।
অন্যদিকে, বেঙ্গালুরু পুলিশের প্রবীণ আধিকারিক বলেন, ডক্টর বিআর আম্বেদকর লেবারার্স অ্যান্ড গুডস অটো ড্রাইভারস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। এই রক্তদান শিবির ঘিরে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার কথা তাঁরা অস্বীকার করেছেন।
অন্যদিকে, বিজেপি সাংসদ মোহন জানিয়েছেন, এই রক্তদান শিবিরে যোগদান করে তিনি দুঃখিত। তিনি বলেন, 'আম্বেদকর অ্যাসোসিয়েশন, অটোরিক্সা এবং টেম্পো চালকদের দল আমাকে রক্তদান শিবিরে আমন্ত্রণ জানায়, যেটি তারা বলেছিল যে রাষ্ট্রোত্থানের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমি তাদের জিজ্ঞাসা করলাম আর কে আসছে। তারা বলেছে যে তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে সুধাকর, তেজস্বী সূর্য ও অন্যান্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।' তিনি বলেন, 'আমি একটি রক্তদান শিবির ভেবে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে বুঝতে পারি, এখানে আসা আমাদের ভুল হয়ে গিয়েছে।'