ঝড়ের দাপট! ৯৭ জনের প্রাণ গেল এই তিন রাজ্যে, আহত আরও কয়েকশ'
বুধবার তীব্র ধূলোর ঝড় আছরে পড়ে পশ্চিম ও উত্তর ভারতে। উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান ও উত্তরাখণ্ডে অন্তত ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন আরও কয়েকশ'।
বুধবার তীব্র ধূলোর ঝড় আছরে পড়ে পশ্চিম ও উত্তর ভারতে। উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান ও উত্তরাখণ্ডে অন্তত ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন আরও কয়েকশ'। ঝড়ের ধ্বংসলীলা দেখা গিয়েছে পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশেও। কোথাও গাছ উপরে গিয়েছে, কোথাও বা দীর্ঘ সময় ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
[আরও পড়ুন: ধুলি ঝড়ে বিধ্বস্ত রাজস্থান, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭০ জন, আহত শতাধিক]
বুধবার রাতে উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাংশের চার জেলা থেকে অন্তত ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণ গিয়েছে আগ্রা শহরে। নিহত হয়েছেন। আগ্রায় কমপক্ষে ৪৩ জন নিহত এবং ৩৫ জন আহত হয়েছে। রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তারা জানান, এছাড়া তিনজনের মৃত্যুর খবর এসেছে বিজনর থেকে। কানপুরের তিনজন, সাহারানপুরের দুজন বেরিলিতেও একজন মারা গিয়েছেন। আগ্রার গ্রামাঞ্চলে বেশিরভাগ মৃত্যুই হয়েছে দেওয়াল চাপা পড়ে। মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথ চার জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দ্রুত ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজস্থানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে ভরতপুর। এখানে ১৬ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গিয়েছে। ভরতপুর বিভাগীয় কমিশনার সুবীর কুমার বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের ঝড়ে নিহতদের পরিবারগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। '
পাশের দৌলপুর জেলায় দুজন মানুষ মারা গেছেন। আলওয়ারে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। এখানেও প্রায় ১০০ টির মতো গাছ পড়ে যায়, যার অনেকগুলিই পড়েছে কোনও গাড়ির ওপর, নাহলে দোকানের ওপর। ছিঁড়ে যায় বিদ্যুতের তারও। বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে যাতে মৃত্যুর মিছিল না বাড়ে তার জন্য বিতরণকারী সংস্থার পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। জেলার কালেক্টর রাজিব বিশাল জানান, 'আলওয়ারের সরকারি হাসপাতালে ট্রমা ওয়ার্ডে ২0 জন আহত ব্যক্তিকে ভর্তি করা হয়েছে।' বৃহস্পতিবার আলওয়ারের সমস্ত স্কুল বন্ধ রয়েছে।
ঝুনঝুনু ও বিকানীরে একজন করে মানুষের প্রাণ গিয়েছে। রাজস্থানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন বেশিরভাগ মৃত্যুই হয়েছে ঝড়ের দাপটে বাড়ি ধসে পড়ে। ঝড়ের ধ্বংসলীলায় শ'য়ে শ'য়ে গাছ পড়ে গেছে, এবং অনেক জায়গায় উপরে গেছে বিদ্যুতের খুঁটি।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে গভীর শোক প্রকাশ করেন। ট্যুইট করে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মন্ত্রী এবং কর্মকর্তাদের ত্রাণ তৎপরতা শুরু করার জন্য এবং দরকারি পরিষেবাগুলি দ্রুত চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা, পরিস্থিতির মোকাবিলায় আমরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলে কাজ করছি।'
উত্তরাখণ্ডের দুর্যোগ মোকাবিলা ও ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমএমসি) জানিয়েছে, বুধবার সারারাত ওই পাহাড়ি রাজ্যে তীব্র ঝড়বৃষ্টি এবং বজ্রপাত চলেছে। কুমায়ুনে কমপক্ষে দুই জন নিহত এবং অন্যান্য এলাকায় আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। হঠাৎ বৃষ্টিপাতে সাময়িক বন্ধ রয়েছে চর ধাম তীর্থযাত্রা। তবে, কর্মকর্তাদের দাবি, চামোলী ও উত্তরকাশীর রাস্তা থেকে ধ্বংসাবশেষ সাফ করা হয়েছে।
চামোলিতে বৃষ্টির জলে ভেসে এসেছে কয়েক টনের ধ্বংসাবশেষ। যা থেকে রটেছিল এই অংশে মাঘ ফাটা বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। তাঁরা বলেন, 'অতি বৃষ্টিপাত আর ধ্বংসাবশেষে বদ্রীনাথ হাইওয়েতে বেশ কিছু যানবাহন আটকে ছিল। হাইওয়ে এখন পরিষ্কার করা হয়েছে।
রাজধানী
দেরাদুনে
গাছ
পড়ে
তার
ছিড়ে
বন্ধ
হয়ে
গেছে
বিদ্যুত
সরবরাহ।
মুসৌরীর
জেলার
গ্রামগুলিও
আছে
অন্ধকারে।
নৈনিতাল,
হালদ্ওয়ানি
এবং
অন্যান্য
কয়েকটি
স্থানেও
বিদ্যুৎ
ও
জল
সরবরাহ
ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছে।
তবে আরও বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া দফতরের কর্মকর্তারা জানান। শিলং, উত্তরকাশি, রুদ্রপ্রয়াগ এবং পিথোরগড়ে আগামী 48 ঘণ্টার বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত ঝোড়ো আবহাওয়া চলবে। নতুন একটি পশ্চিমী ঝঙ্ঝা আসছে বলে সতর্ক করা হয়েছে উত্তরাখণ্ড আবহাওয়া কেন্দ্র।
মধ্য
প্রদেশের
ঝড়ের
নিহত
দুই
শিশু,
আহত
হয়েছেন
আরও
অন্তত
এক
ডজন
মানুষ।
ভিন্দ
জেলার
কল্যাণপুর
গ্রামে
ঝড়ের
সময়
ঘর
ভেঙ্গে
চাপা
পরে
মৃত্যু
হয়েছে
চার
বছরের
একটি
শিশুর।
তার
সঙ্গেই
আহত
হয়
দুইজন।
অপর
মৃত্যু
ঘটেছে
সাতনা
জেলার
উচেরা
গ্রামে।
ভিন্দ-এ
আরেকটি
ঘটনায়,
টিনের
চাল
ভেঙে
পড়ে
দুজন
আহত
হয়েছেন।
জোরালো
হাওয়ার
দাপটে
ভিন্দ,
মরেনা,
গোয়ালিয়র,
দাবরা
এবং
দাতিয়ায়
ব্যাহত
হয়
বিদ্যুৎ
সরবরাহ,
এবং
৫০টিরও
বেশি
গাছ
পড়েছে।
বাদ যায়নি রাজধানীও। বুধবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ বৃষ্টি ও তীব্র ধুলোর ঝড়ের কবলে পড়ে নয়াদিল্লির বেশ কিছু অংশে ব্যাপক ট্র্যাফিক জ্যাম হয়।
পাশাপাশি,
দুটি
আন্তর্জাতিক
বিমানসহ
মোট
১৫
টি
উড়ান
বাতিল
করতে
হয়েছে
বলে
জানিয়েছে
দিল্লি
বিমানবন্দর
কর্তৃপক্ষ।
ঘণ্টায়
৫৯
কিলোমিটার
বেগে
সন্ধ্যা
সাড়ে
ছয়টা
নাগাদ
দিল্লি
শহরে
আছরে
পড়েছিল
ওই
ঘূর্ণিঝড়।
সাফদারজং
পর্যবেক্ষণ
কেন্দ্রের
পরিসংখ্যান
অনুয়ায়ী
১৩.৪
মিমি
বৃষ্টি
হয়েছে
দিল্লিতে।
বুধবার পঞ্জাব ও হরিয়ানাতেও ব্যাহত হয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। পাতিয়ালায় বজ্রাঘাতে দুইজন মারা যান। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে সব জায়গাতেই।