অশান্ত কাশ্মীর! সেনার গুলিতে ৩ সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বনধের ডাক
হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানির দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকীতে উত্তাল কাশ্মীর। রবিবার সেখানে বনধ পালিত হচ্ছে।শনিবার সেনাবাহিনীর ওপর পাথর ছোড়ার পাল্টা হিসেবে গুলিতে মৃত্যু হয় এক কিশোরী-সহ ৩ সাধারণ নাগরিকের
হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানির দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকীতে উত্তাল কাশ্মীর। রবিবার সেখানে বনধ পালিত হচ্ছে। শনিবার সেনাবাহিনীর ওপর পাথর ছোড়ার পাল্টা হিসেবে গুলিতে মৃত্যু হয় এক কিশোরী-সহ ৩ সাধারণ নাগরিকের। যদিও এই ঘটনার পরেই সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছেন রাজ্যপাল এনএন ভোরা।
কাশ্মীর জুড়ে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে চলা তল্লাশি অভিযানের অঙ্গ হিসেবে কুলগাঁওয়ের রেডওয়ানিতে প্রবেশ করেছিল সেনাবাহিনী। অভিযোগ, সেই সময় সেই সময় সেনাবাহিনী বেশ কয়েকজন যুবককে মারধর করে। এই সময় ক্ষেপে যায় স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তায় নেমে গিয়ে সেনাবাহিনীর ওপর পাথর ছুঁড়তে শুরু করে তারা।
রেডওয়ানির স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আসরফ জানিয়েছেন, বেলা ১১.৩০ নাগাদ সেনাবাহিনী গ্রামে ঢুকে বেশ কয়েকজন যুবককে মারধর করে। সেই সময় গ্রামবাসীরা তাদের থামাতে চেষ্টা করে। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে স্লোগান তোলে। সেনাবাহিনীর দিকে পাথর ছোড়ে। সেই সময় সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের দিকে সরাসরি গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ। ঘটনায় আটজনের বেশি স্থানীয় বাসিন্দা আহত হন। পরে যাঁদের মধ্যে থেকে তিনজনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। সেনাবাহিনীর তরফ থেকে এই ঘটনা এড়ানো যেত বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।
যদিও স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীকে উত্তেজিত করেছিল স্থানীয়দের একটা অংশ।
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে দুজনের বয়স ২০ থেকে ২২-এর মধ্যে। আর মৃত কিশোরীর বয়স ১৬ বছর।
এদিকে, এই ঘটনার পরেই রাজ্যপাল এনএন ভোরা শ্রীনগরের রাজভবনে জরুরি বৈঠক ডাকেন। উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই ধরনের ঘটনায় সাধারণ বাসিন্দাদের মৃত্যু ঠেকাতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল।
২০ জুন থেকে রাজ্যপালের শাসনে রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর। বিজেপি মেহবুবা মুফতি সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার পরেই মেহবুবা পদত্যাগ করেন। তারপরের দিনই সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়।
সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, তাদের তরফে রেডওয়ানির ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর তরফে প্রবল পাথর ছোড়ার ঘটনার কথা জানানো হয়েছে। বলে হয়েছে, হিংসার আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ জনতা পাথর ছুড়তে ছুড়তে সেনাবাহিনীর খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল। পেট্রোল বোম ছাড়াও বাহিনীর ওপর পাথরও ছোড়া হয়। সেই ভিড়ের মধ্যে থেকে সেনাবাহিনীর ওপর গুলিও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকজন এই ঘটনায় আহত হয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তরফে রবিবার সেখানে বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে।