অসমে প্রথম সনাক্ত আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার, শূকর নিধন শুরু রাজ্যজুড়ে
করোনা ভাইরাস, মাঙ্কিপক্সের পর আতঙ্ক ছড়াচ্ছে আফ্রিকান সোয়াই ফিভার নিয়ে। সম্প্রতি অসমে শূকরদের মধ্যে এই আফ্রিকান সোয়াইন ফিভারের দেখা মিলেছে। এ রাজ্যের ডিব্রুগড়ের ভোগালি পাথার গ্রামে এই ভাইরাসের পজিটিভ ফল পাওয়া গিয়েছে। প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্ব ভারতে বেশ কয়েক মাস ধরেই শোনা যাচ্ছে আফ্রিকান সোয়াইন ফিভারের ঘটনা।
ডিব্রুগড় পশুপালন ও পশুচিকিৎসা সংক্রান্ত অফিসার ডাঃ হিমান্দু বিকাশ বড়ুয়া জানিয়েছেন উৎসকেন্দ্রের ১ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ইতিমধ্যেই শূকর নিধন শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমরা প্রথমে ১ কিলোমিটারের মতো এলাকাকে সংক্রমিত বলে ঘোষণা করেছি। নিয়ম অনুযায়ী আমরা সংক্রমিত এলাকায় শূকর নিধন ও মাটিতে পুঁতে দেওয়ার ব্যবস্থাও করেছি। গোটা এলাকাকে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে।' তবে বিশেষজ্ঞদের মতে আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার মানব শরীরে সংক্রমিত বা ছড়িয়ে পড়ার ভয় নেই, তবে শূকরদের মধ্যে ব্যাপক হারে ছড়াচ্ছে আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে প্রায় ৪০,১৫৯টি শূকরের মৃত্যু হয়েছে এই ফিভারে, এর পাশাপাশি ২০২০ সাল থেকে শুরু করে এ বছরের ১১ জুলাই পর্যন্ত ১,১৮১টি শূকর নিধন হয়েছে। অসম, মিজোরাম, সিকিম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা ও উত্তরাখণ্ড এবং বিহারে আফ্রিকান সোয়াই ফিভারের কেস রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। যেহেতু এই রোগ উচ্চ সংক্রমণযোগ্য এবং এর কোনও ভ্যাকসিন নেই তাই সরকার অসমবাসীকে এই সময় শূকরের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছে।
কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার অ্যাকশন প্ল্যানের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেটি অনুসরণ করবে সব জেলার পশুপালন বিভাগের অফিসাররা। সমস্ত ডায়গনিস্ট প্রতিষ্ঠানকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। জেলা পশুপালন কর্মকর্তাদের নজরদারি জোরদার করতে এবং শূকরের জ্বর বা জ্বরে মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। গত মাসে মিজোরামেও ভয়াবহ ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার। এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকেই ওই রাজ্যে এই ভাইরাসবাহিত রোগ দেখা দেয়। এর জেরে অন্তত পাঁচ হাজার শূকরের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। রাজ্য পশুপালন দফতরের তরফে জানানো হয়, অন্তত ৪৮৪৮ টি শূকরের মৃত্যু হয়েছে। পরে প্রায় ৪০৭৭টি শূকরকে নিধন করা হয়।