দেশভাগ থেকে চিন যুদ্ধ, কাশ্মীর ইস্যু থেকে ভোটাধিকার! স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন
স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন
রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, দীর্ঘ আন্দোলন, বছরের বছর ধরে নীপিড়ন, অকথ্য নির্যাতনের পর আজ থেকে ৭৫ বছর আগে স্বাধীনতার স্বাদ পায় ভারত। লেখা হয় দেশের প্রবাহমানতার কথা। এদিকে স্বাধীনতার পরেই দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বদলে পাশাপাশি রাজনৈতিক ও প্রাশাসনিক দিক দিয়েও একাধিক বদলের সাক্ষী থাকে গোটা দেশ। নির্বাচন প্রক্রিয়া হোক বা নতুন সংবিধানের হাত ধরে নয়া সামাজের পাঠ, সব কিছু দেশের প্রতিটা কোনায় আনে ব্যাপক পরিবর্তমান। তবে সব বদল বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য না হলেও ৭৫ বছরের স্বাধীনতার ইতিহাসে কিছু বদল অবশ্যই বিশেষ ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
একনজরে ভারত ভাগের ক্ষত
এদিকে ৩ জুন ১৯৪৭ সালে ভাইসরয় মাউন্টব্যাটেনের বৈঠকের পরেই কার্যত পরিস্কার হয়ে যায় ভারতের স্বাধীনতার পথ। ঠিক হয় ওই বছরেরই ১৫ আগস্ট চলে যাবে ব্রিটিশেরা। কিন্তু টানা হবে কাঁটাতারের বেড়াজাল। ভাগ হবে ভারত। অবশেষে গোটা দেশকে দ্বিখণ্ডিত করে টানা হয় সিরিল র্যাডক্লিফ লাইন। আত্মপ্রকাশ ঘটে মুসলিম অধ্যুষিত নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তানের।
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত
এদিকে ভারত ভাগের পর ব্রিটিশরা চলে গেলেও গোটা দেশে শুরু হয়ে যায় অশান্তি। দেশভাগের ক্ষত বুকে নিয়ে জায়গায় জায়গায় লেগে যায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা। হত্যা করা হয় জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীকে। এই প্রেক্ষাপটে ৩০শে জানুয়ারি ১৯৪৮ সালে ওই খবরের পর রেডিওতে শান্তিরক্ষা করার আহ্বান জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন ভারতের প্রথম প্রধান মন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। অন্যদিকে ভারত ভাগ হলেও কাশ্মীর নিয়ে শুরু হয় বিবাদ। মহারাজা হরি সিংয়ের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে শুরু যায় পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ। যে টানাপোড়েন আজও বয়ে নিয়ে চলেছে দুই দেশ।
স্বাধীনতার পরদিনই ভোটাধিকার পায় দেশের সমস্ত নাগরিক
অন্যদিকে স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর দিন থেকেই দেশের প্রতিটা নাগরিককে ভোটাধিকার দেয় ভারত সরকার। যদিও আমেরিকার ক্ষেত্রে চিত্রটা ছিল খানিক আলাদা। স্বাধীনতা প্রাপ্তির ১৫০ বছর পর সেখানের নাগরিকেরা পেয়েছিলেন ভোটাধিকার। ১৯৫১ সালে প্রথম সাধারণ নির্বাচন পরিচালনা করে গণতান্ত্রিক দেশ হওয়ার লক্ষে আরও একধাপ এগিয়ে যায় ভারত। ৪৮৯ টি আসনের মধ্যে ৩৬৪টিতে জেতে কংগ্রেস। দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন জওহরলাল নেহেরু।
ভারতেই রয়েছে বিশ্বের সর্বাধিক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি
অন্যদিকে ভারতই বিশ্বের সবথেকে বড় দেশ যেখানে সর্বাধিক সংখ্যক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি রয়েছে। তবে এই গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি সম্ভব হয়েছে মূলত পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থার জন্যই। অন্যদিকে আমাদের দেশেই রয়েছে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মহিলা রাজনীতিবিদ। অন্যদিকে বিশ্বের সমস্ত দেশের মধ্যে ভারতই হল প্রথম রাষ্ট্র যেখানে এখন মহিলা দেশের প্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন। রাজনৈতিক দল হিসাবে এই কৃতিত্ব রয়েছে কংগ্রেসের সেই সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধীরও।
সবুজ বিপ্লব থেকে চিন যুদ্ধ
অন্যদিকে স্বাধীনতার পর থেকে একাধিক সামাজিক ও রাজনৈতিক ওটাপড়ার সাক্ষী থেকেছে গোটা দেশ। হিন্দোল উঠেছে গোটা ভারতীয় সমাজজুড়েই। ১৯৬০ সালে সবুজ বিপ্লবের হাত ধরে গম এবং ডালের উচ্চ ফলনশীল জাতের বিকাশ ঘটে। সেই সঙ্গে খাদ্যশস্য উৎপাদনও বিশাল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছিল। অন্যদিকে কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বিবাদে জড়ানোর পাশাপাশি স্বাধীনতার পর থেকেই চিনের সঙ্গে সম্পর্ক বিশেষ ভালো থাকেনি ভারতের। ম্যাকমোহন লাইন এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ লাইন নিয়ে সীমান্ত বিবাদে জড়ায় দুই দেশ। ১৯৬২ সালে শুরু হয় চিন ভারত যুদ্ধ।