মাটির নীচে লুকিয়ে মহাশক্তি, অদ্ভুত মূর্তির দেখা মেলে এই মন্দিরে
মাটির নীচে লুকিয়ে মহাশক্তি, অদ্ভুত মূর্তির দেখা মেলে এই মন্দিরে
কালী আসলে মহাশক্তি। বিভিন্ন নাম আর লোকাচারের মাধ্যমে তার ভক্তরা উপাসনা করে থাকেন। হাওড়া জেলার বিভিন্ন অংশে তার ব্যতিক্রম হয়নি। হাওড়া জেলার নানা জায়গায় নানা নামে তিনি পূজিতা।
কোথায় আছে সে মন্দির?
হাওড়া শিবপুরের অপ্রকাশ মুখার্জি লেনের কালী মার কথাই বলা যায়। নাম, জহুরা কালী। অদ্ভুত সুন্দর নাম। মূর্তিটিও অদ্ভুত। পাশাপাশি তিনটি মূর্তির সহবস্থান। এই মূর্তি তৈরির ইতিহাস হিসেবে জানতে পারা যায় যে,- ১৯৭০ সালে স্বপ্নাদেশে মায়ের রূপ প্রত্যক্ষ করে মূর্তি নির্মাণ করে, পুরনো বটগাছের তলায় পূজা শুরু করেন জনৈক কালুদা।
কালীর মন্ত্র
ধ্যানমন্ত্রে পূজিতা- " ওঁ করালবদনাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভূজাম্।কালিকাং দক্ষিনাং দিব্যাং মুণ্ডমালা বিভূষিতাম্।।সদ্যশ্ছিন্নশিরঃ- খড়্গ- বামধের্দ্ধকরাম্বুজাম্ ।অভয়ং বরদষ্ঞৈব দক্ষিনাধোর্দ্ধপনিকাম।।মহামেঘপ্রভাং শ্যামাং তথা চৈব দিগম্বরীম্।কন্টাবসক্তমুন্ডালী- গলদ্রুধির- চর্চ্চিতাম।।"
বর্তমান সেবাইত
পরে
কালুদার
সহযোগী
বেশ
কিছু
যুবকের
(
যার
মধ্যে
বর্তমান
মায়ের
সেবাইত
সুনীল
কুমার
গাঙ্গুলীও
ছিলেন)
উৎসাহে
মন্দির
নির্মাণ
করে
মায়ের
পূজা
শুরু
হয়।
তখন
থেকেই
শুরু।
নিত্য
পূজা
হয়।
যে
কোন
ফল
ও
ফুল
দিয়ে
জহুরা
কালীর
নিত্য
পুজো
হয়
বলে
সেবাইত
জানান।
বিশেষ
তিথি
পূজা-
কার্তিক
মাসের
অমাবস্যায়
মহাধুমধামের
সাথে
জহুরা
কালীর
পূজা
অনুষ্ঠিত
হয়।প্রতি
বছর
জানুয়ারি
মাসে
মন্দিরে
দেবীর
বিশেষ
পূজা
সহ
কল্পতরু
উৎসব
পালিত
হয়।
পূজা
উপলক্ষে
অনুষ্ঠিত
নরনারায়ণ
সেবায়
প্রচুর
ভক্ত
সমাগম
ঘটে।
সন্ধ্যায়
নানা
সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠানের
আয়োজন
থাকে।
তিন মাথাওলা কালী
এ যেন সেই গুপ্তধনের মতো। অনেকটা তেমনই হাওড়া শিবপুরের অপ্রকাশ মুখার্জি লেনের কালী মন্দির। মাটির তলায় রয়েছে আসল ধাতুর মূর্তি। মাটির উপরে সিমেন্টের মূর্তি। সে মূর্তিতেও রয়েছে অভিনবত্ব। গত প্রায় ১০০ বছর সমত ধরে যেন কোনও এক জহুরীর জওহর নিয়ে মাটির নীচে অবস্থান করছেন জহুরী কালী।
মূর্তির সামনে রয়েছে একটি বড় ডিম্বাকার অংশ। তার সামনে ঘট। সেই ঘটের তলাতেই আসল মূর্তিটি স্থাপন করা রয়েছে। এই মন্দিরটি খুব ছোট আকারে চালু করেছিলেন তঙ্কুরাম দেবশর্মা নামে এক সাধক। তখন ওই জায়গাটি জঙ্গলে পূর্ণ ছিল। অনেক পরে নতুন মন্দিরটি তৈরি হয়। ১৯৭০ সালে স্বপ্নাদেশে মায়ের রূপ প্রত্যক্ষ করে মূর্তি নির্মাণ করা হয় মাটির উপরে। পাশাপাশি তিনটি মূর্তির সহবস্থান। অদ্ভুত এক রূপ।
এই মূর্তির আসল রূপের দেখা মেলে মালদহে। জনশ্রুতি মালদহ জহুরী তলা গ্রামের মা জহুরা। রাজাদের আমলে এ অঞ্চলটি ছিল ঘন বন জঙ্গলে পরিপূর্ণ। বিহার ও উত্তর প্রদেশে ডাকাতের দল বিভিন্ন ধনরত্ন লুন্ঠন করে এই অঞ্চলে মাটির নীচে লুকিয়ে রাখতো। ঐতিহাসিকদের মতে এই ডাকাতরা ধনরত্নের উপর একটি চন্ডী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিল, এবং অত্যন্ত নিষ্ঠা ভরে তার পূজা ও আরাধনা করত। মনে করা হয়, ধনরত্ন হিন্দি শব্দ 'জওহর' এবং তার থেকেই দেবী চন্ডী জহুরা বা জহরা নামে প্রসিদ্ধ হয়েছেন। জনশ্রুতি, সেই একই কারণে জহুরা কালীর মন্দির তৈরি হয় হাওড়ার এই অঞ্চলে। এই পূজোয় মানকচু ভোগ দিতে হয়। বলি দেওয়া হয় ল্যাটা মাছ।
সতীর মালাই চাকী থেকে সৃষ্টি হয় দেবীর, শুরু হয় পুজো