নিষ্ঠা-রীতি মেনে 'দেবী ষোড়শী' হিসাবে সারদা মা'য়ের উপাসনায় বেলুড় মঠ
বেলুড় মঠে ভক্তিভরে অনুষ্ঠিত হয় এই ফলহারিনী কালী পুজো। জ্যেষ্ঠ মাসের অমাবস্যায় ফলহারিনী কালীপুজো প্রতিবারের মতো এবারেও রীতি মেনে অনুষ্ঠিত হয়। নিষ্ঠা মেনে এই পূজা করা হয় বিভিন্ন মন্দিরে। আসলে বাংলায় শক্তি পুজোমাত্রই জনপ্
বেলুড় মঠে ভক্তিভরে অনুষ্ঠিত হয় এই ফলহারিনী কালী পুজো। জ্যেষ্ঠ মাসের অমাবস্যায় ফলহারিনী কালীপুজো প্রতিবারের মতো এবারেও রীতি মেনে অনুষ্ঠিত হয়। নিষ্ঠা মেনে এই পূজা করা হয় বিভিন্ন মন্দিরে। আসলে বাংলায় শক্তি পুজোমাত্রই জনপ্রিয়।
যেহেতু শক্তি কথাটি 'স্ত্রীবাচক' তাই শক্তি পুজো বলতে নারী বা মাতৃপূজা বলেই গণ্য হয়ে থাকে। বেলুড় মঠে এই ফলহারিনী কালীপুজোর এক বিশেষ মাহাত্ম্য আছে। শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ এমনই এক পূজা এক বিশেষ উপায়ে পালন করেছিলেন। তিনি শ্রীশ্রীমা সারদামণিদেবীকে 'দেবী ষোড়শী' হিসাবে উপাসনা করেছিলেন।
তাই এই বিশেষ দিনটি বেলুড় মঠ সহ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন এর বহু কেন্দ্রে অত্যন্ত ভক্তি নিষ্ঠা সহকারে পালিত হয়। এবারেও তার ব্যতিক্রম হলোনা। হিন্দু ধর্মে মা কালীর আরাধনা সর্বজনবিদিত। জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে ফলহারিণী কালীপুজো অনুষ্ঠিত হয়।
আজকের ফলহারিণী কালী পুজোর দিনে শ্রীরামকৃষ্ণদেবের স্ত্রী সারদা দেবীকে পুজো করেছিলেন জগৎ কল্যাণের জন্য।শ্রীমা সারদাকে ষোড়শীরূপে পুজো করেছিলেন বলে আজও রামকৃষ্ণমঠ ও আশ্রমে এই পুজো 'ষোড়শী' পুজো নামে পরিচিত। ৯ জুন, বুধবার দুপুর ১.৩২ মিনিটে অমাবস্যা শুরু হয়েছে।
১০ জুন, বৃহস্পতিবার দুপুর ৩.২৮ পর্যন্ত অমাবস্যা থাকবে। এই অমাবস্যায় ফলহারিণী কালী পুজো করা হয়। যিনি আমাদের কর্মফল হরণ করেন এবং মুক্তি প্রদান করেন তিনিই ফলহারিণী কালী। আমাদের সমস্ত বিপদ, দৈন্য, ব্যাধি এবং সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাশ করে তিনি ঐশ্বর্য্য, আরোগ্য, বল, পুষ্টি, ও গৌরব প্রদান করেন।
তবে জীবকে যা তিনি দেন তা তাদের কর্মফল অনুসারেই দেন। বিশ্বাস, ফলহারিণী কালীপুজো করলে পূজারীর ও ভক্তের কর্ম ও অর্থভাগ্যে উন্নতি ঘটে। সাংসারিক নানা বাধা দূর হয়। জীবনে সুখশান্তি লাভ হয়। জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে ফলহারিণী কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিন নানারকম ফল দিয়ে দেবীর পুজো করা হয়। ফল এখানে প্রতীক। তা আসলে সাধকের কর্ম-রূপ ফল। দেবীর চরণে এদিন ভক্ত তাঁর জীবনের সমস্ত কর্মফল নিবেদন করেন। পুজোর সময়ে অবশ্যই জ্বলবে একটি তেলের প্রদীপ। শ্রীরামকৃষ্ণ এই তিথিতেই সারদাদেবীকে পুজো করেছিলে।
এদিন তিনি দক্ষিণেশ্বরে তাঁর ঘরে মা সারদাকে পুজো করেছিলেন। ফলহারিণী কালী পুজোর দিন শ্রীমাকে তিনি ষোড়শীরূপে পুজো করেছিলেন। দশমহাবিদ্যার দশটি রূপের একটি হল ষোড়শী। জ্যোতিষ মতে একে অম্যাবস্যা অন্যদিকে সূর্যগ্রহণ। ভালো যোগ। বলছেন জ্যোতিষীরা।
অন্যদিকে এদিন রাত থেকে বিশেষ পুজোপাঠ শুরু হয়েছে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে। যদিও কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এছাড়াও তারাপীঠেও চলছে বিশেষ পুজো। সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনে সেখানে ভক্তদের ঢুকতে দেওয়া হয়।