Exclusive: মোহনবাগানকে ফেভারিট মানলেও ম্যাচের ভাগ্য বদলাতে পারে ইস্টবেঙ্গল, মনে করেন ফিলিপ ডি রাইডার
মোহনবাগানকে ফেভারিট হলেও ম্যাচের ভাগ্য বদলাতে পারে ইস্টবেঙ্গল, মনে করেন ফিলিপ ডি রাইডার
কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা মাত্র, তার পরেই ভারতীয় ফুটবলের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হবে এসসি ইস্টবেঙ্গল এবং এটিকে মোহনবাগান। মহাডার্বিতে মাঠে নামার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে দুই দল। খুব বেশি প্রত্যাশা না থাকলেও মোহনবাগান সমর্থকদের মতোই শনিবাসরী সন্ধ্য়ায় টেলিভসনের পর্দায় চোখ রাখবেন লাল-হলুদ সমর্থকেরা।
এই ডার্বি ঘিরে কখনও কোনও ভবিষ্যৎবাণী খাটেনি, খাতায় কলমে মোহনবাগানের থেকে অনেক পিছিয়ে মাণ্ডবীর তীরে মাঠে নামলেও ম্যাচের ফলাফল যে কোনও কিছু হতে পারে। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ ফিলিপ ডি রাইডারের মুখেও সেই একই সুর শোনা গেল মহারণের চব্বিশ ঘণ্টা আগে।
ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলাকে তিনি বলেন, "ডার্বিতে ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামবে মোহনবাগান। জেতার জন্যই ঝাঁপাবে ওরা। ৯৯ শাতংশ জয়ের সুযোগ রয়েছে সবুজ-মেরুনের সামনেই। কিন্তু মারিও এবং ইস্টবেঙ্গলকে পড়ে থাকা ওই এক শতাংশের জন্যই লড়াই করতে হবে। এই ম্যাচের ফলাফল কখনও পরিসংখ্যান বা ইতিহাসের উপর নির্ভর করে না। ফুটবলারদের দেখাতে হবে তারা ইস্টবেঙ্গলের মতো ঐতিহ্যশালী ক্লাবের জার্সিতে খেলার যোগ্য। কোচ এবং ফুটবলারদের এই ম্যাচে নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। নিজেদের উপর বিশ্বাস রাখে শুধু লড়াই চালিয়ে যাও নব্বই মিনিট, যে কোনও কিছু হতে পারে।"
এ দিন নিজের সময়ে ফেডারেশন কাপের প্রসঙ্গও তুলে আনেন। তিনি বলেন, "ফেডারেশন কাপে আমরা আন্ডারডগ হিসেবে শুরু করেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বড় ম্যাচ আমরা জিতেছিলাম, একই সঙ্গে ফেডারেশন কাপও তুলে দিয়েছিলাম সমর্থকদের হাতে।"
করোনার জন্য গোয়ায় আয়োজিত হচ্ছে আইএসএল। গত বারেও ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়েছিল গোয়ায়। যার ফলে শেষ দুই বছর ডার্বির স্বাদ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এই দলের সমর্থকেরাই। রাইডার মনে করেন কলকাতায় ডার্বি হলে ম্যাচের আগের পরিস্থিতি আরও বদলে যেত। অনেক বেশি চাপ থাকত দুই দলের উপর। তাঁর কথায়, "এই ডার্বি ঘিরে গোয়া এবং কলকাতার পরিবেশ কখনও এক নয়, আপনি এই দুই পরিবেশকে মেলাতে পারবেন না। কলকাতায় ম্যাচের আগে দলের উপর চাপ অনেক বেশি থাকে। সমর্থকেরা সব সময়ে ঘিরে থাকে, ম্যাচের আগে সমর্থকদের আবদার অনেক বেশি থাকে। গোয়ায় সেই সমর্থকেরা কোথায়। চাপ কম থাকবে। গ্যালারিতে সমর্থকরা দলকে বাইরে থেকে তাতিয়ে তোলে।"
ইস্টবেঙ্গলের বিদেশিদের মান নিয়ে বহু বিতর্ক হলেও রাইডার কোনও ফুটবলারকে ছোট করে দেখতে নারাজ। একজন ফুটবলার ভাল না মন্দ সেটা বিচার করার থেকে অনেক বেশি জরুরি তিনি দলের হয়ে সেরাটা দিচ্ছেন কিনা। বেলজিয়ান কোচের কথায়, "ইস্টবেঙ্গলে যেই বিদেশিরা খেলছেন তাঁরা প্রত্যেকেই নতুন। ফলে এখনই কাউকে বিচার করা ঠিক নয়। প্রত্যেক ফুটবলারের উচিৎ মাঠের মধ্যে নিজেদের দু'শো শতাংশ দেওয়া। ফুটবলে এটাই প্রয়োজন। কে ভাল কে মন্দ সেটা আলাদা বিষয়, কিন্তু সেরাটা উজাড় করে দেওয়াটা দরকার। হৃদয় দিয়ে খেলতে হবে। এই রকম খেললে ফলাফল পজিটিভ হতেই পারে।" পাশাপাশি তাঁর আরও সংযোজন, "মোহনবাগানের বিদেশিরা তুলনামূলক অনেক বেশি কার্যকরী। মোহনবাগান একটা সেট দলকে দু'বছর ধরে রেখেছে। ফলে এর সুবিধা তারা যে পাবে, সেটা স্বাভাবিক।"
সমর্থকদের উদ্দেশ্য রাইডারের বার্তা, "বিশ্বাস রাখুন দল জিততে পারে। যেমনটা আমার সময়ে ফেডারেশন কাপে হয়েছিল। সব কিছু একটা দলের বিরুদ্ধে গেলেও সেখান থেকে জয় তুলে আনা যায়, এটাই ফুটবলের মাধুর্য্য।" ফিলিপ ডি রাইডারের তত্ত্বাবধানে ২০০৯-১০ মরসুমে ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। ২০০৬ সালে তারা জিতেছিল সুপার কাপ। ২০০৫-০৬ মরসুমে জাতীয় লিগে রানার্স হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ২০১২ সালে সিকিম ইউনাইটেডকে দ্বিতীয় ডিভিশন আই লিগে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন রাইডার।