Kolkata Derby: জঘন্য গোলকিপিং, এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে টানা সাত ম্যাচ জয়হীন ইস্টবেঙ্গল
Kolkata Derby: জঘন্য গোলকিপিং, টানা সাত ম্যাচ ডার্বিতে জয়হীন ইস্টবেঙ্গল
নৈশালোকে সুসজ্জিত দর্শকপুষ্ট যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে মনে রাখার মতো ম্যাচ উপহার দিল এটিকে মোহনবাগান। ডার্বিতে এমনিতেই দুই দলের ফুটবলাররা নিজেদের ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় থাকে, সেই মরিয়া প্রয়াস এই ম্যাচকে আরও চিত্তাকর্ষক করে তোলে।
শনিবারের যুবভারতী দাপট দেখল এটিকে মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গলকে ২-০ গোলে পরাজিত করল এটিকে মোহনবাগান। ম্যাচের দু'টি গোলই আসে দ্বিতীয়ার্ধে। কয়েকটি পরিবর্তন ছাড়া প্রায় সেট দল গত দুই বছর ধরে রেখেছে এটিকে মোহনবাগান। সব বিভাগে এগিয়ে থাকার ফলে এটিকে মোহনবাগান চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে শুরু থেকে চাপ তৈরি করবে এমনটাই মনে করেছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। প্রত্যাশা মতো এটিকে মোহনবাগান দাপট দেখাল ঠিকই তবে হারলেও ইস্টবেঙ্গলের লড়াইকে ছোট করে দেখার কোনও জায়গা নেই। প্রথমার্ধের খেলার বিচারে প্রথম ১০ মিনিট ছাড়া সমানে সমানে লড়াই চালায় ইস্টবেঙ্গল। বরং মোহনবাগানের থেকে অনেক বেশি সুযোগ তৈরি করেছিল ইস্টবেঙ্গল। রেফারির একের পর এক জঘন্য সিদ্ধান্ত ইস্টবেঙ্গলের গোলের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়, না হলে যে ভাবে লাল-হলুের জর্ডান ও'ডোহার্তিকে বক্সের মধ্যে আশিস রাই পুস করলে ঢিল ছোঁড়া দূরত্ব থেকে রেফারি সি আর শ্রীকৃষ্ণ অগ্রায্য করে যান তা অবিশ্বাস্য। নিশ্চিত পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত হতে হয় লাল-হলুদকে।
যদিও এর আগে সিমবোই হাওকিপের হেড দুরন্ত দক্ষতায় বাম দিকে ঝাঁপিয়ে বাঁচান এটিকে মোহনবাগানের গোলরক্ষক বিশাল কাইথ। ম্যাচের প্রথম দশ মিনিটে আক্রমণের ঝাঁঝ ছিল এটিকে মোহনবাগানের। ৯ মিনিটে লিস্ট কোলাসোর একটা শট সাইড নেটে লাগে। শুভাশিস বসু অল্পের জন্য অফ টার্গেট হয়। ম্যাচের সেরা সুযোগটি পেয়েছিলেন এটিকে মোহনবাগানের হুগো বৌমস। নিশ্চিত গোল থেকে সবুজ-মেরুনকে প্রতিহত করেন সার্থক গোলুই। গোটা ম্যাচেই দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েছেন সার্থক। ব্যাকে ডিফেন্সকে ভরসার দেওয়ার পাশাপাশি উইং বরাবর দৌড় শানিয়ে বাড়িয়েছেন একের পর এক ঠিকানা লেখা পাস।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও আক্রমণের ঝাঁঝ ছিল ইস্টবেঙ্গলের। ৫৪ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোলটি পেয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল যদি সিমবই হাওকিপ ছোঁয়ানোর সুযোগ পেতেন সার্থক গোলুইয়ের বাড়ানো পাসে। তবে, প্রথম গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি সাড়ে ৬২ হাজারের যুবভারতীতেকে। ৫৬ মিনিটে লাল-হলুদ গোলরক্ষক কমলজিৎ সিং-এর জঘন্য গোলরক্ষার খেসারত দিয়ে ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে লাল-হলুদ। বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে নেওয়া হুগো বৌমসের নির্বিষ শট বলের লাইনে থেকেও হাতে লাগিয়ে জালে জড়িয়ে দেন কমলজিৎ। এই পর্যায়ের কোনও গোলরক্ষক যে এত জঘন্য গোলকিপিং করতে পারে তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। এই গোলের দশ মিনিটের মধ্যে ইনসিওরেন্স গোলটি তুলে নেয় এটিকে মোহনবাগান। ৬৫ মিনিটে দিমিত্রিয়স পেত্রাতোসের বাড়ানো বল থেকে গোলার মতো শট ইস্টবেঙ্গলের জালে জড়িয়ে দেন মনবীর সিং।
প্রথম গোল হজমই ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্সের আত্মবিশ্বাসে চির ধরিয়ে দেয় বিশেষ করে গোলরক্ষকের। দুই গোল হজম করার পর লাল-হলুদের ডিফেন্সের উপর আরও চাপ বাড়ায় লিস্টন কোলাসো-জনি কাউকোরা। তবে, আর গোল হজম করতে হয়নি লাল-হলুদকে। একটা গোলরক্ষক একটা দলকে একা হাতে ম্যাচে বাঁচিয়ে রাখে, সেই তিন কাঠির প্রহরীই যে একটা দলকে শেষ করে দিতে পারে তার আদর্শ উদাহরণ এই ম্যাচ। এই নিয়ে আইএসএল-এ টানা পাঁচটি ডার্বির পাঁচটিতেই হারল ইস্টবেঙ্গল। সব মিলিয়ে টানা সাতটি ডার্বিতে সবুজ-মেরুনের বিরুদ্ধে পরাজিত হল লাল-হলুদ।