জিএসটি বিল পাশে কোন দুই বাঙালির অবদান সবচেয়ে বেশি জানেন কি?
পথ চলা শুরু হচ্ছে ঐতিহাসিক জিএসটি বিলের। তবে জানেন কি, এই বিলটির খসড়া তৈরি ও দেখভালের দায়িত্বে একেবারে প্রথম থেকেই পর্যায়ক্রমে ছিলেন দুই বাঙালি? দুজনেই এই রাজ্যের পরিচিত ও কৃতী মানুষ।
পথ চলা শুরু হচ্ছে ঐতিহাসিক জিএসটি বিলের। জিএসটি বিল চালু হওয়ার ফলে জটিল পরোক্ষ কর কাঠামোর সরলীকরণ হবে। যার ফলে বাণিজ্য ক্ষেত্রে ভারতের সুবিধা হবে। জিএসটি শুরু হলে জটিল কর ব্যবস্থার অবসান ঘটলে রপ্তানির ক্ষেত্রেও প্রতিযোগিতা শুরু হবে। এছাড়া কমপক্ষে ১.৫ শতাংশ জিডিপি বেড়ে যাবে বলে আশাপ্রকাশ করা হচ্ছে।
এমন হাজারো সুবিধা ও আশা নিয়ে পাশ হয়েছে পণ্য ও পরিষেবা কর বিল। তবে জানেন কি, এই বিলটির খসড়া তৈরি ও দেখভালের দায়িত্বে একেবারে প্রথম থেকেই পর্যায়ক্রমে ছিলেন দুই বাঙালি? দুজনেই এই রাজ্যের পরিচিত ও কৃতী মানুষ। দুজনেই অর্থনীতির ছাত্র।
একজন হলেন প্রাক্তন শাসক দল বামফ্রন্টের অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত ও অন্যজন বর্তমান তৃণমূল সরকারের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। দুজনেই খড়দহ থেকে বিধানসভা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন একে অপরের বিরুদ্ধে। তবে জাতীয় ক্ষেত্রে দুজনেই দায়িত্বের সঙ্গে নিজের কর্তব্য পালন করেছেন।
সালটা ২০০৭। নানা গবেষণার পরে অসীমবাবুর নেতৃত্বেই জিএসটির খসড়া লেখা শুরু হয়। তিনিই ছিলেন তার চেয়ারম্যান। তবে তার অনেক আগেই ২০০০ সালে জিএসটি মডেল তৈরির জন্য কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছিল। অসীমবাবুই ছিলেন নেতৃত্বে।
অসীমবাবুর কথায়, আমাদের জিএসটি তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এই নিয়ে বহুবার আলোচনা হয়েছে। ২০১০ সালের মধ্যেই অন্তত ৮০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছিল বলে দাবি করেছেন অসীম দাশগুপ্ত।
জ্যোতি বসুর কাছের মানুষ অসীমবাবু ২০১১ সালে রাজ্যে সিপিএমের হারের পরে জিএসটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। সংস্কারের ক্ষেত্রে জিএসটি বিলের প্রয়োজনীয়তার কথা বারবারই উঠে এসেছে অসীম দাশগুপ্তর কথায়।
এরপরে কেরলের অর্থমন্ত্রী কেএম মণি কিছুদিন চেয়ারম্যান থাকার পরে দুর্নীতি ইস্যুতে পদত্যাগ করলে ফের একবার বাংলার অর্থমন্ত্রী হিসাবে অমিত মিত্র জিএসটি কমিটির চেয়ারম্যান হন গত ফেব্রুয়ারি মাসে। এবং অমিতবাবুর নেতৃত্বেই কমিটি শেষপর্যন্ত জিএসটি বিল সংশোধন করে তা পেশ করল যা বুধবার রাজ্যসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে।
অর্থাৎ জিএসটির মতো ঐতিহাসিক বিল তৈরি ও পাশের ক্ষেত্রেও অবদান রাখলেন দুই কৃতী বাঙালি। এবং একইসঙ্গে ঘুরিয়ে বাংলার নামও জুড়ে গেল এই আইনের সঙ্গে।