এই বিশেষ রীতি-আচারগুলি ছাড়া সম্পন্ন হয় না কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো
কোজাগরী লক্ষ্নীপুজোর বিশেষ কিছু রীতি আচার রয়েছে, যা নিয়েই সম্পন্ন হয় এই পুজো।
বিজয়ার বিষন্নতার রেশ শেষ হতে না হতেই আবারও দেবী বন্দনায় মাততে চলেছে বাঙালি। শক্তির দেবীর আরাধনার পর এবার ধনদেবীকে সাড়ম্বরে ঘরে এনে পুজার্চনার পালা। কোজাগরী লক্ষ্নীপুজোর বিশেষ কিছু রীতি আচার রয়েছে, যা নিয়েই সম্পন্ন হয় এই পুজো।
'কে জেগে আছো' ?
'কোজাগরী' শব্দটির উৎপত্তি 'কো জাগতী' অর্থাৎ 'কে জেগে আছ' কথাটি থেকে। বলা হয়, ' যার কিছু (সম্পত্তি)নেই সে পাওয়ার আশায় জাগে, আর ' যার আছে (সম্পত্তি) যে না হারানোর আশায় জাগে'। আর সারারাত জেগে লক্ষ্মীর আরাধনা করাই এই পুজোর বিশেষ আচার। কথিত আছে , লক্ষ্মী আরাধনায় যে জেগে থাকে রাতভর , সেই ব্যাক্তির গৃহস্থেই পদার্পণ করেন লক্ষ্মী।
লক্ষ্মী পুজোর আল্পনা
অন্য়ান্য পুজো আর কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর আল্পনাতে বেশ কিছু পার্থক্য থাকে। এই পুজোতে মূল আল্পনার সঙ্গে বাড়ি জুড়ে আঁকা হয় ধানের ছড়া, মুদ্রা, আর মা লক্ষ্মীর পায়ের ছাপের ছবি। এই প্রতীকগুলি পুজার মাহাত্মকে যেমন ব্যাখ্যা করে, তেমনই পুজোর আচারের একটা অংশ হয়ে উঠেছে এই বিশেষ ধরণের আল্পনা।
সপ্ততরী
নবপত্রিকা বা কলার পেটোর তৈরি নৌকা এই পুজোর অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই নৌকা এখনও বহু গৃহস্থেই তৈরি হয়ে থাকে। তবে বাজারেও এখন কিনতে পাওয়া যায় কলার পেটো। একে সপ্ততরী বলা হয়। এই তরীকে বাণিজ্যের নৌকা হিসাবে ধরা হয়। তাতে অনকেই টাকা -পয়সা, চাল, ডাল, হরিতকি, কড়ি, হলুদ সাজিয়ে রাখেন। সপ্ততরীকে লক্ষ্মীর বেদীর সামনেই রাখা হয়।
সরায় পটচিত্র
অনেক বাড়িতেই পূর্ব রীতি মেনে সরার পটচিত্রে পুজো করা হয়। লক্ষ্মীর এই সরা হয় , নান রকমের। যেমন ঢাকাই সরা, ফরিদপুরী, সুরেশ্বরী, শান্তিপুরী সরা। এই সরাতে লক্ষ্মী , জয়া-বিজয়া সহ কয়েকটি বিশেষ পুতুলকে চিত্রায়িত করা হয়।
ভোগ-প্রসাদ
কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর ভোগে অনেক বাড়িতেই জোড়া ইলিশ রাখা হয়। তবে ভোগের মেনুতে খিচুড়ি লাবড়া থাকা আবশ্যিক। সঙ্গে প্রসাদে ফলমূল তো থাকেই , থাকে নারকেলের নাড়ু। এছাড়াও লুচি, পায়েস মিষ্টির নানা আয়োজন থাকে মা লক্ষ্মীর জন্য।