বড়দিন মানেই শুধুই কেকের উৎসব, কলকাতার এই জায়গাগুলোতে কেক খাওয়ার জন্য হানা দিতেই পারেন
ক্রিসমাস মানেই কেক। আর এই কেকের রসনাকে চেটেপুটে নিতে বছরের এই সময়টা মেতে ওঠে বাঙালিরা। কলকাতা শহরে কেক খাওয়ার চল শত বর্ষ পুরনো।
বাঙালি-কে কেক খাওয়ানো শিখিয়েছিল কারা? এটা সত্যিকারেই আবশ্যিক প্রশ্ন। কারণ, বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে কেক খাওয়ার চলটা শুরু হয়েছে ইংরাজ আমলে। তার আগে পিঠা বা রুটি চল থাকলেও ডিম আর বেকিং পাউডারের সংমিশ্রণে কেক বানানোর পদ্ধতিটির আমদানি ওই ব্রিটিশ আমলে। আর সেই চলের শুরু এই কলকাতা শহরের বুক থেকে। অকল্য়ান্ড হোটেল পরে যা নাম বদলে হয় গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল এবং বর্তমানে দ্য ললিত নামে পরিচিত এই হোটেলের বেকারি থেকে কেক বিক্রি শুরু ১৮৪০ সালের পর থেকে। তবে, ভারতের বুকে কেককে জনপ্রিয় করার পিছনে রয়েছে বাপু নামবিল্লি নামে একটি লোকের।
কলকাতা শহরেও কেকের স্বাদকে শুকনোর ফলের রসনায় বেঁধে হৃদয় জিতে নিয়েছিলেন নাহুমসরা। বলতে গেলে ক্রিসমাসে বাঙালির কেক খাওয়ার আনন্দকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল নাহুমসরা। বর্তমান ক্রিসমাসের বাঙালির কাছে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ কেক। এমনই কিছু কেকের দোকান আছে, যারা স্বাদ নেওয়ার জন্য বাঙালি সবসময়েই উন্মুখ হয়ে থাকে।
দ্য ললিত গ্রেট ইস্টার্ন
মাঝে বহু বছর বন্ধ থাকার পর গত বছর পাঁচেক ধরে ফের খুলেছে এখানকার বিখ্যাত বেকারি। গ্রেট ইস্টার্নের সেই বিখ্যাত বেকারিতে তৈরি হওয়া কেকের স্বাদ এবং বর্তমানে তৈরি হওয়া কেকের স্বাদ নিয়ে বহু বিতর্ক হচ্ছে। বিশেষ করে বছর শেষের সময়ে এই বিতর্ক চরমে ওঠে। কিন্তু, যাঁরা ইতিহাসকে প্রত্যক্ষ করতে চান সেই সব মানুষরা এখনও দল বেঁধে হাজির হন দ্য ললিত গ্রেট ইস্টার্ন বেকারির কেকের স্বাদ নিতে।
নাহুমস
নিউ মার্কেটে নাহুমস-দের দোকানটি এখনও সমান জনপ্রিয়তা চালু রয়েছে। সারা বছরই মানুষ নাহুমস-এর কেক বা কনফেকশনারি আইটেমের জন্য এখানে ভিড় জমান। এদের তৈরি পাম কেক কিনতে এখনও ক্রিসমাসের সময় লম্বা লাইন পড়ে যায়।
ফ্লুরিস
কলকাতার বুকে পেস্ট্রি কেকের স্বাদে অতুলনীয় নাম। চলতি বছরে ৯০-এ পড়েছে এই বেকারি কাম কনফেকশনারি এবং রেস্তোঁরাটি। বড়দিনের উৎসবে ফ্লুরিস-এর এক টুকরো কেক না খাওয়ার ইচ্ছা রাখেন এমন বাঙালির সংখ্যা বিরল।
ক্যাথলিন
কলকাতা শহরের বুকে কেকের আরও একটি দোকানের নাম ক্যাথলিন। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এখানকার তৈরি কেক মানুষের মন জয় করে নিয়েছে।
কুকিজার
সম্পূর্ণভাবে কেকের একটি ফুড সেন্টার। ড্রাই ফ্রুটসে তৈরি এদের কেক বিপুলভাবে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
কেকস
গত কয়েক বছরে উত্তরোত্তর সুনামের বৃদ্ধি ঘটিয়ে চলেছে কেকস।
মি-ও আমোঁরে
মনজিনিস নামে কয়েক দশক ধরে বাঙালির কেক ও কনফেকশনারির রসনাকে তৃপ্ত করে আসার পর এখন মি-ও আমোঁরে নামে পরিচিত এটি। নাম বদালেও স্বাদ বদলায়নি এদের কেকের। সারাবছর ছাড়াও ক্রিসমাসের উৎসবে এদের তৈরি কেক বাঙালি রসনায় অন্যতম আকর্ষণের।
ফ্রেঞ্চ লোফ
সম্প্রতি কলকাতায় বেশ কয়েকটি আউটলেট খুলেছে এরা। ড্রাই ফ্রুটসের কেক, বা রাম অ্যান্ড রেসিন কেক এদের এবারের মূল আকর্ষণ।
সুতরাং, ক্রিসমাসের আবহে কেকের বাহারি রসনা নিয়ে নেওয়ার এটাই প্রকৃত সময়। তাই দেরি না করে ঢুকে পড়ুন কলকাতা শহরের বুকে থাকা এমনই সব কেক জয়েন্টে।