বিতর্কই কারণ নাকি স্মৃতিকে বস্ত্র মন্ত্রকে সরানোর পিছনে রয়েছে অন্য মাস্টারস্ট্রোক?
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বড়সড় রদবদল করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। কেউ কেউ বাদ পড়েছেন, সেই জায়গায় এসেছেন নতুন মুখ। কেউ আবার প্রথমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বের স্বাদ পেয়েছেন। [মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক হাতছাড়া স্মৃতি ইরানির]
তবে এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আলোচনায় থেকেছেন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা স্মৃতি ইরানি। তাঁকে এই দফতর থেকে সরিয়ে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ বস্ত্র মন্ত্রকের মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন মানবসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন প্রকাশ জাভরেকর। [দেশের রাষ্ট্রপতি পদে বসতে পারেন স্মৃতি ইরানি, ভবিষ্যদ্বাণী]
কেন স্মৃতিকে সরানো হল তা নিয়ে নানামহলে গুঞ্জন অব্যাহত। ২০১৪ সালে নির্বাচনে জিতে উঠে আরএসএসের বিরোধ সত্ত্বেও রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে স্মৃতিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা দেন মোদী। তারপর গত দু'বছরে বিতর্কের কারণে কি শুধুমাত্র এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী তথা সাংসদকে সরিয়ে নিলেন মোদী?
অনেকে বলছেন, নিজের কার্যকালের দু'বছরে কাজের চেয়ে বেশি বিতর্ক তৈরি করেছেন তিনি। তাঁর আমলে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলকালাম হয়েছে। হায়দ্রাবাদে গবেষণার ছাত্র রোহিত ভেমুলার মৃত্যু নিয়ে স্মৃতি ইরানির নানা পদক্ষেপে বারবার সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রকে।
এছাড়া মানব সম্পদ মন্ত্রকের অধীনস্ত শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী হিসাবে বারবারই বিতর্কে জড়িয়েছেন স্মৃতি। প্রথম থেকেই তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। যা আদপে মোদী সরকারকেই চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়েছে।
অন্যদিকে আরও একটি ভাবনাও উঠে আসছে স্মৃতি ইরানিকে কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকে সরানোর মধ্য দিয়ে। সেটা হল, আগামী বছর উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন। আর সেজন্য এখন থেকেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছে বিজেপি থেকে শুরু করে সব রাজনৈতিক দল।
গত লোকসভা নির্বাচনের বিচারে বিজেপি এগিয়ে থাকলেও বিধানসভা নির্বাচনে তার কতটা প্রভাব পড়বে তা বিচার্য বিষয়। এবছর কংগ্রেসের তরফে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচারে ঝাঁপানো হতে পারে। সেকথা মাথায় রেখেই স্মৃতিকে কৌশলে কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব দিয়ে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে বিজেপি, এমনটাই মনে করছেন অনেকে।
প্রিয়াঙ্কার বিরুদ্ধে একজন মহিলা হিসাবে স্মৃতি যে লড়াই দেবেন সেটা বিলক্ষণ মনে করছে বিজেপি নেতৃত্ব। আর তাছাড়া সমাজবাদী পার্টির তরফে অখিলেশ সিং যাদবের স্ত্রী ডিম্পলকে কোনওভাবে নির্বাচনে তুলে ধরা হলে সেক্ষেত্রেও স্মৃতির নির্বাচন কাজে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তাছাড়া গো-বলয়ে স্মৃতি ইরানির জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাঁর মতো একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে সামনে রেখে প্রচার করলে তার লাভ ঘরে তোলা যাবে বলে আশাবাদী বিজেপি! সেজন্যই আগে থেকে কেন্দ্রের গুরুদায়িত্ব থেকে সরিয়ে স্মৃতিকে উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনের কাজে লাগাতে পারে বিজেপি নেতৃত্ব, এমনটাই আঁচ করছেন অনেকে।