ভারতে পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন শিশুমৃত্যুর হার, তাও চমকে দেবে পরিসংখ্যান, কী বলছে রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট
রাষ্ট্রপুঞ্জের ইন্টার-এজেন্সি গ্রুপ ফর চাইল্ড মর্টালিটি এস্টিমেশন (ইউএনআইজিএমই) এর তথ্য অনুযায়ী ভারতে গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০১৭ সালে সবচেয়ে কম শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের ইন্টার-এজেন্সি গ্রুপ ফর চাইল্ড মর্টালিটি এস্টিমেশন (ইউএনআইজিএমই) এর তথ্য অনুযায়ী ভারতে গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০১৭ সালে সবচেয়ে কম শিশুর মৃত্যু হয়েছে। যদিও কমে যাওয়া সংখ্যাটাও চমকে দেওয়ার মতো। ৮ লক্ষ ২ হাজার শিশু গতবছরে মারা গিয়েছে। ইউএনআইজিএমই রিপোর্ট মোতাবেক ৬ লক্ষ ৫ হাজার নিও ন্যাটাল (সদ্যজাত) মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ৫ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে ১ লক্ষ ৫২ হাজার শিশু মারা গিয়েছে। যা আগের পাঁচ বছরের তুলনায় সংখ্যায় কম।
কমছে সংখ্যা
রাষ্ট্রপুঞ্জের শাখা ইউনিসেফের প্রতিনিধি ইয়াসমিন আলি হক জানিয়েছেন, শিশু মৃত্যুর হার ভারতে উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। যা প্রশংসনীয়। ২০১৬ সালে ভারতে শিশুমৃত্যুর হার ছিল ৮.৬৭ লক্ষ। ২০১৭ সালে তা কমে ৮.০২ লক্ষে নেমে এসেছে। ২০১৬ সালে প্রতি ১ হাজার শিশুতে মৃত্যুর হার ছিল ৪৪ জন। ২০১৭ সালে শিশু পুত্রের ক্ষেত্রে প্রতি হাজারে ৩৯ জন ও শিশুকন্যার ক্ষেত্রে প্রতি হাজারে ৪০জনে নেমে গিয়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট
শিশুদের পুষ্টি সঠিক রাখতে প্রচার ও খোলা শৌচ বন্ধ করতে প্রচার এই মৃত্যু হার কমাতে বিশেষ সাহায্য করেছে বলে রাষ্ট্রপুঞ্জ রিপোর্টে জানিয়েছে। ২০১৭ সালে সারা পৃথিবীতে ৬৩ লক্ষ ১৫ বছরের কমবয়সী শিশু বাঁচানো যায় এমন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ৫ সেকেন্ডে ১ জন। তার মধ্যে ৫৪ লক্ষ শিশুই ৫ বছরের মধ্যে বয়স। সিংহভাগই সদ্যজাত।
আফ্রিকায় সঙ্কট
২০১৭ সালে পাঁচ বছরের কমবয়সী যত শিশু মারা গিয়েছে তার সিংহভাগ সাব সাহারন আফ্রিকার ও বাকী অনেকটাই দক্ষিণ এশিয়ার। সাব সাহারন আফ্রিকায় প্রতি ১৩ জনে ১ জন শিশু পাঁচ বছর বয়স হওয়ার আগেই মারা যায়। উন্নত দেশে সেই সংখ্যা ১৮৫ জনে ১ জন।
নানা জটিলতা
রিপোর্ট বলছে, পাঁচ বছরের নিচে মারা যাওয়া বেশিরভাগ শিশু জন্মের সময় জটিলতায়, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। ৫ থেকে ১৪ বছরের শিশু জলে ডুবে ও রাস্তায় দুর্ঘটনায় বেশি মারা যায়।
গ্রাম-শহরের ফারাক
পাঁচ থেকে চোদ্দ বছর বয়সী শিশু মৃত্যুর হার ইউরোপের চেয়ে সাব সাহারন আফ্রিকায় ১৫ গুণ বেশি। সদ্যজাতের মৃত্যুর হার ইউরোপের তুলনায় ৯ গুণ বেশি। আরও এক উল্লেখযোগ্য তথ্য উঠে এসেছে। শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে শিশু মৃত্যুর হার পঞ্চাশ শতাংশ বেশি। আবার কম শিক্ষিত মায়েদের শিশুরা অন্তত মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ মায়ের শিশুর তুলনায় দ্বিগুণ হারে মারা যায়।
সামগ্রিক পরিসংখ্যান
১৯৯০ সালে সারা পৃথিবীতে বছরে ১কোটি ২৬ লক্ষ শিশু মারা যেত। ২০১৭ সালে তা কমে ৫৪ লক্ষে নেমে এসেছে। ধীরে ধীরে এই সংখ্যা অনেক কমে আসছে। সামগ্রিকভাবে চেষ্টা করলে এই সংখ্যাকে একেবারে কমিয়ে ফেলা সম্ভব হবে বলে রাষ্ট্রপুঞ্জ মনে করছে।