মহাকাশ গবেষণার জনক ও ইসরোর প্রতিষ্ঠাতা, ভারতকে বিজ্ঞানের পীঠস্থান গড়ে তুলতে সারাভাইয়ের অজানা লড়াই
ভারতীয় মহাকাশ জনক হিসেবে বিশ্ব বিক্রম সারাভাইকে চেনে। একদিকে তিনি যেমন ছিলেন পদার্থবিদ, অন্যধারে তেমনি তিনি ছিলেন শিল্পপতি। ভারতে মহাকাশ নিয়ে গবেষণা তিনি প্রথং শুরু করেছিলেন। ভারতে পরমাণু শক্তি বিকাশে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তিনি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরোর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। এছাড়াও আহমেদাবাদ ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
কেমব্রিজ থেকে উচ্চশিক্ষা সারাভাইয়ের
১৯১৯ সালের ১২ অগস্ট ভারতের আহমেদাবাদে এক শিল্পপতির বাড়িতে বিক্রম সারাভাই জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে তিনি গুজরাতের কলেজে স্নাতক স্তরের জন্য পড়াশোনা করেন। সেখান থেকে তিনি কেমব্রিজে চলে যান। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৪০ সালে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সারাভাই ভারতে ফিরে আসেন। বেঙ্গালুরুতে ভারতীয় পদার্থবিদ স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটেশ রমনের অধীনে আইআইএসসি তে মহাজাগতি রশ্মি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ১৯৪৫ সালে ফের তিনি কেমব্রিজ চলে যান। সেখানে তিনি 'কসমিক রে ইনভেস্টিগেশন ইন ট্রপিক্যাল' শিরোনামের ওপর থিসিস জমা দেন।
একাধিক পরীক্ষাগার স্থাপন
এরপর তিনি স্বাধীন ভারতে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে আসর পর তিনি টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি এই অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠা করেন। মাত্র ২৮ বছর বয়সে তিনি গুজরাতে পদার্থবিদ্যায় একটি উন্নতমানের পরীক্ষাগার বা ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করেন। বিক্রম সারাভাই পেশাদার শিক্ষাব্যস্থার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারেন। ১৯৬২ সালে আহমেদাবাদে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠায় বিক্রম সারাভাইয়ের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার উদ্যোগ
৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে ভারতে মহাকাশ গবেষণা শুরু হয়েছিল। আমেরিকার স্যাটেলাইট সিনকম-৩ এর সাহায্যে টোকিও অলিম্পিকের লাইভ ট্রান্সমিশন সম্ভব হয়েছিল। ইসরোর ওয়েবসাইড অনুসারে, এটি দেখেই সারাভাই ভারতে মহাকাশ গবেষণার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, মহাকাশ গবেষণায় বাস্তব সমাজের সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা রয়েছে। রাশিয়া প্রথম কৃত্রিম আর্থ স্যাটেলাইট স্পুটনিক-১ উৎক্ষেপণের পরেই সারাবাই ভারতে মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের জন্য সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেন। তিনি বোঝাতে শুরু করেন, ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে মহাকাশ গবেষণা কতটা প্রয়োজনীয়। মহাকাশ গবেষণা নিয়ে তিনি বলেন, মহাকাশ গবেষণার মাধ্যমে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামার কোনও আগ্রহ নেই। এই গবেষণা কেন্দ্র স্থাপিত করা প্রয়োজন দেশের একাধিক সমাজিক সমস্যার সামাধান করার জন্য। দেশের প্রযুক্তি ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য।
ছবি সৌজন্য উইকিপিডিয়া