চিতোরগড়ের এই জায়গাতেই পদ্মিনীকে দেখেছিলেন খিলজি , জানুন 'পদ্মিনীমহল' ঘিরে আজানা তথ্য
সঞ্জয়লীলা বনশালীর ছবি 'পদ্মবতী' নিয়ে এই মুহুর্তে দেশ জোড়া বিতর্ক। গোটা ছবিটি যাঁকে ঘিরে, চিতোরের সেই অপরূপ সুন্দরী রানি পদ্মিনীর বিলাসবহুল জীবপযাপনের একটি বড় দিক তাঁর পদ্মিনী মহল।
সঞ্জয়লীলা বনশালীর ছবি 'পদ্মবতী' নিয়ে এই মুহুর্তে দেশ জোড়া বিতর্ক। গোটা ছবিটি যাঁকে ঘিরে, চিতোরের সেই অপরূপ সুন্দরী রানি পদ্মিনীর বিলাসবহুল জীবনপযাপনের একটি বড় দিক হল তাঁর 'পদ্মিনী মহল' । অন্যদিকে, সাহসী পদ্মিনীর জীবনের আরেকটি বড় 'সত্যি' হল,চিতোরের ' জোহরকুণ্ড'। বিলাসবহুল সেই মহল আর কুণ্ড আজও রাজস্থানেরর রাজপুতানা ইতিহাসের নানা সাহসী গাথাকে নিজের মধ্যে বহন করে চলেছে। কেমন ছিল সেই পদ্মিনী মহল ,আর জোহর কুণ্ড? আজও এই মহল ফিসফিস করে কোন ইতিহাস? জেনে নেওয়া নেওয়া যাক।
[আরও পড়ুন:৪০০ কেজি-র সোনার গয়নায় সেজেছেন 'পদ্মাবতী'-র দীপিকা, জানেন ছবিতে তাঁর পোশাকের ওজন কত]
চিতোরগড় দূর্গের পদ্মিনী মহল
রাজস্থানের চিতোরগড় দূর্গের ভিতরেই রয়েছে রানি পদ্মিনীর মহল। কথিত আছে, রানি পদ্মিনীর সৌন্দর্যের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল তাঁর চোখ। এই সিংহল রাজকন্যার চোখ পদ্মের ন্যায় হওয়ার কারণেই , তাঁর নাম পদ্মিনী। দূর সিংহল থেকে রুক্ষ রাজস্থানে পদ্মিনীকে নিয়ে এসেও রাজা রতন সিং ,তাঁকে পদ্মের মতো করেই রেখেছিলেন চিতোরের দূর্গে। দূর্গের মাঝে একটি জলাশয়ের ওপর নির্মিত করা হয়, রানি পদ্মিনীর মহল, যা আজও পদ্মিনী মহল নামে খ্যাত।
মহলের ভিতরের দিক
মহলের ভিতরের দিকে ঢুকতেই রয়েছে বহু ছোট ছোট সিঁড়ি। এই সিঁড়ি বেয়ে রানি পদ্মিনী মহলের ঘরে ঢোকা যায়।
মহলের সামনেই মন্দির
পদ্মিনীর মহলের সামনেই রয়েছে দুটি মন্দির । একটি হল নাগা চন্দ্রেশ্বর মন্দির অন্যটি হল কালিকামাতা মন্দির। জানা য়ায়, শিবভক্ত পদ্মিনী এখানেই তাংর নিত্য আরাধনা করতেন।
আলাউদ্দিন খিলজি পদ্মিনীকে দেখেন এখানেই
জানা যায়, পদ্মিনীর রূপের গুণগান শুনে, দিল্লি থেকে তাঁকে জয় করে নিয়ে যেতে রাজস্থানের চিতোর আক্রমণ করেন আলাউদ্দিন খিলজি। খিলজির দাবি মেনে, পদ্মিনীকে দেখানোর জন্য সম্মত হয়। জানা যায়. চিতোরের রাজপরিবার এই পদ্মিনী মহলে পদ্মিনীকে বসিয়ে খিলজিকে আয়নার মাধ্যমে রানির রূপ দেখায়।
পদ্মিনীকে দেখায় সময়ের আয়োজন
লোক মুখে শোনা যায়, পদ্মিনী মহলের চারপাশের জলাশয়ে তখন পদ্মফুল ফুটে থাকত। সেই জলের ওপর আলোর প্রতিফলন আর সেই প্রতিফলিত আলোয় পদ্মিনীর মুখ আয়নায় দেখানো হয় খিলজিকে। পদ্মিনীর সেই মুখের শোভায় মোহিত হয়ে ওঠেন খিলজি।
চিতোরের জোহরকুণ্ড
পদ্মিনীকে দেখে মোহিত হয়ে আলাউদ্দিন চিতোর আক্রমণ করলে, একের পর এক রাজপুতানা রাজা নিহত হতে থাকেন। এমন সময়ে রাজপুত সম্মান রক্ষা করতে, দূর্গের গোপন সুড়ঙ্গ দিয়ে গিয়ে, হাজার হাজার রাজপুত মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে জোহরের অগ্নিকুণ্ডে ঝাঁপ দেন রানি পদ্মিনী।
[আরও পড়ুন:রাজস্থানের এইসব জায়গায় আজও লুকিয়ে বহু রহস্য, গা ছমছমে বহু ঘটনা জানুন ফোটোফিচারে]
পদ্মিনী মহলে খিলজি
রাজপুত রক্তে যখন রাঙা হয়ে গিয়েছে গোটা চিতোর, সমস্ত কিছু তছনছ করতে করতে যখন পদ্মিনী মহলের দিকে এগিয়ে আসছেন খিলজি, তখন তিনি জানতে পারেন, পদ্মিনী জোহরকুণ্ডে প্রাণ দিয়েছেন। শোনা যায় এরপর নাকি, পদ্মিনীর শোকে, বেশ কিছুদিন এই পদ্মিনী মহলেই একা রাত্রি যাপন করে দিল্লি ফিরে যান খিলজি।