কেন্দ্র-রাজ্যে ক্ষমতা বিস্তারে বিজেপির পয়লা নম্বর টার্গেট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
রাজ্যে এই মুহূর্তে তৃণমূলের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ বিজেপি। আবার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সবচেয়ে বড় বিরোধীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একসময়ে কংগ্রেস-সিপিএম জোট বেঁধে তৃণমূল কংগ্রসকে বারবার বিজেপির বি টিম বলে কটাক্ষ করেছে। রাজ্যে বিজেপির বাড়বাড়ন্তর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই টার্গেট করেছে বিরোধীরা। অভিযোগ এরাজ্যে মমতাই বিজেপিকে হাত ধরে জায়গা করে দিয়েছেন। যার ফলে এখন বিজেপির এত দাপাদাপি।
তবে আসল চিত্রটা কি ঠিক তাই? রাজ্যে এই মুহূর্তে তৃণমূলের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ বিজেপি। আবার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সবচেয়ে বড় বিরোধীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেভাবে নোট বাতিল থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সহ একাধিক ইস্যুতে মমতা ও তাঁর দল বারবার কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে, প্রতিবাদ করেছে তা অন্য কাউকে করতে দেখা যায়নি।
এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে কংগ্রেস ক্ষয়িষ্ণু দল। সিপিএমের অবস্থা আরও খারাপ। আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে সবচেয়ে ভালো জায়গায় রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসই। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যেখানে প্রায় প্রতিটি রাজ্যে বিজেপির ভোটের রমরমা দেখা গিয়েছে সেখানে একমাত্র বাংলায় বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। সবচেয়ে কম ইলেক্টোরাল কোলেজ এসেছে এরাজ্য থেকেই।
কেন্দ্রেও বিজেপি বিরোধী ফেডেরাল ফ্রন্ট গড়ার ক্ষেত্রে মমতাই সবচেয়ে বেশি আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছেন। ফলে মমতাকে বাগে আনা সবচেয়ে আশু প্রয়োজন বলে মনে করছে বিজেপি নেতৃত্ব।
সারদা-নারদ কাণ্ডে তৃণমূলের বহু নেতা ফাঁসলেও মমতার গায়ে আঁচ লাগেনি। বরং সেই নিয়ে জলঘোলা করতে নেমে উল্টে মমতার ভোটবাক্স উপচে পড়েছে। তাই এবার অন্য রণকৌশল নিতে চলেছে বিজেপি।
মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম সম্প্রতি দুর্নীতি মামলায় জড়িয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধেও কোটি কোটি টাকা কমিশন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রেক্ষিতেই দুর্নীতি ইস্যুতে কংগ্রেসের রবার্ট বঢরা, আরজেডির লালুপ্রসাদ যাদবের পর এবার অভিষেককে খুঁচিয়ে মমতাকে তাক করার চেষ্টা চলছে।
যদিও বিজেপির সমস্ত অভিযোগ তৃণমূল খারিজ করে দিয়েছে। রাজ্যের মানুষের কাছে মমতার কোনও সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নেই। তাঁকে নিয়ে বিজেপি কী বলছে তা ভাবতেও তৃণমূল রাজি নয় বলে জানানো হয়েছে।
তবে বিজেপি আগামী লোকসভা ও তারও পরে রাজ্য বিধানসভা ভোট পর্যন্ত অন্তত তৃণমূল বিরোধিতার সুর চড়িয়ে রাখবে। লোকসভা ভোটে ভালো ফল হলে আরও তেড়ে মমতা বিরোধিতায় সামিল হবে ২০২১ সালের ভোটকে সামনে রেখে। সেখানে ভালো-মন্দের উপরে নির্ভর করবে এরাজ্যে বিজেপির ভবিষ্যত। ততদিন মমতা বিরোধিতায় বিরাম দেবে তা গেরুয়া শিবির।