হাল না ছেড়ে আরেকটি শান্তিচুক্তি তৈরি করে দেখিয়ে দিল কলম্বিয়া
গতমাসে সরকার এবং বিপ্লবীদের মধ্যে প্রথম শান্তিচুক্তি গণভোটে বাতিল হওয়ার পরেও নোবেলজয়ী রাষ্ট্রপতির উদ্যোগ থেমে থাকেনি
বলা হচ্ছিল ব্রেক্সিট-এর পরে কলম্বিয়াও প্রমাণ করল যে প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র মোটেই ভালো জিনিস নয়। চার বছর সময় নিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির সরকার সেখানকার বিপ্লবী রিভোলিউশনারি আর্মড ফোর্সেস অফ কলম্বিয়া বা সংক্ষেপে ফার্ক-এর সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তি সম্পাদনার পরে গণভোটের রায়তে তা নস্যাৎ হয়ে যায়। যদিও কলম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি ইউয়ান ম্যানুয়েল স্যান্তোস এই উদ্যোগের জন্য শান্তিতে নোবেল পান, কিনতু প্রকৃত শান্তিস্থাপনে ব্যর্থই রয়ে যান তিনি।
কিনতু অক্টোবরের গোড়ায় হওয়া সেই গণভোটের রায় প্রতিকূল হলেও স্যান্তোস এবং ফার্ক নেতৃত্ব যে হাল ছেড়ে দেয়নি, তা প্রমাণিত হল বৃহস্পতিবার (নভেম্বর ২৪)। এদিন স্যান্তোস এবং ফার্ক নেতা রড্রিগো লোনদোনো জাতীয় রাজধানী বোগোটাতে একটি নতুন সংশোধিত শান্তিচুক্তিতে সই করলেন। পাঁচ দশক ধরে চলতে থাকা গৃহযুদ্ধ শেষ করতে যে দু'পক্ষই দৃঢ় সংকল্প নিয়ে এগোচ্ছে, তা এই পুনরুদ্যোগের মধ্যে থেকেই পরিষ্কার।
ফার্ক নেতা লোনদোনো তাঁর বিপ্লবী সংগঠনের তরফ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেন এবং গৃহযুদ্ধ শেষ করার ব্যাপারে কলম্বিয়া সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানেরও আহবান জানান সবপক্ষকে।
রাষ্ট্রপতি স্যান্তোস বলেন এই নতুন শান্তিচুক্তিটিকে বাস্তবায়িত করতে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন সরকার এবং ফার্ক -- দু'পক্ষই। কিউবার রাজধানী হাভানাতে এই নিয়ে অনেক আলোচনার পরে শেষ পর্যন্ত সাফল্যের মুখ দেখল এই শান্তিচুক্তি। তিনি বলেন প্রথম চুক্তিটির যাঁরা বিরোধিতা করেছিলেন, তাঁদের বক্তব্যও মাথায় রেখে দ্বিতীয় চুক্তিটি তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন কলম্বিয়ার এই শান্তি প্রচেষ্টা এই সংঘর্ষ-জর্জরিত দুনিয়ার কাছে একটি নিদর্শন হয়ে থাকবে। এই নতুন চুক্তিটির উপর অবশ্য কোনও গণভোট হবে না। শুধু দেশের সংসদে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই।
যথেষ্ট অপরাধ করেও ফার্ক বিপ্লবীদের সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে -- এই অভিযোগে গত ২ অক্টোবর প্রথম শান্তিচুক্তিটিকে প্রত্যাখ্যান করেন কলম্বিয়ার ৫০.২ শতাংশ মানুষ।