গত ১৫ বছরে বিশ্বে তাপপ্রবাহে মৃত্যুর হার ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, দাবি ল্যানসেটের
গত ১৫ বছরে বিশ্বে তাপপ্রবাহে মৃত্যুর হার ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, দাবি ল্যানসেটের
২০০০-২০০৪ সাল থেকে ২০১৭-২০২১ পর্যন্ত বিশ্বে তাপপ্রবাহ জনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাপপ্রবাহের জেরে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রবীণ নাগরিকরা এবং এক বছরের কম বয়সের শিশুরা। ল্যানসেটের একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ১৯৮৬-২০০৫ এর তুলনায় ২০২১ সালে তাপপ্রবাহে ৩.৭ বিলিয়নের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন।
জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা
চরম আবহাওয়া ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ, করোনা মহামারী, জীবন যাত্রার পরিবর্তন, জলবায়ু পরিবর্তন, আর্থিক ও সামাজিক সঙ্কোচন স্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে। জীবাশ্ম জ্বালানীর ওপর ক্রমাগত নির্ভরশীলতা অনেকক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী। ক্রমেই বিভিন্ন দেশে চরম আবহাওয়ার দেখা মিলছে। বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশে তাপপ্রবাহ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাড়ছে মৃত্যুর হার
প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় ক্রমাগত সাধারণ মানুষের জীবন ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চিন, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান এবং অন্যান্য দেশে বন্যার কারণে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। দাবানল গ্রিস, আলজেরিয়া, ইতালি, স্পেনের মতো দেশে ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে এনেছে। অনেক দেশে তাপমাত্রার বৃদ্ধিতে রেকর্ড করেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতেই পারে ব্রিটেনের নাম। চলতি বছর ব্রিটেনে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে চলে গিয়েছে। শীত প্রধান এই দেশে শুধু তাপপ্রবাহের কারণে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
ল্যানসেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে শুধু তাপপ্রবাহের কারণে ২৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। দরিদ্র দেশগুলোতে বিমার সেধরনের ব্যবস্থা নেই বা বেশিরভাগ মানুষ বিমা করাননি। তার জেরে সেখানে আদতে কত ক্ষতি হয়েছে তা অনুমান করা কঠিন। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে একদিকে যেমন তাপপ্রবাহ বাড়ছে, অন্যদিকে, চাষবাসের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। যার জেরে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। উচ্চতাপমাত্রার কারণে ভুট্টা ও গম চাষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্বাস্থ্য
জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। করোনা মহামারী, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা মানুষকে আরও দুর্বল করে দিয়েছে। তারওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর পড়তে শুরু করেছে। যার জেরে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর হার বেড়ে গিয়েছে। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ও মৃত্যু রোধ করতে বিশ্বে স্থিতিবস্থার প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা ক্রমে বেড়েই চলেছে। ল্যানসেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রমাগত জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী তা নয়, জীবাশ্ম জ্বালানির বাজার দূর্বল করে। ভূরাজনৈতিক অস্থিরতাকে বাড়িয়ে দেয়।
ঘুরপথে মহারাষ্ট্রের শিল্প চলে যাচ্ছে গুজরাতে, ক্ষতি ১.৮০ লক্ষ কোটি টাকা