ইয়ান চ্যাপেল ধারাভাষ্যকার হিসেবে নিলেন অবসর, চার দশকেরও বেশি সময়ের বর্ণময় কেরিয়ার
ইয়ান চ্যাপেল মাইক্রোফোন সরিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের অন্যতম সেরা ধারাভাষ্যকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক। আর কিছুদিন পরেই ৭৯ বছর পূর্ণ করবেন। স্কিন ক্যানসার-সহ কিছু শারীরিক সমস্যাও ভোগাচ্ছে। সবমিলিয়ে ক্রিকেট দুনিয়ার কাছে তাঁর এই অবসর নিঃসন্দেহে বড় ক্ষতি।
ক্রিকেট নিয়ে তাঁর ক্ষুরধার বিশ্লেষণ ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে ছিল বড় পাওনা। তাঁর মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে লাভবানও হয়েছেন বহু ক্রিকেটার। ধারাভাষ্যকার হিসেবে বিশ্ববন্দিত চ্যাপেল সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে জানিয়েছেন, অনেক দিন ধরেই ধারাভাষ্যকারের কেরিয়ারে ইতি টানার পরিকল্পনা তিনি করছিলেন। ১৯৮০ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরই কমেন্ট্রি বক্সে প্রবেশ করেছিলেন। আপাতত সেই ইনিংসেরও সমাপ্তি ঘটল। ধারাভাষ্যকার হিসেবে তো বটেই, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও নিজের লেখায় স্পষ্ট কথা বলতে দ্বিধা করেন না চ্যাপেল। টি ২০ লিগের বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির মধ্যেও টেস্ট ক্রিকেট স্বমহিমাতেই থাকবে বলে আশাবাদী তিনিয
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সময়কার কথা বলতে গিয়ে চ্যাপেল বলেছেন, একদিন টেস্ট চলাকালীন ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম পাঁচটা বেজে ১১ মিনিট হয়ে গিয়েছে। তখনই অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম। ধারাভাষ্যকার হিসেবেও কখন ছাড়ব সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছিল। কয়েক বছর আগে মাইনর স্ট্রোক হয়। কিন্তু তাতে বড় কোনও ক্ষতি হয়নি বলে আমি ভাগ্যবান। কিন্তু ওই হৃদরোগ সব কিছু ধীরে ধীরে কঠিন করে দিতে থাকে। এখান থেকে ওখানে সফর করা, সিঁড়ি ভাঙা সমস্ত কিছুই ক্রমাগত কঠিন হতে থাকে। কিংবদন্তি রাগবি লিগ কমেন্টেটর রে ওয়ারেনের উক্তি মনে করান চ্যাপেল। ধারাভাষ্যকার হিসেবে অবসর নেওয়ার সময় ওয়ারেন বলেছিলেন, ধারাভাষ্যকার সব সময় ভুল করার চেয়ে একটি বাক্য় দূরে থাকেন।
রিচি বেনো, বিল লরি, টনি গ্রেগের মতোই চ্যাপেলও চ্যানেল নাইনের কিংবদন্তি ধারাভাষ্যকারদের একজন। তিন দশকেরও বেশি সম্পর্ক। এই চ্যানেল অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট স্বত্ত্বের অধিকারী। চ্যানেল নাইন থেকেও তাঁর ছাঁটাই হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে জানিয়েছেন চ্যাপেল। তিনি বলেন, চ্যানেল নাইনের কর্ণধার কেরি প্যাকার কয়েকবার আমাকে ছাঁটাই করার বিষয়ে মনস্থির করেছিলেন। একদিনের ক্রিকেট ছিল তাঁর সন্তানসম। সেই ওয়ান ডে ক্রিকেট নিয়ে চ্যাপেলের কিছু মন্তব্য খুশি করতে পারেনি প্যাকারকে। সে কারণেই ওই ভাবনা। যদিও সেই ঝড়ের পরিস্থিতির মধ্যেও শেষ অবধি অটুটই ছিল চ্যাপেলের সঙ্গে চ্যানেল নাইনের সম্পর্ক। ধারাভাষ্যকার হিসেবে তিনি কেমন তা বিচারের ভার দর্শক বা শ্রোতাদের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন চ্যাপেল। এমনকী সমালোচনাও এখন আর গায়ে মাখেন না।