মার্শের শতরান, ম্যাক্সওয়েলের ক্যামিও! শেষের লড়াইয়ে অজিদের ৩০০-র মধ্যেই বেঁধে রাখল ভারত
অ্যাডিলেডে শন মার্শের শতরান ও ম্যাক্সওয়েলের ক্যামিও ইনিংসের জোরে ভারতের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ওডিআইতে অস্ট্রেলিয়ার বড় রান তুলল।
অ্যাডিলেডে ১২৩ বলে ১৩১ রানের দুরন্ত ইনিংস খেললেন শন মার্শ। তাঁর সঙ্গে জুটি বেঁধে ৪৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস এল ম্যাক্সওয়েলের ব্য়াট থেকেও। কিন্তু এই দুজনকেই আউট করে দিয়ে ভারতকে লড়াইতে ফেরালেন ভুবনেশ্বর কুমার। দেরীতে হলেও ভারতীয় বোলারদের পাল্টা লড়াইতে দ্বিতীয় ওডিআইতে ৫০ ওভার ব্য়াট করে ৯ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া আটকে গেল ২৯৮ রানেই।
আরও একবার শন মার্শ দেখালেন এই অস্ট্রেলিয়া দলের দুর্বল ব্য়াটিং লাইনআপে, কেন তিনিই প্রধান ভরসা। টেস্ট ক্রিকেটের সাদা জার্সি ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ার নতুন হলুদ-সবুজ জার্সি গায়ে চড়াতেই ফের একদিনের ম্য়াচের আগুনে ফর্মে দেখা গেল তাঁকে। ৩৫ বছর বয়সী এই অজি ব্য়াটসম্য়ান এদিন ইনিংস সাজালেন ১১টি চার ও ৩টি ছয় দিয়ে।
ফর্মে ফিরেন ম্য়াক্সওয়েলও। 'ম্য়াড-ম্যাক্স'-এর মতো না হলেও এদিন তিনি মার্শের সঙ্গে যখন ব্য়াট করছিলেন অস্ট্রেলিয়ার রান ৩০০-এর অনেক বেশি হবে মনে হচ্ছিল। এদিনও তিনি ৭ নম্বরেই নামেন। তবে ৩৭ তম ওভারে শামির বলে স্টইনিস (২৯) আউট হওয়াতে তিনি সেট হওয়ার যথেষ্ট সময় পান।
তবে তাঁকে ফর্মে ফিরতে সাহায্য করলেন ভারতের হয়ে এদিন অভিষেক হওয়া জোরে হোলার মহম্মদ সিরাজও। ২৪ বছর বয়সী পেসার, স্লো পিচে নাগাড়ে জোরের উপর শর্ট বল করে গেলেন। তার বড় মূল্য চোকাতে হল ভারতকে। ১০ ওভারে ৭৬ রান দিলেন তিনি। প্রথম থেকেই তিনি মার খেলেও, হাতে আর বিকল্প না তাকায় তাঁকে দিয়েই ১০ ওভার করাতে বাধ্য হলেন বিরাট।
তিনি অবশ্য তিনবার ম্যাক্সওয়েলকে আউট কাছাকাছি পৌঁছেছেন। প্রথমবার মাঠের আম্পায়ার এলবিডব্লু দিলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ম্য়াকস। পরের বার তাঁর একটি মিসটাইম্ড শট ডিপ মিড উইকেট ফিল্ডারের ঠিক সামনে পরে। আর তারপর আরেকটি বলে এক্সট্রা কভারে একটি কঠিন ক্যাচ ফেলেন রোহিত শর্মা।
তবে এদিন অনেকদিন বাদে একদিনের ক্রিকেটে আগের ছন্দে বল করতে দেখা গেল শামিকে। নতুন বলের পাশাপাশি পুরনো বলেও তিনি দারুণ প্রভাবিত করলেন। এদিন ভুবির সঙ্গে ভারতের বোলিং আক্রমণ শুরু করেছিলেন তিনিই। এক প্রান্ত থেকে তিনি একেবারে রান চেপে দেওয়ায় অপর প্রান্তে ভুবি আক্রমণাত্বক হয়ে ওটার সুযোগ পান।
যার ফল স্বরূপ এদিনও ৬ রানেই তিনি ফেরান অস্ট্রেলিয় অধিনায়ক ফিঞ্চকে। আর এরপরই একটি দুর্ধর্ষ বাউন্সারে অপর ওপেনার অ্যালেক্স কেরি (১৮) কে ফিরিয়ে দেন শামিও। এরপর অবশ্য তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম উইকেটে অস্ট্রেলিয়া ৫০ রানের জুটি গড়তে সক্ষম হয়েছে।
তবে এই পর্বে ভারতের নায়ক ছিলেন জাদেজা। পাণ্ডিয়ার অনুপস্থিতিতে তিনি কিন্তু প্রতিদিনই বিশ্বকাপের দলে নিজের অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছেন। তিনি মাঠে তাকা মানে, বলে হোক ফিল্ডিংয়ে ভারতকে উইকেট এনে দিতে পারেন। এদিনও যেমন ২১ রানের মাথায় খোয়াজা পয়েন্টে তাঁর দিকে বল ঠেলে সিঙ্গলস নিতে গিয়েছিলেন। পরের কয়েক সেকেন্ডে খোয়াজা ক্রিজে পৌঁছনোর আগেই স্টাম্প ভেঙে দেয় জাদেজার নিখুঁত থ্রো। হ্য়ান্ডসকম্ব (২০)-কে ফেরায় বিখ্য়াত বোলার জাদেজা, উইকেটরক্ষক ধোনি জুটি।
তবে এদিন ভারতে হয়ে সেরা বোলার অবশ্যই ভুবনেশ্বর কুমার। ম্যাচের একদিন আগে তাঁকে নেটে জুতো রেখে ইয়র্কার অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছিল। এদিন তিনি ১০ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন। ডেথে একই ওভারে ভয়ঙ্কর মার্শ ও ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে ভারতকে ম্য়াচে ফেরান তিনিই। শেষের দিকের ওভারে ভাল বল করেন শামিও। তবে কূলদীপের এই ম্য়াচটি ভাল গেল না। তিনি এই নিয়ে পঞ্চম ম্যাচে উইকেটহীন থাকলেন। ১০ ওভারে রানও দিলেন ৬৬।