রামপুরহাট কাণ্ড: বগটুইয়ে আগুন নিভিয়ে পোড়া বাড়িতে ঢুকতে দশ ঘন্টা অপেক্ষা করেছিল দমকল
রামপুরহাটের বগটুই হত্যাকাণ্ডে প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে৷ শনিবার একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বগটুইয়ে বাড়িগুলিতে আগুন লাগার পর দমকল কর্মীরা প্রায় দশ ঘণ্টা অপেক্ষা করেছিল আগুন নিভিয়ে পোড়াবাড়িতে ঢুকতে। রামপুরহাট থানায় নিযুক্ত একজন সাব-ইন্সপেক্টর তাঁর অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন তীব্র উষ্ণতার কারণে দ্রুত পোড়া বাড়িগুলিতে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। অভিযোগকারী তাঁর এফআইআরে বলেছেন যে তিনি আগুনের খবর পেয়ে বগটুই গ্রামে দ্রুত পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। এবং সেখানে দমকল কর্মীরা অগ্নিদগ্ধ আটটি ঘর দেখতে পান৷ তারা প্রথমে ভেবেছিলেন খড়ের স্তূপে বিধ্বংসী আগুন লেগেছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে সাব ইন্সপেক্টর রমেশ সাহাকে ডেকে ফায়ার ব্রিগেড কর্মীদের জানাতে বলা হয়েছিল। অভিযোগকারী তার ছেলে ও স্থানীয় লোকজন নিয়ে বালতির সাহায্যে জল ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও আগুন ধ্বংসাত্মক আকার নিয়ে নেওয়াতে নেভানো সম্ভব হয়নি৷ এরপর রাত ১০টা ২৫ -এর দিকে ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীরা দুটি ফায়ার টেন্ডার নিয়ে এসে কাজ শুরু করেন কিন্তু প্রচণ্ড উত্তাপের কারণে ওই সময় পোড়া বাড়িগুলিতে ঢোকা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও জানিয়েছেন আহত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের খোঁজ করার প্রক্রিয়া ২২ মার্চ (পরের দিন) সকালে প্রায় ০৭.১০ এ শুরু হয়। এরপর ফায়ার ব্রিগেড কর্মীরা আবার গ্রামে এসে পুলিশের অনুসন্ধান অভিযানে যোগ দেয়৷ এফআইআর-এ অভিযোগকারীর বিবৃতি অনুসারে বলা হয়েছে যে চারজন পুড়ে আহত হয়েছেন এবং তাদের অবিলম্বে রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অভিযোগকারী আরও দাবি করেছেন যে বেশিরভাগ বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছিল এবং আগুন লাগানোর আগে লুটপাট করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত মঙ্গলবার বীরভূমের রামপুরহাট এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ভাদু শেখকে বোম মেরে হত্যা করে কিছু দুষ্কৃতি। অভিযোগ এই হত্যার পরেই সন্ধ্যের দিকে বড় সংখ্যায় দুস্কৃতিরা এসে বগটুই গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগায়৷ তার আগে বাড়ির সদস্যদের মারোধোর করে এবং ওই বাড়িগুলিতে আহত লোকজনকে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।অভিযোগে মোট আটজনকে (যদিও বিভিন্ন মাধ্যমে সংখ্যাটা ১১ এবং ১২ও বলা হচ্ছে) পুড়িয়ে মারা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে রাজ্য পুলিশ সিট গঠন করে এই মামলার তদন্ত শুরু করলেও কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ মামলাটির তদন্ত হস্তান্তর করেছে এবং সিবিআই এই মামলার তদন্ত শুরু করেছে।