বঙ্গ বিজেপিতে বিভীষণদের খোঁজ দিলেন অনুপম, আলোড়ন তৈরি হল রাজ্য রাজনীতিতে
দলের মধ্যেই রয়েছে বহু বিভীষণ। তাঁরাই বিজেপির উত্তরণে বাধার সৃষ্টি করছে। পরোক্ষে কার দিকে অভিযোগের তির ছুড়লেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা? বঙ্গ বিজেপিতে তোলপাড় শুরু হয়ে গেল অনুপম-বচনে।
দলের মধ্যেই রয়েছে বহু বিভীষণ। তাঁরাই বিজেপির উত্তরণে বাধার সৃষ্টি করছে। পরোক্ষে কার দিকে অভিযোগের তির ছুড়লেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা? বঙ্গ বিজেপিতে তোলপাড় শুরু হয়ে গেল অনুপম-বচনে। তাঁর মন্তব্য নিয়ে আলোড়ন পড়ে গেল রাজ্য রাজনীতিতেও। পৌনে ১০ মিনিটের একটি ফেসবুক লাইভে অনুপম হাজরা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দিয়েছেন।
রাজ্য রাজনীতিতে ফায়দা তুলতে পারছে না বিজেপি
অনুব্রত মণ্ডলের মতো হেভিওয়েট নেতা গ্রেফতার হয়েছেন গরু পাচার মামলায়। গ্রেফতার হয়েছেন 'নম্বর টু' পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপরও রাজ্য রাজনীতিতে ফায়দা তুলতে পারছে না বিজেপি। কোনও ইস্যুই তারা কাছে লাগাতে পারছে না। ব্যর্থ বঙ্গ বিজেপি। সেই কথাই অনুপম হাজরা তুলে ধরেছেন নিজের ফেসবুক লাইভে, যা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।
অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরও কোনও উৎসাহ নেই
বীরভূমে জমি তৈরি হয়ে গিয়েছে বিজেপির বিস্তারের জন্য। তারপরও কোনও আন্দোলন করতে পারছে না বিজেপি। তাই বিজেপির জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন অনুপম। অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরও কোনও উৎসাহ নেই। কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন। কেন বীরভূম জেলা নেতৃত্ব চুপ করে বসে আছে, তিনি কোনও ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না।
বিজেপিতে বিভীষণদের নাম ফাঁস কররা হুঁশিযারি
দলের রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও তিনি সরব হয়েছেন। তাঁরাও অনেক কিছু জেনেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। অনুপম বলেন, আমি তথ্য নিয়ে কথা বলি। বীরভূম জেলার অনেক বিজেপি নেতার তৃণমূলের সঙ্গে আঁতাত রয়ছে। সেই সমস্ত তৃণৃমূল নেতাদের দয়াতেই অনেক বিজেপি নেতা দিনযাপন করেছেন। বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এনে আগামী দিনে সেই সমস্ত নেতার নাম ফাঁস করে দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অনুপম হাজরা।
জেলার অনেক বিজেপি নেতার মাথায় ‘দাদা'র হাত
অনুপম হাজরা বলছেন, জেলার অনেক বিজেপি নেতার মাথায় 'দাদা'র হাত রয়েছে। তবে যে দাদারই হাত থাকুক না কেন, আমি চুপ করে বসে থাকব না। অনুব্রত মণ্ডলের জেলা থেকেই তৃণমূলের সাংসদ হিসেবে উত্থান অনুপমের। তারপর মুকুল রায়ের হাত ধরে বঙ্গ বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। এখন তিনি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা।
বিজেপির সমালোচনা করতে ছাড়লেন না অনুপম
আবার ২০১৯-এ বিজেপির পদপ্রার্থী হয়েও তিনি অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে এসেছিলেন। বলেছিলেন, আমি কাকার আশীর্বাদ নিতে এসেছি। তারপর বিজেপির টিকিটে তিনি হারলেও দলে তাঁর গুরুত্ব বেড়েছে মুকুল-সৌজন্যে। তিনি বরাবরই মাঝে-মধ্যে সমালোচনা করেন দলের নেতাদের। তিনি এবারও বিজেপির সমালোচনা করতে ছাড়লেন না।
বিজেপি নেতারা ঘরে ঢুকে বসে রয়েছেন
অনুপম হাজরা বলেন, অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর আমি বোলপুরে গিয়েছিলাম। দলের নেতারা সবাই তা জানতেন। অথচ কেউই কোনও আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে আমার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেননি। আমার সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে আসেনি। তাঁর মতে, এটাই তো সময়, বীরভূমকে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। কিন্তু কারও মধ্যে তেমন কোনও উৎসাহ আমি দেখতে পাচ্ছি না। লাগাতার আন্দোলন করার দরকার, অথচ বিজেপি নেতারা ঘরে ঢুকে বসে রয়েছেন।
বিভীষণদের খোঁজ পেয়েছেন বিজেপিতে!
অনুপমের এই সমালোচনায় বিজেপিতে তৈরি হয়েছে অস্বস্তি। সুকান্ত মজুমদার এদিন একপ্রকার এড়িয়ে গিয়েছেন অনুপমের সমালোচনা। তিনি বলেন, উনি কী বলেছেন জানি না। তবে ওনার সঙ্গে কথা বলব। আবার তৃণমূলত্যাগী আর এক বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পাণ্ডা বলেন, উনি তো বিরাট বড়মাপের নেতা। তাই উনি যেহেতু বিভীষণদের খোঁজ পেয়েছেন বিজেপিতে, ওনার দলের অন্দরেই তা জানানো উচিত।