সব প্রেমই কি কাঙ্খিত 'উপহার' পায়! 'নগরকীর্তন'-কোন পথ দেখাচ্ছে
'দেখা করা'.. 'ডেটিং'.. ' আবশ্যিক ঘনিষ্ঠতা',.. প্রেম মানেই কি বেশ কিছু ঘুঁটি নিয়ে ছকে ছকে 'দাবা' খেলতে হবে!
'দেখা করা'.. 'ডেটিং'.. ' আবশ্যিক ঘনিষ্ঠতা',.. প্রেম মানেই কি বেশ কিছু ঘুঁটি নিয়ে ছকে ছকে 'দাবা' খেলতে হবে! আর চার পাঁচজন যেভাবে ভালোবাসাকে প্রকাশ করে সেভাবেই চিনিয়ে দেওয়া নিয়ম মেনে চলতে হবে প্রেমের রাস্তায়? এই তোখে আঙুল দেওয়া নিময়গুলো থেকে কি বেরিয়ে অন্যভাবে প্রেমকে দেখতে পাওয়াটা খুব কঠিন কাজ? কিছু চেনা, আর কিছু অচেনা প্রশ্নের জবাব দিয়েছে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি 'নগরকীর্তন'।
চিত্রনাট্য
'ফুলবডি মেয়ে না হওয়া পর্যন্ত আমার কাছে এস না।' এই বক্তব্যের উত্তর আসে 'আমায় ছুঁয়ে কোথাও কি তোমার মনে হয় আমি ছেলে?'এই কাহিনি পুঁটি ও মধুর সম্পর্কের। এই ছবির একদিকে মধু (ঋত্বিক চক্রবর্তী) আর অন্য়দিকে পুঁটি (ঋদ্ধি সেন) । অসামান্য সারল্য বুকে নিয়ে এক নিষ্পাপ প্রেমের আঁচড় কেটে যায় এই দুই চরিত্র। আর সেই প্রেমের চাওয়া পাওয়ার চোখ উজার করে বেরিয়ে আসে 'চেয়েও না হতে পারার' কান্না..চিৎকার ..আর্তনাদ। তবুও সেই যন্ত্রণায় মলম হিসাবে বার বার উঠে আসে আত্মিক প্রেম। কখনও 'শরীর' , কখনও 'ভালোলাগা' এই প্রেমের আকাশে মেঘবৃষ্টির মত খেলা করতে থাকে। কিন্তু শেষে , এই খেলার পরিণতি কী? তার উত্তর দিয়েছে অসামান্য এই ছবি।
পরিচালনা
ঠিক পাহাড়ি নদী যেভাবে কুলকুল শব্দে স্বচ্ছ জল নিয়ে বয়ে চলে , কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের এই ছবিও সেরকমই। ছবির প্রতিটি পরত বলে দিতে পারে এই ছবি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের চেনা ঘরানায় গল্প বলার ছবি। জীবন দর্শন, উপলব্ধিকে মিলিয়ে মিশিয়ে এক অসামান্য গল্প বলেছেন পরিচালক কৌশিক।
অভিনয়
ঋদ্ধি সেনকে 'নগরকীর্তন' ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে সেরা অভিনেতা বেছে নেওয়ার সময় তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন শেখর কাপুর। ছবি মুক্তি পেতেই ঋদ্ধির অভিনয় জানান দিয়েছে, কেন সেই প্রশংসার যোগ্য তিনি। পাশাপাশি, এক চুলও নজর সরানো যায়নি ঋত্বিকের থেকে। এই ছবি যতটা ঋদ্ধির, ততটাই ঋত্বিকের। আর ছবির শেষের পর মানবীর অভিনয় দর্শকমনে গেঁথে যাওয়া এক গানের মতো।
সবশেষে
'ফুরায় যা তা ফুরায় শুধু চোখে '.. সব ফুরিয়েও সমস্তটাকে জাপ্টে নেওয়ার যে সুখ, তা দিতে পারে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের 'নগরকীর্তন'। আর সেই সুখানুভূতির জন্য চলে যেতেই পারেন কাছাকাছি কোনও মাল্টিপ্লেক্সে।