কঙ্গনা ও তাঁর বোনের বিরুদ্ধে তিনটে মামলা স্থানান্তর করা হোক হিমাচল প্রদেশে, আর্জি সুপ্রিম কোর্টে
বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত ও তাঁর বোন রঙ্গোলি চাণ্ডেল তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর পোস্টের জেরে মুম্বইতে তাঁদের বিরুদ্ধে তিনটে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে। তবে এই তিনটে মামলাকে হিমাচল প্রদেশে স্থানান্তর করার জন্য মঙ্গলবারা তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। আবেদনে বলা হয়েছে, 'মুম্বইয়ে বিচারকাজ চললে আবেদনকারীরা জীবনের ঝুঁকির হুমকির মুখোমুখি হতে পারেন, কারণ আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে শিবসেনার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা রয়েছে।’
কঙ্গনা ও রঙ্গোলি আইনজীবী নীরজ শেখরের মাধ্যমে এই তিনটে মামলার স্থানান্তর চান হিমাচল প্রদেশে।
আইনজীবী আলি কাসিফ খান দেশমুখ মুম্বইয়ের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কঙ্গনার বিরুদ্ধে হিন্দু–মুসলিম সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টায় টুইট করেছেন এই অভিযোগ আনেন। আইনজীবী আলি কাসিফ খান দেশমুখ অন্ধেরি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগ করেছিলেন কঙ্গনা ও রঙ্গোলির বিরুদ্ধে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল দুই বোন হিন্দু–মুসলিমদের মধ্যে বৈষম্যের চেষ্টা করছেন এবং বিচার ব্যবস্থাকে উপহাস করেছেন। এই অভিযোগের পরই বান্দ্রা আদালত দুই বোনের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেন। দুই বোনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২১, ১২৪এ, ১৫৩এ, ১৫৩বি, ২৯৫এ, ২৯৮ এবং ৫০৫ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। আইনজীবীর অভিযোগে কঙ্গনার বিভিন্ন টুইটের কথা উঠে এসেছিল, যেখানে কঙ্গনা 'মুম্বইকে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর’ বলে উল্লেখ করেছিলেন, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অনিল দেশমুখকে 'তালিবান’ বলে সম্বোধন করেন।
বরিষ্ঠ গীতিকার জাভেদ আখতার মানহানি মামলা করেন কঙ্গনা রানাওয়াতের বিরুদ্ধে। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কঙ্গনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে রিপাবলিক টিভিতে কঙ্গনা রানাওয়াত সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এক সাক্ষাতকারে জাভেদ আখতারের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক মন্তব্য করেন। ২০২০ সালের নভেম্বরে জাভেদ আখতার আইনজীবী জয় ভরদ্বাজের মাধ্যমে কঙ্গনা রানাওয়াতের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত অভিযোগ জানান এবং ৪৯৯ ও ৫০০ ধারায় এফআইআর দায়ের করেন। জাভেদ আখতারের প্রকৃত অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন যে গত বছরের ১৯ জুলাই রিপাবলিক টিভিতে কঙ্গনা সাক্ষাতকার দিতে গিয়ে মিথ্যা বিবৃতির মাধ্যমে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। জাভেদ আখতারের বয়ান রেকর্ডের পর আদালত বিষয়টি জুহু পুলিশকে তদন্ত করার জন্য বলে। এর পাশাপাশি ১ মার্চ কঙ্গনার বিরুদ্ধে জামিন যোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে।
কাস্টিং ডিরেক্টর মুনাওয়ার আলী সৈয়দ রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেন কঙ্গনা ও তাঁর বোনের বিরুদ্ধে। তিনি অভিযোগ করেন যে কঙ্গনা এবং তাঁর বোন রঙ্গোলি সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরির চেষ্টা করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। সৈয়দ অভিযোগ করেছেন যে দুই বোন ইচ্ছাকৃতভাবে মহারাষ্ট্র সরকারের প্রতি ঘৃণা ও বিচ্ছিন্নতা আনতে এই টুইটগুলি করেছেন।
এই দুই বোন এখন চাইছেন এই তিনটে মামলা তাঁদের নিজস্ব আদিবাড়ি যেখানে, সেই হিমাচল প্রদেশে স্থানান্তর করে দেওয়া হোক। কারণ কঙ্গনা ও রঙ্গোলি এখন সেখানেই বেশিরভাগ সময় থাকছেন।