করোনা ভাইরাসের জন্য বিপুল ক্ষতির মুখে টেলিভিশন–ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি
বন্ধ সিনেমাহল, স্থগিত শুটিং ও প্রচারের কাজ, অভিনেতা–অভিনেত্রীদের সাক্ষাতকারও বন্ধ। এরকম পরিস্থিতিতে টেলিভিশন ও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা ভাইরাসের আতঙ্কই এর জন্য দায়ি।
কেরলকে অনুসরণ করে জম্মু–কাশ্মীর, দিল্লি, কর্নাটক ও মুম্বইয়ে শুক্রবার থেকে বন্ধ শপিং মল, জিম ও ,সিনেমা হলও। হু ইতিমধ্যেই এই রোগকে মহামারি ঘোষণা করেছে। ঠিক কি পরিমাণ অর্থ ঝুঁকিতে রয়েছে তা সঠিকভাবে নির্ধারণ করা কঠিন তবে একমাত্র দিল্লির সিনেমাহলগুলিতে এক টাকাও আয় না করে আগামী ১০ দিনে ২ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা লোকসান হতে পারে বলে জানিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিবেশক জোগিন্দর মহাজন, যিনি দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে মোশন পিকচারস অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি। তিনি বলেন, 'দিল্লিতে ১৫০টি সিনেমা হল রয়েছে, সরকারের নির্দেশে ৩১ মার্চ পর্যন্ত তা বন্ধ থাকবে। সকলেই লোকসানের মুখ দেখছে কারণ যদি সিনেমাহল নাও চলে তাও আপনাকে বেতন ও ইলেকট্রিক বিল দিতে হবে। অতীতে বিভিন্ন বনধের কারণে সিনেমা হলগুলি বন্ধ রাখা হত। ১৯৮৪ সালে সাম্প্রদায়িক হিংসার কারণে সিনেমা হলগুলি বন্ধ ছিল তিন–চারদিনের জন্য। ক্ষতির অনুমান করা এখন কঠিন তবে অনেক অপ্রত্যক্ষ ব্যয়ও রয়েছে।’
ট্রেড পণ্ডিতদের মতে, বড় বাজেটের বলিউড ছবিগুলি ১৫–২০ কোটি খরচ করে ছবির প্রচারে এবং মাধারি বাজেটের ছবি প্রচারে ব্যয় করে ৫ কোটির আশেপাশে। অক্ষয় কুমার অভিনীত 'সূর্যবংশী’, সম্প্রতি এই ছবির ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের জেরে এই ছবির মুক্তির দিন পিছিয়ে যায়। এই আতঙ্কের মধ্যেই মুক্তি পেয়েছে ইরফান খান, করিনা কাপুর, রাধিকা মদন অভিনীত 'অংরেজি মিডিয়াম’। কিন্তু সব সিনেমা হলগুলি বন্ধ থাকায় চলচ্চিত্র নির্মাতারা ছবিটি ফের মুক্তি করানোর কথা চিন্তাভাবনা করছেন। ইতিমধ্যে সিনেমা হলে দর্শকদের সংখ্যা গভীরভাবে হ্রাস পেয়েছে এবং যে ছবিটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা হল টাইগার শ্রফের বাগী–৩। মুম্বইয়ের চলচ্চিত্র পরিবেশক রাজেশ থাদানি বলেন, '৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে বা তারও বেশি। দিল্লি, কেরল এবং জম্মু–কাশ্মীরেও সিনেমা হলগুলি বন্ধ পড়ে রয়েছে। বড় বড় সিনেমাগুলির মুক্তি পিছিয়ে গিয়েছে। বাগী–৩–এর লোকসান হয়েছে ১০ শতাংশ।’
তবে শুধু সিনেমা হলই নয় বেশ কিছু রাজ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল–কলেজও। ফলে পড়ুয়াদের পঠন–পাঠনেও বেশ সমস্যা হচ্ছে। সরকারের থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে জনবহুল এলাকাগুলি এড়িয়ে চলাই ভালো। যে কারণে শপিং মল, সিনেমা হলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষ যাতে সুরক্ষিত থাকে তার জন্যই এ ধরনের বন্দোবস্ত।