ভূতে–মানুষে টানাটানি, কালীপুজোয় আসছে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের পরিচালনায় ‘বল্লভপুরের রূপকথা’
পরিচালক হিসাবে হাতেখড়ি হয়েছিল উইলিয়াম শেক্সপিয়ার অনুপ্রাণিত 'মন্দার' দিয়ে আর বড়পর্দায় অভিষেক ঘটল বিখ্যাত নাট্যকার বাদল সরকারের হাত ধরে। কথা হচ্ছে অভিনেতা-পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্যের। তাঁর পরিচালনায় আসতে চলেছে ভৌতিক-হাস্যরসাত্মক সিনেমা 'বল্লভপুরের রূপকথা'। অনির্বাণ তাঁর সিনেমা পরিচালনার জগতে প্রবেশের জন্য বেছে নিয়েছেন নাট্যকার বাদল সরকারের গল্পকেই। বুধবার এই সিনেমার ট্রেলার মুক্তি পেল আনুষ্ঠানিকভাবে।
কী বলছেন পরিচালক অনির্বাণ
দক্ষিণ কলকাতার এক শপিং মলের মাল্টিপ্লেক্সে এই সিনেমার ট্রেলার লঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্য, অভিনেত্রী সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যম। ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানে অভিনেতা-পরিচালককে প্রথম ছবির জন্য আশীর্বাদ জানিয়ে গেলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী তথা পরিচালিকা অপর্ণা সেন। ছবি প্রসঙ্গে অনির্বাণ বলেন, 'ভূতের সিনেমা হলেও এটা কিন্তু পুরোদস্তুর একটি হাসির সিনেমা। বাদল সরকারকে দীর্ঘদিন ধরে নাট্য জগতের শ্রেষ্ঠ কমেডিয়ান বলা হয়। ১৯৬৩ সালের লেখা নাটক নিয়ে আমরা কাজ করেছি। বাদল সরকারের ওপর আত্মবিশ্বাস যেমন আছে আমাদের ওপরও একটু রয়েছে। দেখা যাক কী হয়।' তবে অনির্বাণ ভট্টাচার্য স্পষ্ট জানান যে ওটিটিতে মন্দার করতে গিয়ে যতটা না কঠিন লেগেছে তার চেয়েও বেশি কঠিন সিনেমায় পরিচালনার কাজ করা।
পরিচালক অনির্বাণ খুবই পারফেক্ট
এই সিনেমার অন্যতম অভিনেত্রী সুরঙ্গনা বলেন, 'অনির্বাণ দার সঙ্গে কাজ করতে খুবই ভালো লেগেছে। পরিচালক অনির্বাণ খুবই পারফেকশনিস্ট। অনির্বাণ দার কাজ আমার ভীষণভাবে ভালো লেগেছে। তবে এখনই নিজের চরিত্র সম্পর্কে পুরোটা বলব না, পরিচালকের নিষেধ রয়েছে।' ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন সত্যম ভট্টাচার্য, সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এছাড়াও রয়েছেন থাকছেন শ্যামল চক্রবর্তী, কৃপাবিন্দু চৌধুরী, সুরজিৎ সরকার, সুমন্ত রায়, দেবরাজ ভট্টাচার্যরাও। চিত্রনাট্য লিখেছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য এবং প্রতীক দত্ত ৷ একেবারে কালীপুজোর আবহে মুক্তি পেতে চলেছে 'বল্লভপুরের রূপকথা'। হরর-কমেডি সিনেমা হলেও তা সপরিবারে দেখার মতো সিনেমা।
বল্লভপুরের ট্রেলার
ট্রেলারে দেখা গিয়েছে, 'বল্লভপুর'-এর পুরনো রাজবাড়ি, আর তাকে কেন্দ্র করে ঘটে চলা অদ্ভূতুড়ে কাণ্ডকারখানা নিয়ে এগোবে এই ছবির গল্প। ভূপতি রায় ভুঁইয়া বাহাদুর- রাজ পরিবারের বংশোধর। পাওনাদারদের টাকা মেটানোর জন্য একটা ফন্দি আঁটে সে। বাদশাহী চাল দেখিয়ে, বাদশাহী খানা খাইয়ে 'জলের দর'-এ এই বাড়ি বিক্রি করতে চায় সে। কিন্তু 'বাঙালি ভূত' রঘুদা-র রয়েছেন সে এই রাজবাড়িতে! ঘড়ির কাঁটা রাত ১১টা ছুঁলেই আগমন হয় তাঁর। রাজবাড়ি আগলে রাজত্ব চালাচ্ছেন তিনিই। ৪০০ বছর ধরে বল্লভপুরের রাজবাড়িতে 'ভূত-মানুষে আলাপ-বিলাপ' চলছে। আর এই কাহিনিতে থাকছে সত্যম-সুরঙ্গনার প্রেমের ছোঁয়াও।
অভিনেতা হিসাবে দারুণ অনির্বাণ
অভিনেতা হিসাবে তিনি কতটা খাঁটি সোনা তা এতদিনে জেনে গিয়েছে বাঙালি। টলিউডে একের পর এক সিনেমায় প্রকাশ পেয়েছে তাঁর অভিনয় দক্ষতা। ব্যোমকেশ চরিত্রে অনির্বাণ যেন পারফেক্ট। আর 'মন্দার'-এ দর্শক পেয়েছে সম্ভাবনায় ভরপুর পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে। থিয়েটার তাঁর শিকড়, ছবির দুনিয়াতে এসেও সে কথা ভুলে যাননি অনির্বাণ।