করোনা মহামারীর ভারতে যুব সমাজের মধ্যে বেকারত্বের হার আরও বাড়বে, আশঙ্কা রিপোর্টের
করোনা মহামারীর ভারতে যুব সমাজের মধ্যে বেকারত্বের হার আরও বাড়বে, আশঙ্কা রিপোর্টের
করোনা মহামারী শুধু শরীরের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে তা নয়, কর্মসংস্থানের দিক থেকে দেশের যুব সমাজ করোনার জন্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার তরফে গ্লোবাল এমপ্লয়মেন্ট ফর ইয়ুথ ২০২২ রিপোর্ট বুধবার প্রকাশ করা হয়। রিপোর্টে জানানো হয়, করোনা মহামারীর জেরে ভারতের তরুণ সমাজ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারতে ২০২১ সালে কর্মসংস্থার ব্যাপক অবনতি হয়। যুব সমাজের কর্মসংস্থানের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুনরুদ্ধার কর এখনও সম্ভব হয়নি বলেই রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
চলতি বছরে বাড়বে বেকার যুবকদের সংখ্যা
রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, করোনা মহামারীর জেরে ১৫ থেকে ২৪ বছরের তরুণরা কর্মক্ষেত্রে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বয়সসীমার তরুণরা প্রাপ্ত বয়স্কদের থেকে বেশি পরিমাণে চাকরি বা কাজ হারিয়েছেন। রিপোর্টে আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০২২ সালে বেকার যুবকদের সংখ্যা ৭৩ মিলিয়নে পৌঁছে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে ২০২১ সালের থেকে বেকার যুব সমাজের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হবে। ২০২১ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭৫ মিলিয়ন। কিন্তু করোনা মহামারীর আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ৬৯ মিলিয়ন বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।
ভারতে তরুণদের কর্মসংস্থান কমছে
রিপোর্টে ভারতের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, কর্মসংস্থানে যুবকদের অংশগ্রহণের হার ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ০.৯ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে, প্রাপ্ত বয়স্কদের এই সময়ে কর্মসংস্থানে অংশ নেওয়ার হার ২ শতাংশ বেড়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইন্ডিয়ান ইকোনমি মনিটরিং সেন্টারের পরিচালনায় একটি সমীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে প্রথম নয় মাসে কর্মসংস্থানে অংশ নেওযার হার ১৫ থেকে ২০ বছরের তরুণদের মধ্যে কমে গিয়েছে। ০.৯ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে, প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে এই হার আগের থেকে প্রায় ২ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।
সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মহিলারা
রিপোর্টে বলা হয়েছে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুবকদের মধ্যে বেকারত্ব ২০২২ সালে বেড়ে ১৪.৯ শতাংশে পৌঁছে যাবে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্বে গড় বেকারত্বের থেকে এই অঞ্চলের বেকারত্বের হার অনেকটাই বেশি। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, করোনা মহামারীর জেরে ভারতের বিশাল সংখ্যক মহিলারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটা অংশের মহিলারা করোনা মহামারীর সময় চাকরি থেকে বাধ্য হয়ে সরে এলেও ফরে তাঁরা কর্ম জগতে ফিরে যেতে পারেননি। ভারতে করোনা মহামারীর সময় কর্মজগৎ থেকে সরে এলেও পরে ফিরে যেতে পারেননি কর্মরত প্রায় ১৬ শতাংশ মহিলা।
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পড়ুয়ারা
প্রতিবেদনে ভারতের সম্পর্কে জানানো হয়েছে, করোনা মহামারীর জেরে শিক্ষাব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, করোনা মহামারীর সময় যে সব স্কুল ১৮ মাস বন্ধ ছিলে, তাদের গ্রামের মাত্র ১৮ শতাংশ পড়ুয়া ও শহরের মাত্র ২৩ শতাংশ পড়ুয়ারা অনলাইনের সুবিধা উপলব্ধ করতে পেরেছে। করোনা মহামারী সময় দেশের বিশাল সংখ্যক পড়ুয়ারা বঞ্চিত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ভারতে ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে ৯২ শতাংশ পড়ুয়ারা প্রভাবিত হয়েছেন। অন্যদিকে, দেশের ৮২ শতাংশ শিশুদের অঙ্কের ওপর প্রভাব পড়েছে। আগের থেকে তারা দুর্বল হয়ে পড়েছেন।