বিপদের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ভারত সহ এশিয়ার একাধিক দেশ, বিশ্ব উষ্ণায়ন কেড়েছে রাতের ঘুম
বিপদের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ভারত সহ এশিয়ার একাধিক দেশ, বিশ্ব উষ্ণায়ন কেড়েছে রাতের ঘুম
সারা বিশ্বের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং। এটি এমন একটি বিষয় যা এই শতকে আমাদের পৃথিবী কোনদিকে এগোবে তার দিক নির্দেশ করবে। আমরা যত বেশি প্রকৃতিকে ধ্বংস করব, ততই আমরা নিজেরা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাব। এবং তাতে অনুঘটকের কাজ করবে এই গ্লোবাল ওয়ার্মিং।
দ্রুত বদলে যাচ্ছে ভারতের আবহাওয়া
যেভাবে গত কয়েক দশকে আবহাওয়া এবং পরিবেশের পরিবর্তন হয়েছে, যেভাবে জলবায়ু পরিবর্তিত হয়েছে, তাতে সবচেয়ে বড় হাত রয়েছে এই বিশ্ব উষ্ণায়নের। বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে এর ভয়ঙ্কর প্রভাব ইতিমধ্যে টের পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি এটাও উল্লেখযোগ্য যে বিশ্বের প্রথম সারির উন্নত দেশগুলিও বিশ্ব উষ্ণায়নের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারেনি। এর প্রভাব সারা পৃথিবী জুড়ে পড়েছে।
বাদ নেই উন্নত দেশগুলিও
চিন এবং ভারতের মতো দেশে সাম্প্রতিক সময়ে বন্যার মতো যে সমস্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলি হয়েছে তা স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে পরিবেশ কীভাবে দ্রুত ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এবং এর সবচেয়ে বড় কারণ বিশ্ব উষ্ণায়ন। শুধু এশিয়ার দেশগুলি নয়, জার্মানি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসের মতো উন্নত দেশগুলিতে বন্যার ভয়ঙ্কর প্রভাব সামনে এসেছে।
ঘনঘন ঘটছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ
এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে পরপর ঘটতে থাকা বন্যা এবং মানুষের মৃত্যু, এবং একই সঙ্গে অর্থনৈতিক ক্ষতি, সামগ্রিকভাবে গোটা পৃথিবীকে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এবং যত দিন যাচ্ছে বন্যার মতো এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ অতি ঘনঘন ঘটছে। তাকে কোনওভাবেই আটকানো সম্ভব হচ্ছে না।
জনবহুল দেশে বিপদ বেশি
বিশ্বের প্রথম ১৫ টি জনবহুল দেশের মধ্যে দশটির বেশি দেশে প্রত্যেক বছর ব্যাপক বন্যা হচ্ছে। যার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে। ভারত, বাংলাদেশ, চিন, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মায়ানমার, আফগানিস্তান, থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মতো দেশ - যারা এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে অবস্থিত, তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে এই বন্যার কারণে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের একাধিক কারণ
কোনও দেশে যখন বন্যা হয় অথবা কোনও অঞ্চল যখন বন্যা কবলিত হয়, তার পিছনে একাধিক কারণ থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত। দ্বিতীয়ত, নদীর জল ধারণের ক্ষমতা কমে আসা, সংস্কার না হওয়া, জল সংরক্ষণ পরিকাঠমো তৈরি না থাকা ইত্যাদি। এবং দেখা গিয়েছে এশিয়ার এই সমস্ত দেশেই এই বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে।
একলপ্তে ব্যাপক বৃষ্টিপাত
এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে যে বন্যাগুলি হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই এক বছরে যা বৃষ্টিপাত হয় তা হয়েছে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে। যার ফলে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এবং এর পিছনেও হাত রয়েছে সেই বিশ্ব উষ্ণায়নের।
চিনেও মারাত্মক প্রভাব
চরম আবহাওয়া, অতিবৃষ্টি, বন্যা, খরা, ঠান্ডা, তুষারপাত, ঝড়, দাবানল ইত্যাদির পিছনে সব চেয়ে বড় কারণ বিশ্ব উষ্ণায়নই। আর সেই কারণেই চিনের হেনান প্রদেশের এবছর মারাত্মক বন্যা হয়েছে যা এক হাজার বছরে হয়নি।
বিশ্ব উষ্ণায়ন থেকে বাঁচাতে হবে পৃথিবীকে
ভারতের মহারাষ্ট্রে জুলাই মাসে যে বন্যা হয়েছে তাতে খুব কম সময়ের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে একাধিক জেলা বন্যায় ভেসে গিয়েছে। এই সবকিছুর পিছনেই কারণ সেই বিশ্ব উষ্ণায়ন। আবহাওয়ার যেভাবে পরিবর্তন হচ্ছে তা ভারতের বর্ষাকালকে আরও বেশি ভয়ঙ্কর করে তুলেছে। এখান থেকে বেরোনোর রাস্তা বের করতে না পারলে শুধু ভারত নয়, সারা পৃথিবীকেই মাশুল গুনতে হবে।