কোন পথে হেঁটে রেল বাজেট ২০১৮ পেশ করবে মোদী সরকার, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
সুরক্ষা, গতি ও স্বাচ্ছন্দ্য। ২০১৮-১৯ রেল বাজেটে এই তিনটি জিনিসই সবচেয়ে বেশি করে চাইবেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে গত কয়েকবছরে যেভাবে একেরপর রেল দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণ গিয়েছে তাতে এই সমস্যার আশু সমাধান করতে না পারলে রেল নিয়ে কেন্দ্রের দুর্ভোগ আগামিদিনে বাড়বে বই কমবে না।

একসঙ্গে রেল বাজেট
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের দিনই একসঙ্গে রেল বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। ২০১৭ সালে ৯২ বছরের প্রথা ভেঙে একসঙ্গে রেল ও কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করা হয়েছিল।

রেলের দায়িত্ব কেন্দ্রের
রেল পুরোপুরিভাবে কেন্দ্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। বেসরকারি বিনিয়োগ এখানে সেভাবে হয় না। যার ফলে এর প্রতি কেন্দ্রের দায় একশো শতাংশ। সুরক্ষা ও স্বাচ্ছন্দ্য যাতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছয় তার জন্য কেন্দ্রকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

বুলেট ট্রেন নিয়ে প্রস্তাব
এর পাশাপাশি এই বাজেটে নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের বুলেট ট্রেন নিয়ে কোনও পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয় কিনা তাও দেখার বিষয়। বুলেট ট্রেন না হোক, বাজেটে বর্তমান ট্রেনগুলির স্পিড বাড়ানো নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন তা নিয়ে আশাবাদী অনেকেই।

সুরক্ষা কম
ভারতের রেল নেটওয়ার্ক পৃথিবীতে চতুর্থ বৃহত্তম। কোটি কোটি মানুষ প্রতিদিন এতে সফর করেন। তবে সুরক্ষার দিক থেকে একেবারেই এগিয়ে নেই ভারতীয় রেল। গত তিনবছরে রেল দুর্ঘটনায় সারা দেশে ৬৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কলিঙ্গ উৎকল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা
এর মধ্যে মুজফফরনগরে কলিঙ্গ উৎকল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় ২৩ জনের প্রাণ যায়। গত অগাস্টের এই দুর্ঘটনায় আহত হন ১৫৬জন। এবছর মৃত্যুর নিরিখে এটাই ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা।

এলফিনস্টোন রোড দুর্ঘটনা
এরপরে রয়েছে মুম্বইয়ের এলফিনস্টোন রোড স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে ২২ জনের মৃত্যুর ঘটনা। একটি পুরনো ফুট ব্রিজ ভেঙে পড়ছে ভেবে দৌড়তে গিয়ে এতজন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান। পরে সেই ব্রিজের জায়গায় নতুন ব্রিজ তৈরি হয়েছে।

রক্ষণাবেক্ষণে জোর
রেল ট্র্যাকের মেরামতি না হওয়ায় বহু দুর্ঘটনা প্রতিবছর ঘটে। গতবছরে সেই খাতে ১৫ হাজার কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়। সুরক্ষা রক্ষণাবেক্ষণে ২ লক্ষ কর্মী নিয়োগের কথাও বলা হয়। বাজেটে ৪ হাজার কিলোমিটার রাস্তা নতুন করে তৈরির কথা ভাবা হয়েছে বলে খবর।

যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য
রেল সূত্রে খবর, এবারের বাজেটে ৩-৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে এসকেলেটর ও লিফট বসানোর জন্য। যাতে সাধারণ মানুষের যাতায়াত আরও স্বচ্ছ্বন্দ্যে হয়।

ইসরোর সঙ্গে গাঁটছড়া
এর পাশাপাশি রেল ট্র্যাক নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছে রেল। তাহলে রেল লাইন ট্র্যাক করা ও সংযোগ স্থাপন আরও ভালো করা যাবে। একইসঙ্গে দুর্ঘটনা এড়াতে আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

গতি বাড়ানোর চেষ্টা
আগামী বছরে রেল ১৩ হাজার ওয়াগন, ৬০০টি লোকোমোটিভ, ৫ হাজার প্যাসেঞ্জার কোচ সংযুক্ত করবে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিল্লি-চেন্নাই, দিল্লি-হাওড়া, চেন্নাই-মুম্বই, হাওড়া-মুম্বই রুটে রেলের গতি যাতে আরও বাড়ানো যায় সেই চেষ্টা করা হবে।