
সুদীপ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে নয় কংগ্রেসে, সঙ্গে কি সাংসদও! ছবি ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে
সুদীপ রায় বর্মন বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। তাঁর সঙ্গে বিজেপি বিধায়ক আশিস সাহাও যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। কিন্তু আর কে? এখনও কে কে আছে লাইনে? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে সামনে এসেছে একটি ছবি, সেই ছবি ঘিরেই জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। তবে কি সুদীপের সঙ্গে সাংসদও কংগ্রেসের পথে!

গাবিজেপিতে মোহভঙ্গ হতে চলেছে ত্রিপুরার!
ছবিই যদি কথা বলে তবে আরও বিধায়ক এমনকী সাংসদও রয়েছেন বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসের পথে পা বাড়িয়ে। আবার কি তবে কংগ্রেসের সুদিন আসতে চলেছে ত্রিপুরায়। ২৫ বছর বামফ্রন্টকে দেখেছে ত্রিপুরার মানুষ। তারপর প্রায় চার বছর বিজেপিকে দেখল। এরমধ্যেই কি তবে বিজেপিতে মোহভঙ্গ হতে চলেছে ত্রিপুরার!

হঠাৎ খেলা ঘুরতে শুরু করেছে ত্রিপুরায়
তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরার পা রাখার পর থেকেই জল্পনা চলছিল, সুদীর রায় বর্মন-সহ বিজেপির একটা বড় অংশ তৃণমূলে যোগ দিতে পারে। সেইমতো সুদীপ রায় বর্মন মাঝে একবার কলকাতায় এসে দেখা করে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে। সুদীপ-ঘনিষ্ঠ বিধায়করাও তৃণমূলমুখী হয়েছিলেন। তার মধ্যে এক বিধায়ক আশিস দাস যোগ দিয়েছেন তৃণমূলেও। কিন্তু তারপর হঠাৎ খেলা ঘুরতে শুরু করে দেয় ত্রিপুরায়।

বিজেপির গায়ে আঁচড়ও কাটতে পারেনি তৃণমূল
সম্প্রতি ত্রিপুরা পুরভোটে দেখা যায় তৃণমূল দ্বিতীয় দল হিসেবে উঠে এসেছে। ভোটপ্রাপ্তির বিচারে তৃণমূল দ্বিতীয় হয়েছে ত্রিপুরায়। কিন্তু কোনও আসনে জিততে পারেনি। তৃণমূল ত্রিপুরায় পা দিয়ে কংগ্রেসকেই ভেঙেছে এবং কংগ্রেসকে ভেঙেই তারা ভিত তৈরি করেছে। কিন্তু বিজেপির গায়ে সেভাবে আঁচড়ও কাটতে পারেনি।

সব হিসাব উল্টে দিয়ে কংগ্রেসে যোগ সুদীপের
এরই মধ্যে সুদীপ রায় বর্মন সোমবার হঠাৎই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। বিজেপিতে বিক্ষুব্ধ ছিলেন দীর্ঘদিন। তারপর তাঁকে নিয়ে জল্পনার শেষ ছিল না। ত্রিপুরার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা কোন দলে যোগ দেবেন, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়। তিনি তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা চললেও, তিনি সব হিসাব উল্টে দিয়ে মঙ্গলবার যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। এর ফলে ত্রিপুরার সমীকরণে ফের বদল এসেছে।

আরও তিন বিধায়ক গিয়েছেন দিল্লিতে, জল্পনা
এখন প্রশ্ন কে কে রয়েছেন সুদীপ রায় বর্মনের সঙ্গে। তা বোঝাতে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি খুব ঘুরছে। তার আগে সুদীপ রায় বর্মন ইস্তফা দিয়ে আগরতলা থেকে উড়ে গিয়েছেন দিল্লির উদ্দেশ্যে। সেখানে শুধু তিনি বিধায়ক আশিস সাহাকে নিয়ে যাননি, তাঁর সঙ্গে আরও তিন বিধায়ক গিয়েছেন দিল্লিতে।

ছবি ছড়িয়ে বিজেপিকে একটা বিশেষ বার্তা
সুদীপ রায় বর্মন ও আশিস সাহার সঙ্গে দিল্লি উড়ে গিয়েছেন আরও তিন বিধায়ক অতুল দেববর্মা, দিবাচন্দ্র রাংখেল ও বুর্বুমোহন ত্রিপুরা। কিন্তু যে ছবি সামনে এসেছে, তা বলছে এই দলে আরও একজন রয়েছেন। আর সুদীপ রায় বর্মনের অনুগামীরা সেই ছবি ছড়িয়ে বিজেপিকে একটা বিশেষ বার্তা দিতেও চেয়েছেন।

তিন বিধায়ক ও এক সাংসদও কি কংগ্রেসে!
দেখা যাচ্ছে ওই ছবিতে সুদীর রায় বর্মন-সহ পাঁচ বিধায়কের পাশাপাশি ষষ্ঠ যে জন রয়েছেন, তিনি হলেন ত্রিপুরার সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা। সুদীপ রায় বর্মন ও আশিস সাহা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন ইতিমধ্যে। তবে কি তাঁর সঙ্গী আরও তিন বিধায়ক ও এক সাংসদও অচিরেই যোগ দেবেন কংগ্রেসে? সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

সাংসদের ছবি নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে
তবে সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা সেই জল্পনা একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, সংসদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য আগরতলা বিমানবন্দরেরতবে সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা সেই জল্পনা একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, সংসদের অধিবেশনে যোগ দে ভিআইপি লাউঞ্জে গিয়ে দেখি ওঁরা বসে আছেন। সৌজন্যের খাতিরেই তাঁদের সঙ্গে বসি, চা খাই। সেই সময়কার ছবিই ওটা। সংসদে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্যের পর আমি বেরিয়ে শুনি ওই ছবি নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে।

কংগ্রেসে যোগদান বিজেপির পক্ষে সুখকর নয়
তিনি বলেন, আমার দল ছাড়ার জল্পনা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। নিছকই সৌজন্যের খাতিরে আমি ওঁদের সঙ্গে আমি সাক্ষাৎ করেছিলাম। আমি বিজেপিতেই আছি। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি, একজন কার্যকর্তাও যদি দল ছাড়েন, সেটা দলের পক্ষ ক্ষতি। সুদীপ রায় বর্মন-সহ দুই বিধায়কের ইস্তফা এবং কংগ্রেসে যোগদান বিজেপির পক্ষে সুখকর নয়।

সুদীপের হাত ধরে ত্রিপুরায় কংগ্রেসের সুদিন ফিরবে
সুদীপ রায় বর্মন ও আশিস সাহা বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করলেও, বাকিরা কী করবেন, তা নিয়ে এখনও ধন্দ রয়েছে। তাঁরা যেন এদিন কংগ্রেসে যোগদান করেননি, আবার তাঁরা বিধায়ক পদে ইস্তফাও দেননি। এমন হতে পারে তাঁরা বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ার পর কংগ্রেসে যোগদান করলেন। তবে সুদীপ রায় বর্মনের সঙ্গে যে অনেক বিধায়ক ও নেতা-নেত্রী রয়েছে, রয়েছেন কর্মী-সমর্থক, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফের সুদীপের হাত ধরে ত্রিপুরায় কংগ্রেসের সুদিন ফিরতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।