নাগপঞ্চমীতে কালসর্প দোষ ছাড়াও গ্রহের দোষ কাটানোর সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে! একনজরে জ্যোতিষ মতে কিছু পন্থা
নাগপঞ্চমীতে কালসর্প দোষ ছাড়াও গ্রহের দোষ কাটানোর সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে! একনজরে জ্যোতিষ মতে কিছু পন্থা
শ্রাবণ মাসে শিবের পুজোপাঠ ঘিরে হিন্দু শাস্ত্র মতে একাধিক বিধি পালিত হয়। শিবকে তুষ্ট করতে বহু রীতি মেনে চলে পুজো। শ্রাবণের শিবরাত্রিতে দুধ, ঘি, মধু সহকারে শিবকে স্নান করিয়ে চলে তাঁর পুজোপাঠ। তবে শুধু শিবই নন, তার সঙ্গে তাঁর বাহন সাপকেও পুজো করা হয় এই মাসে। নাগদেবতার আশীর্বাদে বহু দুরূহ সময় যেমন কেটে যায়, তেমনই বহু বাধাও কেটে যায়। তবে এই নাগ দেবতাকে তুষ্ট করার কিছু রীতি পালিত হয়। একনজরে দেখা যাক, কালসর্প দোষ থেকে গ্রহের দোষ কাটানোর উপায়।
নাগপঞ্চমী কখন পড়ছে?
২০২১ সালের নাগপঞ্চমী ১৩ অগাস্ট শুক্রবার পড়েছে। এমন দিনে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নাগ দেবতার পুজো পাঠ করা হয়। এদিকে পঞ্চমী তিথি ১২ অগাস্ট দুপুর ৩: ২৪ মিনিটে পড়ছে। এই পঞ্চমী তিথি চলবে ১৩ অগাস্ট দুপুর ১ টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত। মূলত ১৩ অগাস্টই পালিত হবে নাগ পঞ্চমী। এই বিশেষ তিথিতে একাধিক বিশেষ উৎসব পালিত হয়। তবে নাগ দেবতাকে সন্তুষ্ট ক রাই এই তিথির মূল লক্ষ্য।
নাগপঞ্চমীতে কাটানো যায় গ্রহ দোষও?
কথিত রয়েছে , নাগ পঞ্চমীর দিন ১২ নাগ দেবতার বিশেষ পুজোপাছ আয়োজিত হয়। এই ১২ নাগ দেবতার মধ্যে ৯ টি গ্রহকে নিয়ন্ত্রণ করেন ৯ জন নাগ দেবতা। বলা হয়, কোনও গ্রহ দোষ কারোর থাকলে, তা কেটে যেতে পারে যদি নাগ ও তার সঙ্গে জড়িত গ্রহগুলিকে পুজো করা যায় তাহলে। তবে কোন নগ দেবতা কোন গ্রহকে নিয়ন্ত্রণ করেন তা আগে থেকে জেনে রাখলেও সঠিক পুজো বিধি পালন কের এই নাগ পঞ্চমীতে কালসর্প দোষ কাটিয়ে তোলা যায়।
১২ নাগ দেবতার নাম
মূলত এবারের নাগ পঞ্চমীতে একটি বিশেষ যোগ ১০৮ বছর পর পড়ছে। সেই হিসাবে এবারের নাগপঞ্চমীর দিন বহু সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে বলে অমেকেই আশাবাদী। এমন দিনে নাগদেবতার পুজোয় কেটে যেতে পারে কালসর্প দোষ থেকে গ্রহের দোষ। এদিকে যে ১২ জন নাগ দেবতাকে পুজো করা হয় ,তাঁরা হলেন অনন্ত, বাসুকী, শেষ, পদ্মনাগ, কংবল,কর্কটক, অশ্বরত,শঙ্খপাল,ধৃতরাষ্ট্র, কালিয়া, পিঙ্গলা, তক্ষক। বলা হয়, প্রতি মাসে যদি এই ১২ জন নাগ দেবতার পুজো করা হয়, তাহলে বহু বাধা , সমস্যা কেটে যায়।
কোন গ্রহ কোন নাগ দেবতা নিয়ন্ত্রণ করেন?
বলা হয় ১২ নাগ দেবতার মধ্যে ৯ জন দেবতা ৯ টি গ্রহকে জ্যোতিষমতে নিয়ন্ত্রণ করেন। জ্যোতিষ শাস্ত্রের দাবি , প্রতিটি মানুষের কোষ্ঠীর সঙ্গে প্রতিটি নাগ দেবতা জড়িত। যে ব্যক্তির যে গ্রহ নিচস্থ সেই ব্যক্তিকে সেই গ্রহকে তুষ্ট করতে পুজো করার পরামর্শ দিচ্ছেন বহু জ্যোতিষবিদ। রবির উত্থানের জন্য অনন্ত নাগের পুজো, চন্দ্রের উত্থানের জন্য বাসুকি নাগের পুজো, ভৌমের জন্য তক্ষক, বুধের জন্য কর্কটেক। এদিকে, বৃহস্পতি নিয়ন্ত্রণ করেন পদ্মনাগ। তাঁকে পুজো করলেই উচ্চস্থ হতে পারে বৃহস্পতি। মহাপদ্ম সর্পের পুজো করলে শুক্র নিয়ন্ত্রণ হতে পারে, শনি নিচস্থ হলে শঙ্খপাল সাপের পুজো হতে পারে।
নাগ পঞ্চমীর পুজো বিধি
মূলত নাগ পঞ্চমীর কিছু বিশেষ পুজো বিধি রয়েছে। ঘরের দরজায় মাটি দিয়ে তা নিকোনোর পরম্পরা প্রচলিত রয়েছে নাগ পঞ্চমীর দিন। এরপর নাগ দেবতার উদ্দেশে দুর্বা, কুশ, ফুল, জল, ও দুধ দিয়ে পুজো করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। নাগ দেবতাতে সন্তুষ্ট করতে গোবর দিয়েও পুজো করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। প্রসঙ্গত, নাগ পঞ্চমীর দিন বিভিন্ন নাগ দেবতার মন্দিরে তথা শিবমন্দিরে পুজো পাঠ চলে। সেখানেও বিভিন্ন রীতি মেনে হয় এমন পুজো।
কাল সর্প দোষ কী?
মূলচ, একনজরে কোষ্ঠীতে যদি কালসর্প দোষ থাকে তাহলে তিনি বিভিন্ন দিক থেকে কাজের ক্ষেত্রে বাধাপ্রাপ্ত হবেন। মূলত , রাহু ও কেতুর নেতিবাচক প্রভাবে এই সমস্যা দেখা যায়। কোষ্ঠীতে রাজ যোগের ওপর নির্ভর করে কাল সর্প দোষ। ত্রম্বকেশ্বর ও কালাহস্তি মন্দিরে এই কাল সর্প দোষ কাটানোর একটি বিশেষ পুজো আয়োজিত হয়। এছাড়াও পাঁচ মাথা বিশিষ্ট সর্প রাজের রুপোর মূর্তিকে পুজো করলেও কাল সর্প দোষ কাটার উপায় রয়েছে। তবে বিশ্বস্ত জ্যোতিষির পরামর্শেই তা করা উচিত বলে মত অনেকের। বহু জ্যোতিষি বলেন, বৈদুর্য বা 'ক্যাটস আই' রত্ন পরলেও এই কাল সর্পদোষেক সমস্যা কেটে যায়। তবে নাগ পঞ্চমীর দিন কাল সর্প দোষ কাটানোর বিশেষ পুজো সম্পন্ন হয়। সেই অনুযায়ী বেশ কিছু রীতি পালন করা উচিত।